ঢাকা ১০:২৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
মন্ত্রীত্ব ফির পেতে পারেন টিউলিপ!   পলাশবাড়ী উপজেলা বিএনপি’র সাংগঠনিক সভা অনুষ্ঠিত হয় নিত্যপণ্যের বাড়তি ভ্যাট প্রত্যাহারের দাবিতে গাইবান্ধায় বিক্ষোভ সমাবেশ গাইবান্ধা প্রিপেইড মিটারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত ফুটপাত দখলমুক্ত করতে যশোরে এসপির অভিযান টাঙ্গাইলের চরাঞ্চলে মেধাবী ছাত্র ছাত্রীদের সম্মাননা ও ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প  টাঙ্গাইলে প্রাথমিক বিদ্যালয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট শুরু হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার রেজাউল হক খানকে বিদায় সংবর্ধনা সংসদের মেয়াদ চার বছর, দু’বারের বেশি প্রধানমন্ত্রী নয় চাঁপাইনবাবগঞ্জে ছাত্রদল নেতাকে কুপিয়ে হত্যা চেষ্টা

তাবলীগ জামাতের চলমান সঙ্কট নিরসনের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন

মোঃ মশিউর রহমান,টাঙ্গাইল 
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৭:২৮:৩৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫ ৬৬ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

টাঙ্গাইলে তাবলীগ জামায়াতের বৈষম্য নিরসন ও চলমান সংকটের স্থায়ী সমাধানের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) সকালে টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের অডিটোরিয়ামে টাঙ্গাইল সচেতন ছাত্র সমাজের আয়োজনে এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন টাঙ্গাইল সচেতন ছাত্র সমাজের প্রধান সমন্বয়ক জিহাদ মিয়া।

তিনি বলেন, তাবলীগ জামাত মুসলিম উম্মহর ঐক্যের প্রতীক এবং সারা বিশ্বে ইসলামের দাওয়াহ কার্যক্রমের অন্যতম মাধ্যম। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তাবলীগ জামাতের অভ্যন্তরীণ বিভেদ সংঘর্ষে রূপ নিয়েছে যার ফলশ্রুতিতে প্রাণহানির মতো দুঃখজনক ঘটনা ঘটেছে। যা দেশের সার্বিক স্থিতিশীলতা ও শান্তি শৃঙ্গলার জন্য হুমকি স্বরূপ। এই পরিস্থিতি শুধু তাবলীগ জামাতেরই ক্ষতি করছে না, বরং বৃহত্তর মুসলিম সমাজের ঐক্য ও সৌহার্দ্যকেও প্রশ্নবিদ্ধ করছে।আমরা নিবিড় ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি যে তাবলীগ জামাতের বিবদমান পক্ষদ্বয়ের মধ্যে এক পক্ষ চরম বৈষম্যের শিকার হচ্ছে।

দেশবাসীকে সেই বৈষম্যের চিত্র তুলে ধরে বলেন, মাওলানা সাদ সাহেবের অনুসারীদের সর্বোচ্চ মুরুব্বী বিশ্ব আমির মাওলানা সাদ সাহেব বারবার বাধার সম্মুখীন হয়েছেন এবং এখনো আসতে পারছেন না। কাকরাইল মসজিদ এক পক্ষ ১৪ দিন এবং অপর পক্ষ ২৮ দিন ব্যবহার করতেন যা স্পষ্টত বৈষম্য। টঙ্গীর ময়দান, যা বিশ্ব ইজতেমার কেন্দ্রস্থল, বছরের অধিকাংশ সময় শুরাই নেজামের নিয়ন্ত্রণে থাকে। বিগত বছর গুলোতে শুরাই নেজাম প্রথম পর্বের ইজতেমা আয়োজন করে আসছেন। বিশ্ব মারকাজ নিজামুদ্দিনের অনুসারীদের আনিচ্ছা সত্ত্বেও বারবার দ্বিতীয় পর্বে ইজতেমা করতে হচ্ছে। বিশ্ব মারকাজ নিজামুদ্দিনের অনুসারী তাবলীগের কর্মীরা বিভিন্ন মসাজদে আমল করতে গেলে প্রায়ই বাধার সম্মুখীন হয়। মসজিদগুলোতে তাদের অবস্থান, দাওয়াহ কার্যক্রম এবং আমল পরিচালনায় শুরাই নেজামের পক্ষ থেকে বাধা প্রদান করা হয়। এ ধরনের আচরণ তাবলীগের মূল দর্শনের পরিপন্থী এবং দাওয়াহ কার্যক্রমে সংকট তৈরি করছে।

