ঢাকা ১০:৪০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অন্তর্বর্তী সরকারের ১০০ দিন: গুরুত্বপূর্ণ অর্জন যেসব

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৭:৫৭:০৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪ ৬ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নেয়ার ১০০ দিন পূর্ণ হয়েছে। সরকারের মূল অর্জনগুলো নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি পোস্ট করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

শনিবার (১৬ নভেম্বর) সকালে ফেসবুকে প্রেস সচিবের পোস্টে বলা হয়-

# ঝামেলাহীন শুরু:

সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের একবার বলেছিলেন, শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করলে লাখ লাখ মানুষ মারা যাবে। অবশেষে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করা হয়েছে। কিন্তু কতজন নিহত হলো? অন্তর্বর্তী সরকার, রাজনৈতিক দলগুলো এবং সকল বাংলাদেশি একত্রিত হয়ে আগস্টের প্রথম কয়েক সপ্তাহে সমাজের শৃঙ্খলাব্যবস্থা পুনরুদ্ধারে সহায়তা করেছিলো। বিশেষ করে ওই সময়টায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অনেকাংশে অনুপস্থিত ছিল কম। মাসিক অপরাধ পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অনেকাংশে স্থিতিশীল হয়েছে।

#  জুলাই-আগস্ট গণহত্যার জন্য জবাবদিহিতা ও ন্যায়বিচার:

জুলাই-আগস্টের গণহত্যার তদন্তের জন্য জাতিসংঘের নেতৃত্বে একটি ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনকে আমন্ত্রণ জানায় অন্তর্বর্তী সরকার। এই মিশন সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে কাজ করছে। তারা তদন্তের ভিত্তিতে প্রথম রিপোর্টটি আগামী মাসের প্রথম দিকে দেবে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। জাতিসংঘের সেই রিপোর্টটি পাওয়ার পর জানা যাবে, কে জুলাই-আগস্টের গণহত্যার নির্দেশ দিয়েছিল।

এছাড়া, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পৃথকভাবে এসব হত্যাকাণ্ডের তদন্ত করছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ আনা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের বিচারকার্য সত্যিকার অর্থে আন্তর্জাতিক মানের করা হবে, যাতে করে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো এই রায়ের মান নিয়ে প্রশ্ন তুলতে না পারে।

জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে আহতদের জন্য বিনামূল্যে চিকিৎসা নিশ্চিত করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। সেই লক্ষ্যে শহীদদের পরিবারের জন্য ৩০ লাখ টাকা ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়াও ক্ষতিগ্রস্ত ও শহীদদের পরিবারকে দেখাশোনা করার জন্য একটি ফাউন্ডেশন ইতোমধ্যে তৈরি করা হয়েছে।

#  অর্থনীতি পুনরুদ্ধার:

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যখন ক্ষমতায় আসে, তখন দেশের অর্থনীতি ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে ছিল। তবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেয়ার ১০০ দিনের মাথায় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আসা শুরু হয়েছে। রিজার্ভে হাত না দিয়েই বিলিয়ন ডলারের পেমেন্ট পরিশোধ করা হয়েছে। রফতানি খাতেও সুবাতাস বইছে, সেপ্টেম্বরে ৭ শতাংশ এবং অক্টোবরের ২০ শতাংশের বেশি রফতানি আয় বেড়েছে।

ব্যাংকিং খাত অনেকটা স্থিতিশীল হয়েছে। অর্থনীতিকে পুনরায় গতিশীল করতে দেশের সেরা অর্থনীতিবিদদের নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তারা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয় কাজ করেছে।

# সংস্কার রোডম্যাপ:

ইতোমধ্যে দশটি সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়েছে। আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেবে কমিশনগুলো। সেই রিপোর্টগুলো নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করবে অন্তর্বর্তী সরকার। দেশে কী ধরনের সংস্কার প্রয়োজন, সে বিষয়ে ঐক্যমত পোষণ করা হলে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। আলাদাভাবে নির্বাচনের জন্য নতুন ও গ্রহণযোগ্য সিইসি ও ইসি খুঁজতে সার্চ কমিটি গঠন করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশন গঠিত হলে ভোটার তালিকা তৈরির কাজ শুরু করা হবে।

