‘বিচারের নামে জামায়াত নেতাদের হত্যা করা হয়েছে’
- সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৯:২৪:১০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৪ ৭০ বার পড়া হয়েছে
জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ২৪ এর স্বাধীনতা যুদ্ধে যারা তাদের মূল্যবান জীবনবাজি রেখে গণঅভ্যূত্থান এবং বিপ্লবে অংশ নিয়েছেন, প্রাণ দিয়েছেন- আমরা তাদের কাছে কৃতজ্ঞ। আমাদের সন্তানেরা একটি বৈষম্যহীন সমাজের জন্য গুলির সামনে বুক পেতে দিয়েছিল। আমরাও সেই বৈষম্যহীন দেশ গড়ে তুলতে চাই। আমরা এমন একটি বাংলাদেশ গড়তে চাই; যেখানে মানুষের মধ্যে জাতপাত দল ধর্মের ব্যবধান থাকবে না। সমস্ত মানুষ তার সকল বৈধ অধিকার ভোগ করবে। শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) যশোর শহরের চাঁচড়া চেকপোস্ট মোড়ে আয়োজিত পথসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, শ্রমিক তার অধিকার ভোগ করবে। কৃষক তার অধিকার পাবে। সে তার ফসলের ন্যায্য মূল্য পাবে। আবার অফিস আদালত কোর্ট- কাছারিতে যারা কাজ করেন; তারা জনগণের আমানতের ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় করবেন।
তিনি আরও বলেন, ২০২৪ সালের এই যুদ্ধে নির্দিষ্ট কোনও দল, কোনও ধর্ম এবং কোনও লিঙ্গের মানুষেরা যুদ্ধ করেনি। কোলের শিশুরাও শহীদ হয়েছে। বৃদ্ধরা শাহাদাত বরণ করেছেন। তাদের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আমরাও লড়াই করেছি। আমাদের এই জাতীয় ঐক্য ধরে রাখাতে হবে। কেউ যেন এই ঐক্য নষ্ট না করতে পারে। এজন্য আপমর ছাত্র-জনতাকে এবং সমস্ত বাংলাদেশের মানুষকে সজাগ থাকতে হবে।
ডা. শফিকুর রহমান আরও বলেন, যারা আমাদের ওপর ফ্যাসিবাদের ডালপালা বিস্তার করেছিলেন, এক নাগাড়ে সাড়ে ১৫ বছর যারা তান্ডব চালিয়েছিলেন,যারা খুন গুম চালিয়েছিলেন, দেশের সম্পদ লুণ্ঠন করে বিদেশে পাচার করেছেন, আমরা তাদের ক্ষমা করবো না। তাদের প্রত্যেকের বিচার করা হবে।
জামায়াতের আমির বলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী একটি মজলুম দল। এই দলের শীর্ষ নেতাকে বিচারের নামে হত্যা করা হয়েছে। কোরআনোর পাখি মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী, জননেতা গোলাম আজম, মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মুজাহিদ, আবদুল কাদের মোল্লা, কামারুজ্জামানকে হত্যা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশকে কারারুদ্ধ করে রাখা হয়েছিল। আমাদের বৈধ অফিসে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। আমাদের দলকে শেষপর্যন্ত নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কিন্তু আল্লাহর ফয়সালা ভিন্ন ছিল। যারা এই বাংলার জমি থেকে ইসলামী সংগঠন জামায়াতে ইসলামী এবং ইসলামী ছাত্র শিবিরকে চিরতরে নির্মূল করতে চেয়েছিল, রাব্বুল আলামিন আজ তাদের নিষিদ্ধ করে দিয়েছে।
আমরা আমাদের কর্মীদের বলেছি, আপনারা উল্লাস করবেন না, কারও ওপর হাত তুলবেন না। তারা আমাদের কথা রেখেছে। আমাদের সহকর্মীদের ওপর অনেক নির্যাতন করা হয়েছে। আমাদের অন্তরে অনেক কষ্ট।
তিনি বলেন, যশোর ঐতিহ্যবাহী এবং আন্দোলন-সংগ্রামের এলাকা। সুদীর্ঘ সংগ্রামের এলাকা। এই এলাকা থেকে সর্বপ্রথম একটি দেশের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ৯ম ডিভিশনের সেক্টরের কামান্ডার মেজর এমএ জলিল সঙ্গীদের নিয়ে লুটেরাদের বিরুদ্ধে প্রথম আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন। তাই এই যশোরকে আমরা অন্য উচ্চতায় দেখি।
চাঁচড়া পথসভা শেষ করে তিনি দ্বিতীয় পথসভা করেন যশোর-বেনাপোল মহাসড়কের ঝিকরগাছা বাজার এলাকায়। সবশেষ তিনি শার্শা উপজেলা নাভারণ মোড়ে পথসভায় বক্তব্য রাখেন। সভা শেষে তিনি রওয়ানা দেন সাতক্ষীরার উদ্দেশ্যে।
জামায়াতের আমির সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে বিমানের একটি ফ্লাইটে যশোরে আসেন। যশোর বিমানবন্দরে দলের জেলা আমির অধ্যাপক গোলম রসুলের নেতৃত্বে নেতাকর্মীরা তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান।