ঢাকা ০৪:৩২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৯ জানুয়ারী ২০২৫, ২৬ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চাল সিন্ডিকেট এক সপ্তাহে হাতিয়ে নিলো শত শত কোটি টাকা

রংপুর প্রতিনিধি
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ০১:০৬:০৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ জানুয়ারী ২০২৫ ২৯ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

শষ্য ভান্ডার বলে খ্যাত এবং ধান চাল উৎপাদনে উদ্বৃত্ত এলাকা বলে পরিচিত রংপুরে ভরা মৌসুমে চালের দাম অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পেয়েছে । কেজি প্রতি চালের প্রকার ভেদে ৬ থেকে ১০ টাকা কেজিতে দাম বেড়েছে। আড়ত গুলোতে হাজার হাজার বস্তা চাল থাকলেও চালের দাম বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। আড়তদার ও ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে গত এক সপ্তাহে শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

এদিকে আকস্মিক ভাবে চালের দাম বৃদ্ধি স্বল্প আয়ের মানুষ , শ্রমজিবী সহ মধ্য বিত্ত পরিবার গুলো চরম বিপাকে পড়েছে। চালের দাম তাদের নাগালের বাইরে চলে গেছে । অনেক পরিবার তিন বেলার পরিবর্তে দু বেলা ভাত খেতে বাধ্য হচ্ছেন।

বিভাগীয় নগরী রংপুরের দেশের অন্যতম বৃহৎ চালের মোকাম রংপুর সিটি বাজার ও মাহিগজ্ঞ মোকামে গিয়ে দেখা গেছে, মোটা ৪২ টাকা কেঁজির মোটা চাল কেজি প্রতি ৮ থেকে ১০ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে ৫০ থেকে ৫২ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। নাজির শাইল চাল ৭০ টাকা দরে বিক্রি হলেও এক সপ্তাহের ব্যাবধানে তা বেড়ে এখন ৮২ টাকা কেঁজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

একইভাবে কাটারী ভোগ ৭২ টাকা থেকে বেড়ে ৮২ টাকা কেঁজি, মিনিকেট চাল ৭০ টাকা থেকে বেড়ে ৭৮ টাকা, জিরা শাইল চাল ৬৪ টাকা থেকে বেড়ে ৬৮ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়াও বিআর ২৮ চাল ৫৬ টাকার স্থলে ৬৪ টাকা কেঁজি দরে বিক্রি হচেছ।

অন্যদিকে, দেশী স্বর্না চাল ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও এখন কেজি প্রতি ৮ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে ৫৮ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আড়তদাররা বলছেন, বড় বড় মিলাররা হাজার হাজার বস্তা চাল গুদাম জাত করে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করায় চালের দাম বেড়েছে। তারা বড় বড় মিলারদের দায়ি করলেও সিটি বাজার ও মাহিগজ্ঞ মোকামে ব্যবসায়ীদের গুদামে হাজার হাজার বস্তা চাল অবৈধ ভাবে মজুত রেখেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

সরেজমিন দেশের অন্যতম চালের পাইকারী মোকাম রংপুর নগরীর মাহিগজ্ঞ ও নগরীর বড় চালের আড়ত সিটি বাজার ঘুরে চালের আড়তদারদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এক সপ্তাহ আগে যে চালের দাম ছিলো তা রাতারাতি কেজি প্রতি ৬ থেকে ১০ টাকা দাম বৃদ্ধি পেল এর কোন সুনিদৃষ্ট উত্তর কোন আড়তদারই দিতে পারেননি।

যে ভাবে চালের বাজার অস্থির করা এবং শত শত কোটি টাকা লুট করছেন আড়তদার ব্যাবসায়ীরা। রংপুর নগরীর সিটি বাজারে চালের বড় বড় আড়তদাররা তাদের গোডাউনে হাজার হাজার বস্তা বিভিন্ন ধরনের চাল মজুত করে রাখলেও তারা রাতারাতি সিন্ডিকেট করে চালের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

