চাপ বাড়ছে টিউলিপের ওপর, বরখাস্তের দাবি বিরোধীদলীয় নেতার
- সংবাদ প্রকাশের সময় : ১১:২৭:১৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১২ জানুয়ারী ২০২৫ ৪০ বার পড়া হয়েছে
যুক্তরাজ্যের কনজারভেটিভ পার্টির প্রধান কেমি ব্যাডেনোচ দেশটির সিটি মিনিস্টার টিউলিপ সিদ্দিককে বরখাস্ত করতে প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের প্রতি আহবান জানিয়েছেন। রোববার (১২ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
বাংলাদেশে আর্থিক দুর্নীতির মামলার তদন্তে যুক্তরাজ্যের এই মন্ত্রী ব্যাপক চাপে রয়েছেন। এমনকি দুর্নীতির দায়ে মন্ত্রিত্ব ছাড়তেও ক্রমবর্ধমান চাপ রয়েছে টিউলিপের ওপর।
টিউলিপ সিদ্দিক মূলত ব্রিটেনের ক্ষমতাসীন লেবার মন্ত্রিসভার সদস্য। তিনি ইকনোমিক সেক্রেটারি টু দি ট্রেজারি অ্যান্ড সিটি মিনিস্টার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তার কাজ যুক্তরাজ্যের অর্থবাজারের ভেতরের দুর্নীতি সামাল দেয়া। কিন্তু তার জন্মভূমি বাংলাদেশেই এখন তার বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে, যেখানে তিনি এবং পরিবারের চার সদস্যের বিরুদ্ধে একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে প্রায় ৪০০ কোটি মার্কিন ডলার আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের কাছে ট্রেজারি মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিককে বরখাস্ত করার আহবান জানিয়েছেন সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা কেমি ব্যাডেনোচ। সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে দেওয়া পোস্টে কনজারভেটিভ পার্টির এই নেতা বলেছেন, কিয়ার স্টারমার, টিউলিপ সিদ্দিককে বরখাস্ত করার সময় এসেছে।
তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী স্টারমার তার ব্যক্তিগত বন্ধুকে দুর্নীতিবিরোধী মন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ করেছেন এবং তিনি নিজেকেই দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত করেন।
ব্যাডেনোচ বলেন, সরকার যে আর্থিক সমস্যাগুলো তৈরি করেছে তা মোকাবিলায় মনোনিবেশ করা উচিত হলেও টিউলিপ সিদ্দিক সেই কাজে মনোনিবেশের জন্য সমস্যা হয়ে উঠেছেন। তিনি আরও বলেন, এখন বাংলাদেশ সরকারও দেশটির ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের সঙ্গে তার (টিউলিপের) যোগসূত্র নিয়েও গুরুতর উদ্বেগ প্রকাশ করছে।
বিবিসি বলছে, টিউলিপের দুর্নীতি নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মন্তব্যের পরই কনজারভেটিভ পার্টির নেতা কেমি ব্যাডেনোচ এই মন্তব্য করেন।
ড. ইউনূস সানডে টাইমসকে বলেছিলেন, টিউলিপ সিদ্দিককে তার খালা শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠদের দেয়া লন্ডনের সম্পত্তিতে বসবাস করার বিষয়ে ক্ষমা চাওয়া উচিত। এছাড়া সম্প্রতি টোরি এমপিরাও টিউলিপের পদত্যাগ দাবি করেছেন।
ব্রিটেনের বিরোধী দল কনজারভেটিভ পার্টির এমপিরা টিউলিপের উদ্দেশে বলেন, ফ্ল্যাট উপহার পাওয়ার বিষয়ে গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যা দিতে না পারলে তিনি যেন ট্রেজারি মন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন। টোরি এমপি বব ব্ল্যাকম্যান বলেছেন, টিউলিপ সিদ্দিককে তার সম্পত্তির লেনদেনের বিষয়ে অবস্থান স্পষ্ট করতে হবে এবং ব্যাখ্যা করতে হবে আসলে কী ঘটেছে এবং কেন। যদি তিনি তা না করেন তবে মন্ত্রী হিসেবে তিনি তার কাজ চালিয়ে যেতে পারেন না।
টিউলিপ সিদ্দিক অবশ্য কোনও ধরনের দুর্নীতিতে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছেন সেইসাথে দেশটির প্রধানমন্ত্রীর মিনিস্ট্রিয়াল স্ট্যান্ডার্ডসের ইন্ডিপেনডেন্ট অ্যাডভাইজার লাউরি ম্যাগনাসের কাছে নিজের বিরুদ্ধে তদন্তের আহবান জানিয়েছেন। স্যার লরি ম্যাগনাসের কাছে লেখা একটি চিঠিতে তিনি দাবি করেন, আমি কোনো ভুল করিনি।
গুঞ্জন রয়েছে, এমন অবস্থায় সিটি মিনিস্টার টিউলিপ সিদ্দিককে মন্ত্রিত্ব থেকে সরিয়ে দেয়ার কথা ভাবছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার। এ লক্ষ্যে টিউলিপকে তার পদ থেকে সরিয়ে ওই পদে দায়িত্ব পালনের জন্য সম্ভাব্য ব্যক্তিদের শর্টলিস্টও করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ একাধিক গণমাধ্যম। যদিও সেখানে এটাও দাবি করা হচ্ছে যে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী এখনও টিউলিপের পক্ষে রয়েছেন সেইসাথে তাকে যথেষ্ট সমর্থনও করছেন তিনি।