# বিশ্ববাসীর সমর্থন:

ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সংস্কার উদ্যোগের জন্য পৃথিবীর প্রায় সব দেশ অভূতপূর্ব সমর্থন দিয়েছে। নিউইয়র্ক ও বাকুতে বছরের সবচেয়ে বড় দুইটি বিশ্ব সম্মেলনে তাকে রকস্টারের মতো সম্মানিত করা হয়েছে। ইতোমধ্যে বিভিন্ন সংস্থা ও দাতারা আট বিলিয়ন ডলারের বেশি ঋণ দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তবে কিছু জায়গা থেকে প্রচুর পরিমাণে ভুল তথ্য প্রচার করা হয়েছে। কিন্তু বিশ্ববাসী সত্য সম্পর্কে অবহিত।

# জিরো দুর্নীতি:

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এবং এর উপদেষ্টা ও কর্মকর্তাদের কোনও দুর্নীতির গল্প কেউ শুনেছেন কি না সে প্রশ্নও তুলেন তিনি।

# অস্থিরতা ও সংকট সমাধানে দক্ষ ও শান্তিপূর্ণ ব্যবস্থাপনা:

জনগণের প্রত্যাশা পূরণ করাই অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। ক্ষমতায় থাকার এই ১০০ দিনের মধ্যে বিভিন্ন দাবি-দাওয়া ও আকস্মিক ক্ষোভ নিয়ে বেশ কয়েকটি দল রাস্তায় নেমেছে। তবে, এখন পর্যন্ত আলোচনার মাধ্যমে বিক্ষোভ দমনে সক্ষম হয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এসব বিক্ষোভ দমনে সামান্য শক্তি প্রয়োগ করা হয়েছে কি না সন্দেহ!

পোশাক খাত স্থানীয় অস্থিরতায় বিপর্যস্ত। রাজনৈতিকভাবে জড়িত কিছু কারখানার মালিকরা এখনও নিখোঁজ রয়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে প্রতিদিন সংকট মোকাবেলা করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। তবে, চলমান অস্থিরতা নিরসনে সর্বোচ্চ সংযম দেখিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকার। এটা সত্যি যে কিছু ঝামেলা এখনও আছে। কিন্তু সেগুলো আমাদের রফতানিকে প্রভাবিত করতে সক্ষম হয়নি।

অন্তর্বর্তী সরকার ভয়াবহ বন্যা মোকাবেলা ও দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করেছে। এছাড়াও আনসার বাহিনীর বিক্ষোভ কোনো ঝামেলা ছাড়াই শান্তিপূর্ণভাবে সমাধান করা হয়েছে। অন্যদিকে, একটি বড় ধরনের নতুন রোহিঙ্গা সংকট কেউ বুঝে ওঠার আগেই সমাধান করা হয়েছে।

# পররাষ্ট্রনীতিতে নতুন দিকনির্দেশনা:

সার্ক পুনরুজ্জীবিত করতে বারবার আহ্বান জানিয়েছেন ড. ইউনূস। আসিয়ানে সদস্যপদ পাওয়ার জন্য তিনি জোরালো পদক্ষেপ নিয়েছেন। তিনি (ড. ইউনূস) বলেছেন, বাংলাদেশ ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক চায়, তবে তা হতে হবে ন্যায্যতা ও সাম্যতার ভিত্তিতে।

এছাড়া, ক্যাম্পে চাপ কমানোর জন্য রোহিঙ্গাদের তৃতীয় দেশে পুনর্বাসনের প্রকল্প দ্রুত গতিতে চলছে। রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে জাতিসংঘের নেতৃত্বে একটি নতুন সম্মেলনের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।

# সাংস্কৃতিক পুনর্জাগরণ:

গত ১০০ দিনে আমাদের সমাজে অভূতপূর্ব বিতর্ক দেখা গিয়েছে। মাদরাসা ছাত্র থেকে শুরু করে শহুরে অভিজাত, নারীবাদী থেকে ডানপন্থী, সবাই বিতর্কে অংশ নিয়েছে। প্রতিদিন আমরা নতুন সেমিনার এবং আলোচনা দেখতে পাচ্ছি। ইতিহাসকে বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে নতুনভাবে দেখা হচ্ছে। নতুন-নতুন আইডিয়া শেয়ার করা হচ্ছে। জাতীয় মঞ্চে আগমনের ঘোষণা দিয়েছেন তরুণ তারকারা। এসো ফেব্রুয়ারি, আমরা যে ধরনের সমাজ গড়তে চাই, সেই কল্পনার সমাজ নিয়ে সেরা কিছু বই দেখার অপেক্ষায়।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