আড়তদার আফজাল হোসেনের আড়তে তাকে পাওয়া না গেলেও তার ম্যানেজার আফজাল শরীফ স্বীকার করেন এক মাস ধরে তাদের গোডাউনে দু’হাজারেরও বেশি চাল মজুত ছিলো এর মধ্যে হাজার খানেক বস্তা চাল বিক্রি হয়েছে। আবারো হাজারেও বেশি চাল তারা কিনেছেন। কিন্তু অনেক আগের কেনা চাল কেমন করে দু দিনের ব্যবধানে কেজি প্রতি ৬ থেকে ১০ টাকা দাম বাড়লো তার কোন ব্যাখ্যা তিনি দিতে পারেননি। একই ভাবে আরেক বড় আড়তদারের ম্যানেজার সাহেব আলী জানালেন একই কথা তাদের গোডাউনে দেড় দু হাজার বস্তা চাল সব সময় মজুত থাকে। এখান থেকে চাল বিইক্র হয় আবারো চাল নিয়ে আসে তারা দিনাজপুর নওগা সহ বিভিন্ন জেলা থেকে।

এক সপ্তাহ আগে তাদের আগের দামে কেনা চাল থাকার পরেও কেজি প্রতি ৬ থেকে ১০ টাকা চালের দাম বাড়লো কিভাবে তার উত্তরে তিনি জানান, আমাদের আগের দামে চাল কেনা থাকলেও এখন বড় বড় মোকামে চালের দাম বৃদ্ধি পাবার কারনে তাদেরকেও বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। কেন আগের দামে আগে থেকে ষ্টক করে রাখা চাল বিক্রি করা হলোনা তার কোন ব্যাখ্যা তার কাছে নেই তিনি মালিকের আদেশ বলে চালিয়ে দিলেন।

একইভাবে দেশের অন্যতম বৃহৎ চালের মোকাম নগরীর মাহিগজ্ঞ এলাকায় শতাধিক চালের আড়তদার ব্যবসায়ী রয়েছেন সেখানেও অন্তত ৩০ থেকে ৪০ হাজার বস্তা চাল আগের দরে কেনা রয়েছে। সিটি বাজার ও মাহিগজ্ঞ মোকামের চালের আড়তদাররা কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে এক সাথে চালে দাম বাড়িয়ে দিয়ে শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন গত ৭ দিনে এমন অভিযোগ ক্ষুদ্র চাল ব্যবসায়ীদের। মুলত চালের বাজার অস্থির করার নেপথ্যে অল্প কিছু বড় বড় আড়তদার ব্যবসায়ী আর মিলার রয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। রংপুর হচ্ছে চাল উৎপাদনে দেশের মধ্যে অন্যতম উদ্বৃত্ত এলাকা বলে পরিচিত। বোরো ধানের ভরা মৌসুমে চালের দাম অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পাবার কোন কারন নেই বলে এটা সিন্ডিকেট চক্রের কারসাজি বলে মন্তব্য করেছেন অবসরপ্রাপ্ত কৃষি বিশেষজ্ঞ কৃষিবিদ আলী আযম জানিয়েছেন।

রংপুর কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর রংপুরের উপ পরিচালক রিয়াজ উদ্দিন জানিয়েছেন, রংপুর জেলা সব সময় ধান চাল উৎপাদনে উদ্বৃত্ত এলাকা। প্রতি বছর শুধু মাত্র রংপুর জেলা থেকে উৎপাদিত সাড়ে চাল লাখ মেট্রিক টন চাল দেশের অন্য জেলার চাহিদা মিটিয়ে থাকে।

