বেড়েছে ভুট্টার আবাদ, কমেছে বোরো চাষ
- সংবাদ প্রকাশের সময় : ০২:৩০:২০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪ ২২০ বার পড়া হয়েছে
বরেন্দ্র অঞ্চল হিসাবে খেত বাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলায় ভুট্টার আবাদ গত বছরের তুলনায় এবার রবি মৌসুমে প্রায় দ্বিগুন গুণ বেড়েছে। তবে এ সময়ে বোরো ধানের আবাদ কমেছে। এ ছাড়া সরিষা, পেয়াজের আবাদ কিছুটা কমলেও আলুর আবাদ কিছুটা বেড়েছে।
কৃষক ও কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, বিএমডিএ গভীর নলকুপের আওতায় বোরো ধান চাষ সীমিত করার নির্দেশ দেওয়ায় বোরো ধানের আবাদ কমেছে। অন্যদিকে ভুট্টা চাষে লাভ বেশি হওয়ায় কৃষকেরা বোরোর আবাদ কমিয়ে দিয়ে ভুট্টা আবাদের দিকে ঝুকেছে।
গোদাগাড়ী উপজেলা কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, গত বছর ২ হাজার ৮৫০ হেক্টর জমিতে ভুট্টার আবাদ করা হয়। এবার চলতি মৌসুমে আবাদ হয় ৪ হাজার ২৮০ হেক্টর জমিতে। সেই হিসাবে গত বছরের তুলনায় প্রায় দ্বিগুল বেশি ভুট্টার আবাদ হয়েছে।
অন্যদিকে গত মৌসুমে বোরোর আবাদ হয়েছিল ১৬ হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে। চলতি মৌসুমে বোরো আবাদের লক্ষ্য মাত্রা ১৬ হাজার ৮০০ হেক্টর ধরা হলেও কৃষি অফিস বলছে বোরো আবাদ কমবে।
এ ছাড়া গত বছর ২২ হাজার ১১০ হেক্টর জমিতে সরিষার এবাদ হলেও এবার হয়েছে ১৭ হাজার ৭৬০ হেক্টর জমিতে। গত বছর ১ হাজার ৯৮৫ হেক্টর জমিতে আলুর আবাদ হলেও এবার হয়েছে ২ হাজার ৩৪২ হেক্টর জমিতে। পেয়াজ গত বছর ১৩০০ হেক্টর জমিতে আবাদ হলেও এখন পর্যন্ত পেয়াজ আবাদ হয়েছে ৬৭০ হেক্টও জমিতে। এখনো জমিতে পেয়াজ লাগানোর কাজ চলছে।
বিএমডিএ, গোদাগাড়ী অফিস সুত্রে জানা যায়, গোদাগাড়ী উপজেলায় ভু-গর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় সেচযন্ত্রে আশানুরুপ পানি/ডিসচার্জ পাওয়া যাচ্ছে না। সেই কারনে সেচযন্ত্র হতে চাহিদা মাফিক বোরো ধানে সেচ প্রদান করা সম্ভব হবে না। সেই প্রেক্ষিতে প্রতিটি সেচযন্ত্র এবং এলএলপি’র কমান্ড এরিয়ার আওতায় বোরো ধান চাষবাদ সীমীত করার নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। সেই সাথে ধানের পরিবর্তে কম পানি প্রয়োজন গম, সরিষা, চীনা, মষুর, খেসাড়ী, ছোলা, ভুট্টা, টমেটো, পেয়াজ, আলু শীতকালীন সাক-সবজিসহ অন্যান্য ফসল চাষ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
পিরিজ পুর গ্রামের কৃষক আবুল বলেন, এবার তিন বিঘা জমিতে ভুট্টার চাষ করেছি। তবে ১৩ শতক জমিতে তিনি বোরো আবাদ করবেন।
কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বোরো আবাদে খরচ বেশি। ভুট্টায় সেচ খরচও কম। ভুট্টার দামও ভালো পাওয়া যাচ্ছে। উৎপাদন ব্যয় কম এবং লাভ বেশি হওয়ায় তাঁরা ভুট্টা চাষে ঝুঁকছেন।
গোদাগাড়ী উপজেলা কৃষি অফিসার মরিয়ম আহমেদ বলেন, গোদাগাড়ী উপজেলা বরেন্দ্র অঞ্চল হওয়ায় ভু-গর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় পানি সংকটের কারনে এ অঞ্চলের কৃষকেরা পানি সাশ্রয়ী ফসল ভুট্টা, গম, আলু, সরিষা, পেয়াজসহ বিভিন্ন ফসল চাষ করছে। ভুট্টা চাষ করতে ৪ টা সেচ লাগে কিন্তু বোরো ধান চাষে ১২ টা সেচ লাগে। ভুট্টার দাম ভালো পাচ্ছে কৃষকেরা। এতে করে কৃষকেরা ভট্টার চাষ বেশী করছে। এছাড়াও ভু-গর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় সেচযন্ত্রে আশানুরুপ পানি/ডিসচার্জ পাওয়া না যাওয়ায় বিএমডিএ বোরো ধানের আবাদ কমিয়ে কম পানি প্রয়োজন গম, সরিষা, চীনা, মষুর, খেসাড়ী, ছোলা, ভুট্টা, টমেটো, পেয়াজসহ বিভিন্ন ফসল চাষ করতে বলেছে। ফলে এ উপজেলায় বোরো ধানের আবাদ কমেছে, বেড়েছে ভুট্টার আবাদ।