অন্তর্বর্তী সরকারের ১০০ দিন: গুরুত্বপূর্ণ অর্জন যেসব

সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৭:৫৭:০৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪

অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নেয়ার ১০০ দিন পূর্ণ হয়েছে। সরকারের মূল অর্জনগুলো নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি পোস্ট করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

শনিবার (১৬ নভেম্বর) সকালে ফেসবুকে প্রেস সচিবের পোস্টে বলা হয়-

# ঝামেলাহীন শুরু:

সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের একবার বলেছিলেন, শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করলে লাখ লাখ মানুষ মারা যাবে। অবশেষে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করা হয়েছে। কিন্তু কতজন নিহত হলো? অন্তর্বর্তী সরকার, রাজনৈতিক দলগুলো এবং সকল বাংলাদেশি একত্রিত হয়ে আগস্টের প্রথম কয়েক সপ্তাহে সমাজের শৃঙ্খলাব্যবস্থা পুনরুদ্ধারে সহায়তা করেছিলো। বিশেষ করে ওই সময়টায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অনেকাংশে অনুপস্থিত ছিল কম। মাসিক অপরাধ পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অনেকাংশে স্থিতিশীল হয়েছে।

#  জুলাই-আগস্ট গণহত্যার জন্য জবাবদিহিতা ও ন্যায়বিচার:

জুলাই-আগস্টের গণহত্যার তদন্তের জন্য জাতিসংঘের নেতৃত্বে একটি ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনকে আমন্ত্রণ জানায় অন্তর্বর্তী সরকার। এই মিশন সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে কাজ করছে। তারা তদন্তের ভিত্তিতে প্রথম রিপোর্টটি আগামী মাসের প্রথম দিকে দেবে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। জাতিসংঘের সেই রিপোর্টটি পাওয়ার পর জানা যাবে, কে জুলাই-আগস্টের গণহত্যার নির্দেশ দিয়েছিল।

এছাড়া, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পৃথকভাবে এসব হত্যাকাণ্ডের তদন্ত করছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ আনা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের বিচারকার্য সত্যিকার অর্থে আন্তর্জাতিক মানের করা হবে, যাতে করে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো এই রায়ের মান নিয়ে প্রশ্ন তুলতে না পারে।

জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে আহতদের জন্য বিনামূল্যে চিকিৎসা নিশ্চিত করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। সেই লক্ষ্যে শহীদদের পরিবারের জন্য ৩০ লাখ টাকা ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়াও ক্ষতিগ্রস্ত ও শহীদদের পরিবারকে দেখাশোনা করার জন্য একটি ফাউন্ডেশন ইতোমধ্যে তৈরি করা হয়েছে।

#  অর্থনীতি পুনরুদ্ধার:

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যখন ক্ষমতায় আসে, তখন দেশের অর্থনীতি ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে ছিল। তবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেয়ার ১০০ দিনের মাথায় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আসা শুরু হয়েছে। রিজার্ভে হাত না দিয়েই বিলিয়ন ডলারের পেমেন্ট পরিশোধ করা হয়েছে। রফতানি খাতেও সুবাতাস বইছে, সেপ্টেম্বরে ৭ শতাংশ এবং অক্টোবরের ২০ শতাংশের বেশি রফতানি আয় বেড়েছে।

ব্যাংকিং খাত অনেকটা স্থিতিশীল হয়েছে। অর্থনীতিকে পুনরায় গতিশীল করতে দেশের সেরা অর্থনীতিবিদদের নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তারা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয় কাজ করেছে।

# সংস্কার রোডম্যাপ:

ইতোমধ্যে দশটি সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়েছে। আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেবে কমিশনগুলো। সেই রিপোর্টগুলো নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করবে অন্তর্বর্তী সরকার। দেশে কী ধরনের সংস্কার প্রয়োজন, সে বিষয়ে ঐক্যমত পোষণ করা হলে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। আলাদাভাবে নির্বাচনের জন্য নতুন ও গ্রহণযোগ্য সিইসি ও ইসি খুঁজতে সার্চ কমিটি গঠন করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশন গঠিত হলে ভোটার তালিকা তৈরির কাজ শুরু করা হবে।

