ঢাকা ০১:১৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জয়পুরহাটে ‘একটু সুখের বাজারে’ অর্ধেক দামে তরিতরকারি

জয়পুরহাট প্রতিনিধি
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৪:৪১:৩১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৫ নভেম্বর ২০২৪ ৯ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

স্থানীয় হাট-বাজারে শাকসবজির দামে যখন ঊর্ধ্বগতি, তখন ক্রেতারা স্বস্তি খুঁজে পেয়েছেন ‘একটু সুখের বাজার’-এ। সেখানে প্রায় অর্ধেক দামে বিক্রি হচ্ছে দরকারি তরিতরকারি। সব শ্রেণি-পেশার মানুষ চাহিদামতো সেখান থেকে নিত্যপ্রয়োজনীয় এসব দ্রব্য কম দামে কিনতে পারছেন। এ কারণে এর নাম দেওয়া হয়েছে ‘একটু সুখের বাজার’।

জয়পুরহাট শহরের সর্বজনীন কেন্দ্রীয় শিবমন্দির প্রাঙ্গণে গত মাস  থেকে বসছে এই বাজার। এটি চালুর উদ্যোগ নেন রাজ কুমার খেতান নামের এক ব্যক্তি। আর এর পরিচালনায় সহযোগিতা করছেন ওই মন্দির কমিটির লোকজন।

জয়পুরহাট শহরের বাসিন্দা রাজ কুমার খেতান নিজেকে আমদানি ও রপ্তানিকারক ব্যবসায়ী বলে পরিচয় দিয়েছেন। ব্যতিক্রমী এ উদ্যোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয়, সিন্ডিকেট করে তরিতরকারির দাম বাড়ানো হয়েছে। এ কারণে সিন্ডিকেট ভাঙতেই ভর্তুকি দিয়ে একটু সুখের বাজার চালু করেছি। এটি আগামী রমজান মাস পর্যন্ত চালু রাখার পরিকল্পনা আছে। প্রথম দিনে প্রায় সাত শ, দ্বিতীয় দিনে প্রায় হাজারের বেশি মানুষ বাজার করেছেন। সবাই সাধ্যমতো বাজার করে নিয়ে যাচ্ছেন। এতে অনেক ভালো লাগছে।’

৫ নভেন্বর মঙ্গলবার বেলা  সোয়া দুটার  দিকে গিয়ে বাজারটিতে দেখা গেছে, সর্বজনীন কেন্দ্রীয় শিবমন্দির প্রাঙ্গণে থরে থরে সাজিয়ে রাখা হয়েছে আলু, বেগুন, পটোল, বাঁধাকপি, ফুলকপি, শসা, টমেটো, গাজর, কাঁচা মরিচ, পেঁপে, লাউ, মিষ্টিকুমড়া, কাঁচা কলাসহ বিভিন্ন শাকসবজি। এসব পণ্য আলাদা আলাদা স্থানে নিয়ে বিক্রি করছেন মন্দিরটির  স্বেচ্ছাসেবীরা। দুপুরের পর থেকেই লোকজন কাঁচা তরকারি কেনার জন্য মন্দিরে জড়ো হচ্ছেন। আড়াইটা বাজতেই বিভিন্ন কোনায় হুমড়ি খেয়ে পড়েন ক্রেতারা। কেউ কিনছেন আলু, কেউ আবার পটোল, কেউ কেউ বেগুন বেছে নিচ্ছেন। সেই সঙ্গে লাউ, ফুলকপি, বাঁধাকপি, টমেটো, কাঁচা মরিচ—কিছুই যেন বাদ যাচ্ছে না।

বাজারটিতে বাঁধাকপি-ফুলকপি প্রতি পিস ২০ টাকা, প্রতি কেজি আলু, বেগুন ও পটোল ৩০, কাঁচা মরিচ ও টমেটো ৯০ টাকা করে কেজি, প্রতি হালি কাঁচা কলা ১০ টাকা, প্রতিটি মিষ্টিকুমড়া ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এই বাজারে পণ্য কিনতে এসেছেন জয়পুরহাট পৌরএলকার সহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার নারী পুরুষ। ক্রেতা  মফেলা  বেগম। তিনি বলেন, তাঁর স্বামী অন্যর দোকানে কাজ করেন। নিম্ন আয়ের কারণে তাঁর মতো মানুষেরা বাজারে গিয়ে তরিতরকারির দাম শুনে কিনতে পারেন না। হাট-বাজারের চেয়ে অর্ধেক দাম তরিতরকারি বিক্রি হচ্ছে বলে জেনে সেখানে কিনতে এসেছেন। হাট-বাজারে আলুর কেজি ৬০ টাকা হলেও বাজারটি থেকে ৩০ টাকা কেজি দরে কিনে বেশ সন্তুষ্ট তিনি।

একটু সুখের বাজারের কারণে শহরের বাজারগুলোতে সামান্য হলেও প্রভাব পড়েছে বলে মনে করেন জয়পুরহাট শহরের মাছুয়া বাজারের কাঁচা মাল ব্যবসায়ী আবদুল হাকিম। তাঁর মতে, এ কারণে শহরের বাজারগুলোতে তরিতরকারি দাম একটু কমেছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