তিনি আরও বলেন, শুরাই নেজাম টঙ্গীর ময়দানে পাঁচ দিনের জোড় সফলভাবে আয়োজন করেছেন। কিন্তু বিশ্ব মারকাজ নিজামুদ্দিনের অনুসারী তাবলীগের কর্মীরা এই সুযোগ থেকে সম্পূর্ণ বঞ্চিত হয়েছেন। অতএব এই বৈষম্য নিরসনে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে।

সাম্প্রতিক সময়ে সরকার গুরুত্বপূর্ণ কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করেছে, আমরা এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই। কিন্তু সম্পূর্ণ বৈষম্য নিরসনে এই উদ্যোগ যথেষ্ট নয়। আমরা চাই এই বৈষম্য বিরোধী সরকার তাবলীগ জামাতের বিবদমান উভয় পক্ষের মধ্যে ইনসাফ ও ন্যায় ভিত্তিক স্থায়ী সমাধানে উদ্যোগী হবে। তাই আমরা “সচেতন ছাত্র সমাজ” এর পক্ষ থেকে ইনসাফ ও ন্যায়ভিত্তিক স্থায়ী সমাধানের লক্ষ্যে নিম্নলিখিত (০৩) তিনটি প্রস্তাবনা পেশ করছি : প্রস্তাবনা-১: উভয় পক্ষই যেন তাদের সর্বোচ্চ মুরুব্বীদের নিয়ে যার যার কার্যক্রম (অর্থাৎ জোড়, ইজতেমা ও অন্যান্য আমল) পরিচালনা করতে পারে তা নিশ্চিত করা। প্রস্তাবনা-২: উভয় পক্ষের জন্যই কাকরাইল মসজিদ, টঙ্গীর ইজতেমা ময়দান এবং দেশের প্রতিটি মসজিদে তাবলীগের আমলে সমতা নিশ্চিত করা।

প্রস্তাবনা-৩; দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখার স্বার্থে উভয় পক্ষকে একে অপরের বিরুদ্ধে কোন ধরনের উস্কানীমূলক বক্তব্য এবং কার্যক্রম থেকে বিরত রাখা এবং ২০১৮ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ঘটে যাওয়া সমস্ত অনাকাক্সিক্ষত হত্যাকান্ডের বিচার বিভাগীয় নিরপেক্ষ তদন্ত করে দৃষ্টান্তমূলক শান্তির ব্যবস্থা করা।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন টাঙ্গাইল সচেতন ছাত্র সমাজের সহ সমন্বয়ক মো. অনিছুর রহমান, হাফিজুর রহমান, সদস্য তলহা বিন মুনিরসহ মাওলানা ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয়, সরকারি সা’দত কলেজ,বিটেক,টাঙ্গাইল পলিটেকনিক ও টাঙ্গাইল জেলার অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সচেতন শিক্ষর্থীবৃন্দ।এসময় টাঙ্গাইল জেলায় কর্মরত প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

তাবলীগ জামাতের চলমান সঙ্কট নিরসনের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন

সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৭:২৮:৩৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫

টাঙ্গাইলে তাবলীগ জামায়াতের বৈষম্য নিরসন ও চলমান সংকটের স্থায়ী সমাধানের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) সকালে টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের অডিটোরিয়ামে টাঙ্গাইল সচেতন ছাত্র সমাজের আয়োজনে এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন টাঙ্গাইল সচেতন ছাত্র সমাজের প্রধান সমন্বয়ক জিহাদ মিয়া।

তিনি বলেন, তাবলীগ জামাত মুসলিম উম্মহর ঐক্যের প্রতীক এবং সারা বিশ্বে ইসলামের দাওয়াহ কার্যক্রমের অন্যতম মাধ্যম। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তাবলীগ জামাতের অভ্যন্তরীণ বিভেদ সংঘর্ষে রূপ নিয়েছে যার ফলশ্রুতিতে প্রাণহানির মতো দুঃখজনক ঘটনা ঘটেছে। যা দেশের সার্বিক স্থিতিশীলতা ও শান্তি শৃঙ্গলার জন্য হুমকি স্বরূপ। এই পরিস্থিতি শুধু তাবলীগ জামাতেরই ক্ষতি করছে না, বরং বৃহত্তর মুসলিম সমাজের ঐক্য ও সৌহার্দ্যকেও প্রশ্নবিদ্ধ করছে।আমরা নিবিড় ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি যে তাবলীগ জামাতের বিবদমান পক্ষদ্বয়ের মধ্যে এক পক্ষ চরম বৈষম্যের শিকার হচ্ছে।