# বিশ্ববাসীর সমর্থন:

ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সংস্কার উদ্যোগের জন্য পৃথিবীর প্রায় সব দেশ অভূতপূর্ব সমর্থন দিয়েছে। নিউইয়র্ক ও বাকুতে বছরের সবচেয়ে বড় দুইটি বিশ্ব সম্মেলনে তাকে রকস্টারের মতো সম্মানিত করা হয়েছে। ইতোমধ্যে বিভিন্ন সংস্থা ও দাতারা আট বিলিয়ন ডলারের বেশি ঋণ দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তবে কিছু জায়গা থেকে প্রচুর পরিমাণে ভুল তথ্য প্রচার করা হয়েছে। কিন্তু বিশ্ববাসী সত্য সম্পর্কে অবহিত।

# জিরো দুর্নীতি:

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এবং এর উপদেষ্টা ও কর্মকর্তাদের কোনও দুর্নীতির গল্প কেউ শুনেছেন কি না সে প্রশ্নও তুলেন তিনি।

# অস্থিরতা ও সংকট সমাধানে দক্ষ ও শান্তিপূর্ণ ব্যবস্থাপনা:

জনগণের প্রত্যাশা পূরণ করাই অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। ক্ষমতায় থাকার এই ১০০ দিনের মধ্যে বিভিন্ন দাবি-দাওয়া ও আকস্মিক ক্ষোভ নিয়ে বেশ কয়েকটি দল রাস্তায় নেমেছে। তবে, এখন পর্যন্ত আলোচনার মাধ্যমে বিক্ষোভ দমনে সক্ষম হয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এসব বিক্ষোভ দমনে সামান্য শক্তি প্রয়োগ করা হয়েছে কি না সন্দেহ!

পোশাক খাত স্থানীয় অস্থিরতায় বিপর্যস্ত। রাজনৈতিকভাবে জড়িত কিছু কারখানার মালিকরা এখনও নিখোঁজ রয়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে প্রতিদিন সংকট মোকাবেলা করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। তবে, চলমান অস্থিরতা নিরসনে সর্বোচ্চ সংযম দেখিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকার। এটা সত্যি যে কিছু ঝামেলা এখনও আছে। কিন্তু সেগুলো আমাদের রফতানিকে প্রভাবিত করতে সক্ষম হয়নি।

অন্তর্বর্তী সরকার ভয়াবহ বন্যা মোকাবেলা ও দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করেছে। এছাড়াও আনসার বাহিনীর বিক্ষোভ কোনো ঝামেলা ছাড়াই শান্তিপূর্ণভাবে সমাধান করা হয়েছে। অন্যদিকে, একটি বড় ধরনের নতুন রোহিঙ্গা সংকট কেউ বুঝে ওঠার আগেই সমাধান করা হয়েছে।

# পররাষ্ট্রনীতিতে নতুন দিকনির্দেশনা:

সার্ক পুনরুজ্জীবিত করতে বারবার আহ্বান জানিয়েছেন ড. ইউনূস। আসিয়ানে সদস্যপদ পাওয়ার জন্য তিনি জোরালো পদক্ষেপ নিয়েছেন। তিনি (ড. ইউনূস) বলেছেন, বাংলাদেশ ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক চায়, তবে তা হতে হবে ন্যায্যতা ও সাম্যতার ভিত্তিতে।

এছাড়া, ক্যাম্পে চাপ কমানোর জন্য রোহিঙ্গাদের তৃতীয় দেশে পুনর্বাসনের প্রকল্প দ্রুত গতিতে চলছে। রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে জাতিসংঘের নেতৃত্বে একটি নতুন সম্মেলনের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।

# সাংস্কৃতিক পুনর্জাগরণ:

গত ১০০ দিনে আমাদের সমাজে অভূতপূর্ব বিতর্ক দেখা গিয়েছে। মাদরাসা ছাত্র থেকে শুরু করে শহুরে অভিজাত, নারীবাদী থেকে ডানপন্থী, সবাই বিতর্কে অংশ নিয়েছে। প্রতিদিন আমরা নতুন সেমিনার এবং আলোচনা দেখতে পাচ্ছি। ইতিহাসকে বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে নতুনভাবে দেখা হচ্ছে। নতুন-নতুন আইডিয়া শেয়ার করা হচ্ছে। জাতীয় মঞ্চে আগমনের ঘোষণা দিয়েছেন তরুণ তারকারা। এসো ফেব্রুয়ারি, আমরা যে ধরনের সমাজ গড়তে চাই, সেই কল্পনার সমাজ নিয়ে সেরা কিছু বই দেখার অপেক্ষায়।