রাজা পেপার মিলের বিষাক্ত বর্জ্য লোকালয়ে, বাড়ছে রোগবালাই
- সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৯:৪৪:৩৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪ ৪২ বার পড়া হয়েছে
গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার কামারদহ ইউনিয়নের চাপড়ীগঞ্জে রাজা গ্রুপের রাজা পেপার এন্ড বোর্ড মিলের কারখানার বিষাক্ত বর্জ্য ইছামতি নদীতে ফেলায় ১০ গ্রামের মানুষ দুর্বিষহ জীবনযাপন করছে।
সরজমিন দেখা গেছে, কারখানার বর্জ্য সরাসরি খালের পানিতে ফেলায় দূষণের কবলে ইতোমধ্যে বিলুপ্ত হয়েছে দেশিয় মাছসহ জলজপ্রাণী । কারখানা থেকে নির্গত কালো ধোয়া, ছাই ও বর্জ্যের কারণে ক্ষতিকর প্রভাব পড়েছে ফসলি জমিতে। এছাড়া বিভিন্ন রোগবালাইয়ে আক্রান্ত হচ্ছেন এলাকার মানুষজন। ক্ষতিগ্রস্তরা এক মাস আগে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী বরাবর প্রতিকার চেয়ে অভিযোগ দাখিল করলেও অজ্ঞাত কারনে কার্যকরি ব্যবস্থা গ্রহন না করায় ফের উপজেলা অফিসার বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করে বি়ভিন্ন দপ্তরে অনুলিপি প্রদান করেছেন।
স্মারকলিপি প্রদানকালে উপস্থিত ছিলেন,ইউপি সদস্য নারীনেত্রী হ্যাপী বেগম,সাবেক ইউপি সদস্য শফিকুল ইসলাম,প্রধান শিক্ষিকা নূরে দিবা শান্তি, কৃষক জাহিদুল ইসলাম,কৃষক শাহীন মিয়া, কৃষক আমজাদ হোসেন,কৃষক রাজ মিয়া সহ অনেকে।
উল্লেখ্য: রংপুর-ঢাকা মহাসড়ক ঘেঁষে গোবিন্দগঞ্জের চাঁপড়ীগঞ্জে ফসলি জমিতে গড়ে উঠেছে রাজা পেপার মিল। গত ৫ বছর আগে প্রতিষ্ঠিত পেপার মিলটি উৎপাদন চালিয়ে আসছে। কারখানার বর্জ্য পরিশোধন না করেই সরাসরি ফেলা হচ্ছে ইছামতিগজারী নদীতে। বর্জ্য মিশ্রিত পানি অন্তত ১৫ কিলোমিটার দুরে গিয়ে মিশেছে করতোয়া নদীতে। খালের পানি বিষাক্ত বর্জ্যে কালচে হয়েছে, দিনের পর দিন বর্জ্য ফেলায় দিন দিন ভরাট হচ্ছে নদীটি। কোথাও বর্জ্যের স্তুপ হয়েছে। আবার কিছু স্থানে ময়লা-অবর্জনায় পোকামাকড় দেখা দিয়েছে। খাল থেকে তীব্র পচা দূর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ায় জনজীবনে নেমে এসেছে চরম দুর্ভোগ। দুষিত বর্জে এলাকায় দেখা দিয়েছে পরিবেশ বিপর্যয়। বিরুপ প্রভাব পড়েছে জীববৈচিত্যে ক্ষতি হচ্ছে কৃষিতেও। স্বাস্থ্য ঝুঁকিতেও পড়েছেন এলাকার মানুষ।
পেপার মিলটির গা-ঘেঁষেই চাঁপড়ীগঞ্জ বাজার,চাপরীগঞ্জ এসএম ফাজিল মাদ্রাসা, চাপরীগঞ্জ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ আছে চারটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। খালের দুষিত বর্জ্যরে ছড়ানো দুর্গন্ধে বাজারসহ স্কুলে আসা-যাওয়া করতে প্রতিনিয়ত দুর্ভোগ পোহাতে হয় শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষকে।
স্থানীয়রা বলেন, বিষাক্ত পানির কারণে খালে আর দেশীয় প্রজাতির মাছ দেখা যাচ্ছেনা। দূষিত পানিতে প্রায়ই ব্যঙ, সাপসহ জলজপ্রাণি মরে গিয়ে ভেসে উঠছে। অসাবধাণত যদি কেউ খালের পানি ব্যবহার করে তাহলে চর্মসহ নানা রোগে আক্রান্ত হতে হচ্ছে।
এ বিষয়ে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দা ইয়াসমিন সুলতানার বক্তব্য জানতে একাধিকবার ফোন করেও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
গাইবান্ধার জেলা প্রশাসক চৌধুরী মোয়াজ্জেম আহমদ সাংবাদিকদের বলেন, এ বিষয়ে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।