ঢাকা ০৭:০৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দেশীয় প্রযুক্তির ট্রাফিক সিগন্যাল বসছে রাজধানীর মোড়ে মোড়ে

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৬:৪১:৫৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩ নভেম্বর ২০২৪ ১৩ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

রাজধানীতে অনিয়ন্ত্রিত গাড়ি পার্কিং, ফুটপাত দখল, ট্রাফিক সিগন্যাল না মানাসহ নানা কারণে নিয়ন্ত্রণহীনভাবে বাড়ছে যানজট। বিভিন্ন সময় অনেক প্রযুক্তি প্রয়োগেও যানজট নিয়ন্ত্রণে আসেনি। এবার ঢাকার সড়কের মোড়ে মোড়ে বসানো হবে দেশীয় প্রযুক্তি সিগন্যাল বাতি।

জানা গেছে, ঢাকার ২৯ ইন্টারসেকশনে বসানো হবে দেশীয় প্রযুক্তির সিগন্যাল বাতি। দেশীয় এই ব্যবস্থা ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে পরিচালিত হবে। অর্থাৎ সংকেত বাতি (লাল, সবুজ ও হলুদ) জ্বলা-নেভার বিষয় ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে নিয়ন্ত্রণ করা হবে। এরপর ধাপে ধাপে এ পদ্ধতিকে অটোমেশনের দিকে উন্নীত হবে।

জানা গেছে, পাইলট প্রজেক্ট হিসেবে হাইকোর্টের ইন্টারসেকশন থেকে আবদুল্লাহপুর পর্যন্ত ২৯টি ইন্টারসেকশনে দেশীয় প্রযুক্তির সিগন্যাল বাতি বসানোর কাজ হাতে নেয়া হয়েছে। প্রাথমিকভাবে দুই সিটি করপোরেশনের চারটি ক্রসিংয়ে সিগন্যালে বাতি লাগানোর কাজ শুরুর প্রস্তাব করা হয়েছে। বাংলামোটর, হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল, সোনারগাঁও ও ফার্মগেট ক্রসিংয়ে সিগন্যালে বাতি লাগানো হবে। সিটি করপোরেশন এক্ষেত্রে আর্থিক ব্যয় বহন করছে।

এতে সাপোর্ট দেবে বুয়েটের অভিজ্ঞরা। সমন্বয় করবে ডিটিসিএ। যেহেতু সড়কে কাজ করে ট্রাফিক পুলিশ, তাই দেশীয় সিগন্যালে বাতির নিয়ন্ত্রণ থাকবে। অচিরেই এর সুফল পাওয়া যাবে বলে ট্রাফিক পুলিশ আশাবাদী। পরবর্তীসময়ে শিক্ষা ভবন মোড়, কদম ফোয়ারা ও মৎস্য ভবন মোড়, শাহবাগ মোড়, কাকরাইল মসজিদ মোড় হয়ে মিন্টো রোডের মোড়ে বসবে সিগন্যাল বাতি। এরপর বিজয় সরণি, জাহাঙ্গীর গেট, মহাখালী, খিলক্ষেত, বিমানবন্দর হয়ে আবদুল্লাহপুর মোড় পর্যন্ত বসানো হবে।

এর আগে, বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে ২০০২-২০০৫ সালে ১৩ কোটি ৬০ লাখ এবং ২০১০-২০১৮ সালে ‘ক্লিন এয়ার অ্যান্ড সাসটেইনেবল এনভায়রনমেন্ট’ প্রকল্পের আওতায় ১১২ কোটি টাকা ব্যয়ে মোট ১৬৮টি ট্রাফিক সিগন্যাল বাতি বসানো হয় ঢাকায়। তবে রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে বাতিগুলোর প্রায় সবই নষ্ট। শুধু গুলশান-২ এ ট্রাফিক সিগন্যাল বাতি রয়েছে। এ পরিস্থিতিতে ট্রাফিক সিগন্যাল সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের। দীর্ঘক্ষণ হাতের ইশারা ও বাঁশি দিয়ে ট্রাফিক সিগন্যাল সামলান তারা। এতে সিগন্যাল অমান্যের প্রতিযোগিতা দেখা যায় চালকদের মধ্যে। বিগত সরকারের এসব প্রকল্পে অর্থের অপচয় ছাড়া কাজের কাজ কিছু হয়নি।