জয়পুরহাটে ‘একটু সুখের বাজারে’ অর্ধেক দামে তরিতরকারি

সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৪:৪১:৩১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৫ নভেম্বর ২০২৪

স্থানীয় হাট-বাজারে শাকসবজির দামে যখন ঊর্ধ্বগতি, তখন ক্রেতারা স্বস্তি খুঁজে পেয়েছেন ‘একটু সুখের বাজার’-এ। সেখানে প্রায় অর্ধেক দামে বিক্রি হচ্ছে দরকারি তরিতরকারি। সব শ্রেণি-পেশার মানুষ চাহিদামতো সেখান থেকে নিত্যপ্রয়োজনীয় এসব দ্রব্য কম দামে কিনতে পারছেন। এ কারণে এর নাম দেওয়া হয়েছে ‘একটু সুখের বাজার’।

জয়পুরহাট শহরের সর্বজনীন কেন্দ্রীয় শিবমন্দির প্রাঙ্গণে গত মাস  থেকে বসছে এই বাজার। এটি চালুর উদ্যোগ নেন রাজ কুমার খেতান নামের এক ব্যক্তি। আর এর পরিচালনায় সহযোগিতা করছেন ওই মন্দির কমিটির লোকজন।

জয়পুরহাট শহরের বাসিন্দা রাজ কুমার খেতান নিজেকে আমদানি ও রপ্তানিকারক ব্যবসায়ী বলে পরিচয় দিয়েছেন। ব্যতিক্রমী এ উদ্যোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয়, সিন্ডিকেট করে তরিতরকারির দাম বাড়ানো হয়েছে। এ কারণে সিন্ডিকেট ভাঙতেই ভর্তুকি দিয়ে একটু সুখের বাজার চালু করেছি। এটি আগামী রমজান মাস পর্যন্ত চালু রাখার পরিকল্পনা আছে। প্রথম দিনে প্রায় সাত শ, দ্বিতীয় দিনে প্রায় হাজারের বেশি মানুষ বাজার করেছেন। সবাই সাধ্যমতো বাজার করে নিয়ে যাচ্ছেন। এতে অনেক ভালো লাগছে।’

৫ নভেন্বর মঙ্গলবার বেলা  সোয়া দুটার  দিকে গিয়ে বাজারটিতে দেখা গেছে, সর্বজনীন কেন্দ্রীয় শিবমন্দির প্রাঙ্গণে থরে থরে সাজিয়ে রাখা হয়েছে আলু, বেগুন, পটোল, বাঁধাকপি, ফুলকপি, শসা, টমেটো, গাজর, কাঁচা মরিচ, পেঁপে, লাউ, মিষ্টিকুমড়া, কাঁচা কলাসহ বিভিন্ন শাকসবজি। এসব পণ্য আলাদা আলাদা স্থানে নিয়ে বিক্রি করছেন মন্দিরটির  স্বেচ্ছাসেবীরা। দুপুরের পর থেকেই লোকজন কাঁচা তরকারি কেনার জন্য মন্দিরে জড়ো হচ্ছেন। আড়াইটা বাজতেই বিভিন্ন কোনায় হুমড়ি খেয়ে পড়েন ক্রেতারা। কেউ কিনছেন আলু, কেউ আবার পটোল, কেউ কেউ বেগুন বেছে নিচ্ছেন। সেই সঙ্গে লাউ, ফুলকপি, বাঁধাকপি, টমেটো, কাঁচা মরিচ—কিছুই যেন বাদ যাচ্ছে না।

বাজারটিতে বাঁধাকপি-ফুলকপি প্রতি পিস ২০ টাকা, প্রতি কেজি আলু, বেগুন ও পটোল ৩০, কাঁচা মরিচ ও টমেটো ৯০ টাকা করে কেজি, প্রতি হালি কাঁচা কলা ১০ টাকা, প্রতিটি মিষ্টিকুমড়া ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এই বাজারে পণ্য কিনতে এসেছেন জয়পুরহাট পৌরএলকার সহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার নারী পুরুষ। ক্রেতা  মফেলা  বেগম। তিনি বলেন, তাঁর স্বামী অন্যর দোকানে কাজ করেন। নিম্ন আয়ের কারণে তাঁর মতো মানুষেরা বাজারে গিয়ে তরিতরকারির দাম শুনে কিনতে পারেন না। হাট-বাজারের চেয়ে অর্ধেক দাম তরিতরকারি বিক্রি হচ্ছে বলে জেনে সেখানে কিনতে এসেছেন। হাট-বাজারে আলুর কেজি ৬০ টাকা হলেও বাজারটি থেকে ৩০ টাকা কেজি দরে কিনে বেশ সন্তুষ্ট তিনি।

একটু সুখের বাজারের কারণে শহরের বাজারগুলোতে সামান্য হলেও প্রভাব পড়েছে বলে মনে করেন জয়পুরহাট শহরের মাছুয়া বাজারের কাঁচা মাল ব্যবসায়ী আবদুল হাকিম। তাঁর মতে, এ কারণে শহরের বাজারগুলোতে তরিতরকারি দাম একটু কমেছে।