তিনি জানান, অল্প কিছুদিন আগে আমন মৌসুমে রংপুর জেলায় আমন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছিলো ১ লাখ ৬৬ হাজার ৭শ ২৩ হেক্টরজমি। সেখানে লক্ষ্য মাত্রা ছাপিয়ে চাষ হয়েছে ১ লাখ ৬৬ হাজার ৯শ ৪০ হেক্টর জমিতে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছিলো ৫ লাখ ৯৮ হাজার ৪৪ মেট্রিক টন চাল। সেই লক্ষ্য মাত্রার চেয়ে বেশী চাল উৎপাদন হয়েছে। ইতিমধ্যেই ৯০ ভাগ জমির ধান কাটা মাড়াই শেষ হয়েছে।

এবার আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় ফলন ভালো হয়েছে বলে জানান তিনি। রংপুর জেলার মানুষের আমন চালের চাহিদা রয়েছে সাড়ে তিন লাখ মেট্রিকটন। সেখানে আড়াই লাখ মেট্রিক টনেরও বেশি চাল উদ্বৃত্ত থাকবে যা দেশের অন্যন্য জেলার চাহিদা মেটাবে। সেখানে ভরা মৌসুমে অন্য জেলার কথা বাদ দিলাম রংপুরে চালের দাম বৃদ্ধি পাবার কোন কারন নেই। এটা সিন্ডিকেট চক্রের কারসাজি এদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন বলে জানান তিনি।

এদিকে, চালের দাম অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পাওয়ায় নিম্ন আয়ের মানুষ, শ্রমজিবী সহ নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো চরম বিপাকে পড়েছে।

রিকশাওয়ালা সাজাহান , কুলি নবাব আলী জানান, আমাদের আয় বাড়েনি অথচ চালের দাম অস্বাভাবিক বেড়েছে ৪২ টাকা কেঁজির মোটা চাল ৫২ টাকায় উঠেছে ফলে তিন বেলার পরিবর্তে দু বেলা আধা পেট করে ভাত খেতে হচ্ছে তাদের।

একই কথা জানালেন, গৃহবধূ আজ্ঞু বেগম তিনি বললেন যে ভাবে চালের দাম বাড়ছে তাতে করে তাদের পক্ষে চলা অসম্ভব হয়ে উঠেছে সরকারকে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া দরকার বলে তিনি জানান।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

চাল সিন্ডিকেট এক সপ্তাহে হাতিয়ে নিলো শত শত কোটি টাকা

সংবাদ প্রকাশের সময় : ০১:০৬:০৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ জানুয়ারী ২০২৫

শষ্য ভান্ডার বলে খ্যাত এবং ধান চাল উৎপাদনে উদ্বৃত্ত এলাকা বলে পরিচিত রংপুরে ভরা মৌসুমে চালের দাম অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পেয়েছে । কেজি প্রতি চালের প্রকার ভেদে ৬ থেকে ১০ টাকা কেজিতে দাম বেড়েছে। আড়ত গুলোতে হাজার হাজার বস্তা চাল থাকলেও চালের দাম বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। আড়তদার ও ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে গত এক সপ্তাহে শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

এদিকে আকস্মিক ভাবে চালের দাম বৃদ্ধি স্বল্প আয়ের মানুষ , শ্রমজিবী সহ মধ্য বিত্ত পরিবার গুলো চরম বিপাকে পড়েছে। চালের দাম তাদের নাগালের বাইরে চলে গেছে । অনেক পরিবার তিন বেলার পরিবর্তে দু বেলা ভাত খেতে বাধ্য হচ্ছেন।

বিভাগীয় নগরী রংপুরের দেশের অন্যতম বৃহৎ চালের মোকাম রংপুর সিটি বাজার ও মাহিগজ্ঞ মোকামে গিয়ে দেখা গেছে, মোটা ৪২ টাকা কেঁজির মোটা চাল কেজি প্রতি ৮ থেকে ১০ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে ৫০ থেকে ৫২ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। নাজির শাইল চাল ৭০ টাকা দরে বিক্রি হলেও এক সপ্তাহের ব্যাবধানে তা বেড়ে এখন ৮২ টাকা কেঁজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

একইভাবে কাটারী ভোগ ৭২ টাকা থেকে বেড়ে ৮২ টাকা কেঁজি, মিনিকেট চাল ৭০ টাকা থেকে বেড়ে ৭৮ টাকা, জিরা শাইল চাল ৬৪ টাকা থেকে বেড়ে ৬৮ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়াও বিআর ২৮ চাল ৫৬ টাকার স্থলে ৬৪ টাকা কেঁজি দরে বিক্রি হচেছ।

অন্যদিকে, দেশী স্বর্না চাল ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও এখন কেজি প্রতি ৮ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে ৫৮ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আড়তদাররা বলছেন, বড় বড় মিলাররা হাজার হাজার বস্তা চাল গুদাম জাত করে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করায় চালের দাম বেড়েছে। তারা বড় বড় মিলারদের দায়ি করলেও সিটি বাজার ও মাহিগজ্ঞ মোকামে ব্যবসায়ীদের গুদামে হাজার হাজার বস্তা চাল অবৈধ ভাবে মজুত রেখেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

সরেজমিন দেশের অন্যতম চালের পাইকারী মোকাম রংপুর নগরীর মাহিগজ্ঞ ও নগরীর বড় চালের আড়ত সিটি বাজার ঘুরে চালের আড়তদারদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এক সপ্তাহ আগে যে চালের দাম ছিলো তা রাতারাতি কেজি প্রতি ৬ থেকে ১০ টাকা দাম বৃদ্ধি পেল এর কোন সুনিদৃষ্ট উত্তর কোন আড়তদারই দিতে পারেননি।

যে ভাবে চালের বাজার অস্থির করা এবং শত শত কোটি টাকা লুট করছেন আড়তদার ব্যাবসায়ীরা। রংপুর নগরীর সিটি বাজারে চালের বড় বড় আড়তদাররা তাদের গোডাউনে হাজার হাজার বস্তা বিভিন্ন ধরনের চাল মজুত করে রাখলেও তারা রাতারাতি সিন্ডিকেট করে চালের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

আড়তদার আফজাল হোসেনের আড়তে তাকে পাওয়া না গেলেও তার ম্যানেজার আফজাল শরীফ স্বীকার করেন এক মাস ধরে তাদের গোডাউনে দু’হাজারেরও বেশি চাল মজুত ছিলো এর মধ্যে হাজার খানেক বস্তা চাল বিক্রি হয়েছে। আবারো হাজারেও বেশি চাল তারা কিনেছেন। কিন্তু অনেক আগের কেনা চাল কেমন করে দু দিনের ব্যবধানে কেজি প্রতি ৬ থেকে ১০ টাকা দাম বাড়লো তার কোন ব্যাখ্যা তিনি দিতে পারেননি। একই ভাবে আরেক বড় আড়তদারের ম্যানেজার সাহেব আলী জানালেন একই কথা তাদের গোডাউনে দেড় দু হাজার বস্তা চাল সব সময় মজুত থাকে। এখান থেকে চাল বিইক্র হয় আবারো চাল নিয়ে আসে তারা দিনাজপুর নওগা সহ বিভিন্ন জেলা থেকে।

এক সপ্তাহ আগে তাদের আগের দামে কেনা চাল থাকার পরেও কেজি প্রতি ৬ থেকে ১০ টাকা চালের দাম বাড়লো কিভাবে তার উত্তরে তিনি জানান, আমাদের আগের দামে চাল কেনা থাকলেও এখন বড় বড় মোকামে চালের দাম বৃদ্ধি পাবার কারনে তাদেরকেও বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। কেন আগের দামে আগে থেকে ষ্টক করে রাখা চাল বিক্রি করা হলোনা তার কোন ব্যাখ্যা তার কাছে নেই তিনি মালিকের আদেশ বলে চালিয়ে দিলেন।