ট্রাফিক পুলিশের তথ্যমতে, ঢাকায় বর্তমানে শুধু একটি ইন্টারসেকশনে সিগন্যাল বাতি আছে। বাকি ১৫১টি ইন্টারসেকশনে বাতি নেই। দীর্ঘদিন ধরে ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা হাত উঁচিয়ে গাড়ি থামাচ্ছেন। এটা একটি অমানবিক এবং কায়িক পরিশ্রমের কাজ। এখান থেকে উত্তরণে ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগ বেশ কয়েক দফা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মিটিং করেছে। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নির্দেশে ইতোমধ্যে একটি পাইলট প্রজেক্ট হাতে নেওয়া হয়েছে।
বর্তমানে ট্রাফিক পক্ষ চলাকালীন এক হাজার শিক্ষার্থী সড়কে ট্রাফিক পুলিশের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছে। সড়কে যারা ট্রাফিকের কাজ করছে সব শিক্ষার্থীর জন্য সনদের ব্যবস্থা করা হবে। যাতে কর্মজীবনে সেই শিক্ষার্থী মূল্যায়িত হয়।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, এ প্রকল্প চালু হলে ‘অকাজে’ ব্যয় হওয়া কোটি কোটি টাকা সাশ্রয় হবে। এই সিগন্যাল বাতি দুইভাবে কাজ করবে। এটি ‘সেমি অটোমেটেড সিগন্যাল এইড’। একটা বাটনের (বোতাম) মাধ্যমে এই ব্যবস্থাকে ম্যানুয়াল আবার অটোমেটেড (স্বয়ংক্রিয়) করা যাবে। কম যানবাহন থাকলে নির্ধারিত সময়ের জন্য ‘অটোমেটেড মুডে’ চলবে। বেশি থাকলে ‘ম্যানুয়ালি’ সময় পরিবর্তন করে নেয়া যাবে। এ ব্যবস্থা সনাতন (ম্যানুয়াল) পদ্ধতিতে পরিচালিত হবে। অর্থাৎ সংকেত বাতি (লাল, সবুজ ও হলুদ) জ্বলা-নেভার বিষয় সনাতন পদ্ধতিতে নিয়ন্ত্রণ করা হবে। পরে ধাপে ধাপে এ পদ্ধতিকে স্বয়ংক্রিয় (অটোমেশন) করা হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

দেশীয় প্রযুক্তির ট্রাফিক সিগন্যাল বসছে রাজধানীর মোড়ে মোড়ে

সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৬:৪১:৫৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩ নভেম্বর ২০২৪

রাজধানীতে অনিয়ন্ত্রিত গাড়ি পার্কিং, ফুটপাত দখল, ট্রাফিক সিগন্যাল না মানাসহ নানা কারণে নিয়ন্ত্রণহীনভাবে বাড়ছে যানজট। বিভিন্ন সময় অনেক প্রযুক্তি প্রয়োগেও যানজট নিয়ন্ত্রণে আসেনি। এবার ঢাকার সড়কের মোড়ে মোড়ে বসানো হবে দেশীয় প্রযুক্তি সিগন্যাল বাতি।

জানা গেছে, ঢাকার ২৯ ইন্টারসেকশনে বসানো হবে দেশীয় প্রযুক্তির সিগন্যাল বাতি। দেশীয় এই ব্যবস্থা ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে পরিচালিত হবে। অর্থাৎ সংকেত বাতি (লাল, সবুজ ও হলুদ) জ্বলা-নেভার বিষয় ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে নিয়ন্ত্রণ করা হবে। এরপর ধাপে ধাপে এ পদ্ধতিকে অটোমেশনের দিকে উন্নীত হবে।

জানা গেছে, পাইলট প্রজেক্ট হিসেবে হাইকোর্টের ইন্টারসেকশন থেকে আবদুল্লাহপুর পর্যন্ত ২৯টি ইন্টারসেকশনে দেশীয় প্রযুক্তির সিগন্যাল বাতি বসানোর কাজ হাতে নেয়া হয়েছে। প্রাথমিকভাবে দুই সিটি করপোরেশনের চারটি ক্রসিংয়ে সিগন্যালে বাতি লাগানোর কাজ শুরুর প্রস্তাব করা হয়েছে। বাংলামোটর, হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল, সোনারগাঁও ও ফার্মগেট ক্রসিংয়ে সিগন্যালে বাতি লাগানো হবে। সিটি করপোরেশন এক্ষেত্রে আর্থিক ব্যয় বহন করছে।