দেশবাসীকে সেই বৈষম্যের চিত্র তুলে ধরে বলেন, মাওলানা সাদ সাহেবের অনুসারীদের সর্বোচ্চ মুরুব্বী বিশ্ব আমির মাওলানা সাদ সাহেব বারবার বাধার সম্মুখীন হয়েছেন এবং এখনো আসতে পারছেন না। কাকরাইল মসজিদ এক পক্ষ ১৪ দিন এবং অপর পক্ষ ২৮ দিন ব্যবহার করতেন যা স্পষ্টত বৈষম্য। টঙ্গীর ময়দান, যা বিশ্ব ইজতেমার কেন্দ্রস্থল, বছরের অধিকাংশ সময় শুরাই নেজামের নিয়ন্ত্রণে থাকে। বিগত বছর গুলোতে শুরাই নেজাম প্রথম পর্বের ইজতেমা আয়োজন করে আসছেন। বিশ্ব মারকাজ নিজামুদ্দিনের অনুসারীদের আনিচ্ছা সত্ত্বেও বারবার দ্বিতীয় পর্বে ইজতেমা করতে হচ্ছে। বিশ্ব মারকাজ নিজামুদ্দিনের অনুসারী তাবলীগের কর্মীরা বিভিন্ন মসাজদে আমল করতে গেলে প্রায়ই বাধার সম্মুখীন হয়। মসজিদগুলোতে তাদের অবস্থান, দাওয়াহ কার্যক্রম এবং আমল পরিচালনায় শুরাই নেজামের পক্ষ থেকে বাধা প্রদান করা হয়। এ ধরনের আচরণ তাবলীগের মূল দর্শনের পরিপন্থী এবং দাওয়াহ কার্যক্রমে সংকট তৈরি করছে।

তিনি আরও বলেন, শুরাই নেজাম টঙ্গীর ময়দানে পাঁচ দিনের জোড় সফলভাবে আয়োজন করেছেন। কিন্তু বিশ্ব মারকাজ নিজামুদ্দিনের অনুসারী তাবলীগের কর্মীরা এই সুযোগ থেকে সম্পূর্ণ বঞ্চিত হয়েছেন। অতএব এই বৈষম্য নিরসনে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে।

সাম্প্রতিক সময়ে সরকার গুরুত্বপূর্ণ কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করেছে, আমরা এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই। কিন্তু সম্পূর্ণ বৈষম্য নিরসনে এই উদ্যোগ যথেষ্ট নয়। আমরা চাই এই বৈষম্য বিরোধী সরকার তাবলীগ জামাতের বিবদমান উভয় পক্ষের মধ্যে ইনসাফ ও ন্যায় ভিত্তিক স্থায়ী সমাধানে উদ্যোগী হবে। তাই আমরা “সচেতন ছাত্র সমাজ” এর পক্ষ থেকে ইনসাফ ও ন্যায়ভিত্তিক স্থায়ী সমাধানের লক্ষ্যে নিম্নলিখিত (০৩) তিনটি প্রস্তাবনা পেশ করছি : প্রস্তাবনা-১: উভয় পক্ষই যেন তাদের সর্বোচ্চ মুরুব্বীদের নিয়ে যার যার কার্যক্রম (অর্থাৎ জোড়, ইজতেমা ও অন্যান্য আমল) পরিচালনা করতে পারে তা নিশ্চিত করা। প্রস্তাবনা-২: উভয় পক্ষের জন্যই কাকরাইল মসজিদ, টঙ্গীর ইজতেমা ময়দান এবং দেশের প্রতিটি মসজিদে তাবলীগের আমলে সমতা নিশ্চিত করা।

প্রস্তাবনা-৩; দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখার স্বার্থে উভয় পক্ষকে একে অপরের বিরুদ্ধে কোন ধরনের উস্কানীমূলক বক্তব্য এবং কার্যক্রম থেকে বিরত রাখা এবং ২০১৮ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ঘটে যাওয়া সমস্ত অনাকাক্সিক্ষত হত্যাকান্ডের বিচার বিভাগীয় নিরপেক্ষ তদন্ত করে দৃষ্টান্তমূলক শান্তির ব্যবস্থা করা।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন টাঙ্গাইল সচেতন ছাত্র সমাজের সহ সমন্বয়ক মো. অনিছুর রহমান, হাফিজুর রহমান, সদস্য তলহা বিন মুনিরসহ মাওলানা ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয়, সরকারি সা’দত কলেজ,বিটেক,টাঙ্গাইল পলিটেকনিক ও টাঙ্গাইল জেলার অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সচেতন শিক্ষর্থীবৃন্দ।এসময় টাঙ্গাইল জেলায় কর্মরত প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।