একইভাবে দেশের অন্যতম বৃহৎ চালের মোকাম নগরীর মাহিগজ্ঞ এলাকায় শতাধিক চালের আড়তদার ব্যবসায়ী রয়েছেন সেখানেও অন্তত ৩০ থেকে ৪০ হাজার বস্তা চাল আগের দরে কেনা রয়েছে। সিটি বাজার ও মাহিগজ্ঞ মোকামের চালের আড়তদাররা কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে এক সাথে চালে দাম বাড়িয়ে দিয়ে শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন গত ৭ দিনে এমন অভিযোগ ক্ষুদ্র চাল ব্যবসায়ীদের। মুলত চালের বাজার অস্থির করার নেপথ্যে অল্প কিছু বড় বড় আড়তদার ব্যবসায়ী আর মিলার রয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। রংপুর হচ্ছে চাল উৎপাদনে দেশের মধ্যে অন্যতম উদ্বৃত্ত এলাকা বলে পরিচিত। বোরো ধানের ভরা মৌসুমে চালের দাম অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পাবার কোন কারন নেই বলে এটা সিন্ডিকেট চক্রের কারসাজি বলে মন্তব্য করেছেন অবসরপ্রাপ্ত কৃষি বিশেষজ্ঞ কৃষিবিদ আলী আযম জানিয়েছেন।

রংপুর কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর রংপুরের উপ পরিচালক রিয়াজ উদ্দিন জানিয়েছেন, রংপুর জেলা সব সময় ধান চাল উৎপাদনে উদ্বৃত্ত এলাকা। প্রতি বছর শুধু মাত্র রংপুর জেলা থেকে উৎপাদিত সাড়ে চাল লাখ মেট্রিক টন চাল দেশের অন্য জেলার চাহিদা মিটিয়ে থাকে।

তিনি জানান, অল্প কিছুদিন আগে আমন মৌসুমে রংপুর জেলায় আমন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছিলো ১ লাখ ৬৬ হাজার ৭শ ২৩ হেক্টরজমি। সেখানে লক্ষ্য মাত্রা ছাপিয়ে চাষ হয়েছে ১ লাখ ৬৬ হাজার ৯শ ৪০ হেক্টর জমিতে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছিলো ৫ লাখ ৯৮ হাজার ৪৪ মেট্রিক টন চাল। সেই লক্ষ্য মাত্রার চেয়ে বেশী চাল উৎপাদন হয়েছে। ইতিমধ্যেই ৯০ ভাগ জমির ধান কাটা মাড়াই শেষ হয়েছে।

এবার আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় ফলন ভালো হয়েছে বলে জানান তিনি। রংপুর জেলার মানুষের আমন চালের চাহিদা রয়েছে সাড়ে তিন লাখ মেট্রিকটন। সেখানে আড়াই লাখ মেট্রিক টনেরও বেশি চাল উদ্বৃত্ত থাকবে যা দেশের অন্যন্য জেলার চাহিদা মেটাবে। সেখানে ভরা মৌসুমে অন্য জেলার কথা বাদ দিলাম রংপুরে চালের দাম বৃদ্ধি পাবার কোন কারন নেই। এটা সিন্ডিকেট চক্রের কারসাজি এদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন বলে জানান তিনি।

এদিকে, চালের দাম অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পাওয়ায় নিম্ন আয়ের মানুষ, শ্রমজিবী সহ নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো চরম বিপাকে পড়েছে।

রিকশাওয়ালা সাজাহান , কুলি নবাব আলী জানান, আমাদের আয় বাড়েনি অথচ চালের দাম অস্বাভাবিক বেড়েছে ৪২ টাকা কেঁজির মোটা চাল ৫২ টাকায় উঠেছে ফলে তিন বেলার পরিবর্তে দু বেলা আধা পেট করে ভাত খেতে হচ্ছে তাদের।

একই কথা জানালেন, গৃহবধূ আজ্ঞু বেগম তিনি বললেন যে ভাবে চালের দাম বাড়ছে তাতে করে তাদের পক্ষে চলা অসম্ভব হয়ে উঠেছে সরকারকে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া দরকার বলে তিনি জানান।