এতে সাপোর্ট দেবে বুয়েটের অভিজ্ঞরা। সমন্বয় করবে ডিটিসিএ। যেহেতু সড়কে কাজ করে ট্রাফিক পুলিশ, তাই দেশীয় সিগন্যালে বাতির নিয়ন্ত্রণ থাকবে। অচিরেই এর সুফল পাওয়া যাবে বলে ট্রাফিক পুলিশ আশাবাদী। পরবর্তীসময়ে শিক্ষা ভবন মোড়, কদম ফোয়ারা ও মৎস্য ভবন মোড়, শাহবাগ মোড়, কাকরাইল মসজিদ মোড় হয়ে মিন্টো রোডের মোড়ে বসবে সিগন্যাল বাতি। এরপর বিজয় সরণি, জাহাঙ্গীর গেট, মহাখালী, খিলক্ষেত, বিমানবন্দর হয়ে আবদুল্লাহপুর মোড় পর্যন্ত বসানো হবে।

এর আগে, বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে ২০০২-২০০৫ সালে ১৩ কোটি ৬০ লাখ এবং ২০১০-২০১৮ সালে ‘ক্লিন এয়ার অ্যান্ড সাসটেইনেবল এনভায়রনমেন্ট’ প্রকল্পের আওতায় ১১২ কোটি টাকা ব্যয়ে মোট ১৬৮টি ট্রাফিক সিগন্যাল বাতি বসানো হয় ঢাকায়। তবে রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে বাতিগুলোর প্রায় সবই নষ্ট। শুধু গুলশান-২ এ ট্রাফিক সিগন্যাল বাতি রয়েছে। এ পরিস্থিতিতে ট্রাফিক সিগন্যাল সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের। দীর্ঘক্ষণ হাতের ইশারা ও বাঁশি দিয়ে ট্রাফিক সিগন্যাল সামলান তারা। এতে সিগন্যাল অমান্যের প্রতিযোগিতা দেখা যায় চালকদের মধ্যে। বিগত সরকারের এসব প্রকল্পে অর্থের অপচয় ছাড়া কাজের কাজ কিছু হয়নি।

ট্রাফিক পুলিশের তথ্যমতে, ঢাকায় বর্তমানে শুধু একটি ইন্টারসেকশনে সিগন্যাল বাতি আছে। বাকি ১৫১টি ইন্টারসেকশনে বাতি নেই। দীর্ঘদিন ধরে ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা হাত উঁচিয়ে গাড়ি থামাচ্ছেন। এটা একটি অমানবিক এবং কায়িক পরিশ্রমের কাজ। এখান থেকে উত্তরণে ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগ বেশ কয়েক দফা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মিটিং করেছে। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নির্দেশে ইতোমধ্যে একটি পাইলট প্রজেক্ট হাতে নেওয়া হয়েছে।
বর্তমানে ট্রাফিক পক্ষ চলাকালীন এক হাজার শিক্ষার্থী সড়কে ট্রাফিক পুলিশের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছে। সড়কে যারা ট্রাফিকের কাজ করছে সব শিক্ষার্থীর জন্য সনদের ব্যবস্থা করা হবে। যাতে কর্মজীবনে সেই শিক্ষার্থী মূল্যায়িত হয়।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, এ প্রকল্প চালু হলে ‘অকাজে’ ব্যয় হওয়া কোটি কোটি টাকা সাশ্রয় হবে। এই সিগন্যাল বাতি দুইভাবে কাজ করবে। এটি ‘সেমি অটোমেটেড সিগন্যাল এইড’। একটা বাটনের (বোতাম) মাধ্যমে এই ব্যবস্থাকে ম্যানুয়াল আবার অটোমেটেড (স্বয়ংক্রিয়) করা যাবে। কম যানবাহন থাকলে নির্ধারিত সময়ের জন্য ‘অটোমেটেড মুডে’ চলবে। বেশি থাকলে ‘ম্যানুয়ালি’ সময় পরিবর্তন করে নেয়া যাবে। এ ব্যবস্থা সনাতন (ম্যানুয়াল) পদ্ধতিতে পরিচালিত হবে। অর্থাৎ সংকেত বাতি (লাল, সবুজ ও হলুদ) জ্বলা-নেভার বিষয় সনাতন পদ্ধতিতে নিয়ন্ত্রণ করা হবে। পরে ধাপে ধাপে এ পদ্ধতিকে স্বয়ংক্রিয় (অটোমেশন) করা হবে।