সিলেটে অস্থিতিশীল চালের বাজার
- সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৫:৫৫:৪৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ২ নভেম্বর ২০২৪ ১০ বার পড়া হয়েছে
সিলেটে চালের বাজারে অস্থিরতা বিরাজ করছে। সপ্তাহের ব্যবধানে সব ধরনের চালের দাম বেড়েছে। ৫০ কেজির বস্তায় ধরনভেদে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা পর্যন্ত দাম বেড়েছে। ব্যবসায়ীদের দাবি, চাহিদার তুলনায় বাজারে চালের সরবরাহ কম হওয়ায় দাম বেড়েছে। বিগত ১ মাসে দেশের অস্থিতিশীল পরিবেশের কারণে এ সরবরাহ বিঘিœত হচ্ছে বলেও দাবি করছেন তারা।
সিলেটের সবচেয়ে বড় পাইকারি আড়ত কালীঘাটে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এক সপ্তাহ আগে ৫০ কেজির প্রতি বস্তা মিনিকেট আতপ ৩১০০, মিনিকেট সেদ্ধ ২৯৫০, জিরা সেদ্ধ ৩৩০০, মালা ২৮০০ ও কাটারিভোগ ৩৩৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে মিনিকেট আতপে ২০০, মিনিকেট সেদ্ধে ১৯০, জিরা সেদ্ধে ১৮০, মালায় ১৮০ ও কাটারি ভোগে ২৬০ টাকা বস্তাপ্রতি বেড়েছে। খুচরা বাজারেও কেজি প্রতি চালের দাম বেড়েছে ৪-৫ টাকা। চালের দাম বৃদ্ধির ফলে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে নিম্ন আয়ের মানুষ।
এদিকে শুল্ক প্রত্যাহারের পরও ‘সংবেদনশীল পণ্য’ চালের বাজারে অস্থিরতা বিরাজ করছে। গত এক মাসের ব্যবধানে চালের দাম বস্তা প্রতি ২০০ থেকে ২৫০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। পাইকারী ও খুচরা বাজারের চিত্র প্রায় একই। শীঘ্রই কোন সুখবর দেখছেন না ব্যবসায়ীরা।
নতুন করে চালের মূল্যবৃদ্ধিতে সংসার সামলাতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে সাধারণ মানুষ। অসহায়ত্ব প্রকাশ করছেন অনেকে। এমন পরিস্থিতিতে বাজার স্থিতিশীল ও নিয়ন্ত্রণে রাখতে চালের মজুত বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে চাল আমদানিতে শুল্ক পুরোপুরি তুলে নিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) এনবিআর এ প্রজ্ঞাপন জারি করে। প্রজ্ঞাপন জারির পর থেকেই এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়েছে। তবে সিদ্ধান্ত কার্যকর হলেও বাজারে কোন প্রভাব পড়ছেনা। সিলেটের বাজার ঘুরে এমনই চিত্র দেখা গেলো।
একাধিক ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেন,লাইসেন্স ছাড়াই যত্র-তত্র অবৈধ ভাবে ধান ও চাল মজুতে মেতে উঠেছে একটি অসাধুচক্র। একই সঙ্গে বেশ কিছু মিলমালিক কমদামে কেনা ধান দীর্ঘ দিন ধরে মজুত রেখেছেন। এতে বাজারে কমেছে ধানের সরবরাহ। যার প্রভাবে সৃষ্ট কৃত্রিম সংকটে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে চালের দাম।
গরিব মানুষের খাদ্য ব্যয়ের একটি বড় অংশ যায় চালের পেছনে। নতুন করে চালের মূল্যবৃদ্ধিতে সংসার সামলাতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে সাধারণ মানুষ। নিত্যপণ্য কিনতে আসা শাকিল বলেন, বাজারে কারও নিয়ন্ত্রণ নেই। সবাই সবার মতো করে দেশ চালাতে ব্যস্ত। কিন্তু বিক্রেতারা এখানে পণ্যের দাম বাড়ানোর উৎসব করছে। প্রতিদিন কিছু না কিছু পণ্যের দাম বাড়িয়ে ক্রেতাকে নাজেহাল করছে। এখন বেশি দামে চালও কিনতে হচ্ছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন সংস্থা বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন (বিটিটিসি) সার্বিক পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে সরকারের কাছে দেওয়া একটি প্রতিবেদনে বলেছে, চাল সরকারের জন্য একটি সংবেদনশীল পণ্য। গরিব মানুষের খাদ্য ব্যয়ের একটি বড় অংশ যায় চালের পেছনে। চালের দাম এমন সময় বাড়ছে, যখন ভোজ্যতেল, চিনি, সবজি, ডিম, মুরগির মাংসসহ প্রায় সব নিত্যপণ্যের দাম চড়া। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুযায়ী, বছরে দেশে চার কোটি টনের মতো চাল উৎপাদিত হয়। এর মধ্যে দেড় কোটি টনের মতো হয় আমনে। সপ্তাহ তিনেক পর থেকে আমন চাল বাজারে আসা শুরু করতে পারে।