ঢাকা ০৩:২৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৪, ১৬ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঘরে তালা দেখে স্ত্রীকে ফোন, অতপর…

শহিদুল ইসলাম দইচ, যশোর
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ০১:২০:০৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৪ ১০ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ঘরের তালা ভেঙে প্রবেশের পর স্বজনরা দেখলেন শাহানারা বেগম সানার (৫৫) গলাকাটা রক্তাক্ত মরদেহ ঘরের মেঝেতে পড়ে রয়েছে। পরে খবর পেয়ে যশোর কোতোয়ালি থানার ওসি আব্দুর রাজ্জাকসহ পুলিশের টিম ঘটনাস্থলে আসে।লাশের ময়নাতদন্তের জন্যে যশোর জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন।

ঘটনাটি যশোর শহরতলীর শেখহাটি আদর্শপাড়া এলাকার। নিহত শাহানারা বেগমের স্বামীর নাম আতিয়ার রহমান। তিনি একজন ইজিবাইক চালক।

হত্যাকাণ্ডের সাথে তাদের বাড়ির ভাড়াটিয়া বাবলা ও তার মামাতো ভাই সুমন সম্পৃক্ত থাকতে পারে বলে পুলিশ ধারণা করছে। তারা পলাতক রয়েছে।

আতিয়ার রহমান, তার ছেলে সোহেল রানা এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বুধবার (৩০ অক্টোবর) বিকেল ৩টার দিকে আতিয়ার রহমান তার ইজিবাইক নিয়ে বের হন। রাত ১০টার দিকে বাড়িতে ফিরে ঘরে তালা দেখে স্ত্রীর ফোন দেন। কিন্তু সেটির সুইচড অফ ছিল। এরপর বাবা ও ছেলে তাকে খুঁজতে বের হন। স্বজনদের কাছে ফোন করেন, কেউই তার সন্ধান দিতে পারেনি।

বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) সকালে তারা ঘরের তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে মেঝেতে সানার গলা ও বুকের পাশে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কাটা রক্তাক্ত মরদেহ দেখতে পান। এরপর পুলিশে খবর দেওয়া হয়। আতিয়ার-সানা দম্পতির তিন ছেলে-মেয়ে। তারা বিয়েশাদি করে বাইরে থাকে। সোহেল রানা একই এলাকায় শ্বশুরবাড়িতে থাকেন।

আতিয়ার রহমান জানান, মাস তিনেক আগে তাদের বাড়ির দুটি রুম ভাড়া নেয় বাবলা। তারা স্বামী, স্ত্রী ও বাচ্চা নিয়ে থাকতো। এক মাস আগে তাদের বাসা ছেড়ে দিতে বলা হয়। কেননা বাবলা আগে ইজিবাইক চালালেও পরে নেশা-ভাঙ করতো। কিন্তু তারা ‍‍আজ যাই-কাল যাই বলে সময়ক্ষেপণ করছিল। চার-পাঁচদিন আগে তার স্ত্রী (বাবলার) ও বাচ্চারা চলে যায়। তবে, বাবলা ও তার মামাতো ভাই সুমন বাড়িতে ছিল। বুধবার সকালে বাবলার সাথে সানার কথা কাটাকাটিও হয়। এরপর তিনি বিকেলে ইজিবাইক নিয়ে বের হয়ে যান।

স্ত্রীর গলায় থাকা সোনার চেইন, কানের দুল ও মোবাইলফোনের জন্যে তারা তাকে খুন করে সেগুলো নিয়ে পালিয়ে গেছে- বলে জানান আতিয়ার রহমান।

স্থানীয়রা জানায়, বাবলা ও সুমনের বাড়ি যশোর সদরের তালবাড়িয়া গ্রামে। বাবলার বাবার নাম হোসেন আলী শেখ, সুমনের বাবার নাম জানা যায়নি। তবে, তালবাড়ীয়া এলাকার বাসিন্দা ও ফটো সাংবাদিক শামসুজ্জামান স্বজন জানিয়েছেন, হোসেন আলী শেখের শ্বশুরবাড়ি তালবাড়ীয়ায়। এক সময় তারা এখানে ছিলেন। হোসেন আলীর বাড়ি পাশের গ্রাম বড় গোপালপুরে।

এদিকে, হত্যাকাণ্ডের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান যশোর কোতোয়ালি থানার ওসি আব্দুর রাজ্জাক। তিনি বলেন, নিহতের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে আমরা ধারণা করছি বাড়ির ভাড়াটিয়া বাবলা ও তার ভাই সুমন এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ত। তাদের মোবাইলফোন ট্রাকিং করা হচ্ছে। তাদের আটক করা গেলে হত্যার মূল কারণ উদ্ঘাটন সম্ভব হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

ঘরে তালা দেখে স্ত্রীকে ফোন, অতপর…

সংবাদ প্রকাশের সময় : ০১:২০:০৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৪

ঘরের তালা ভেঙে প্রবেশের পর স্বজনরা দেখলেন শাহানারা বেগম সানার (৫৫) গলাকাটা রক্তাক্ত মরদেহ ঘরের মেঝেতে পড়ে রয়েছে। পরে খবর পেয়ে যশোর কোতোয়ালি থানার ওসি আব্দুর রাজ্জাকসহ পুলিশের টিম ঘটনাস্থলে আসে।লাশের ময়নাতদন্তের জন্যে যশোর জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন।

ঘটনাটি যশোর শহরতলীর শেখহাটি আদর্শপাড়া এলাকার। নিহত শাহানারা বেগমের স্বামীর নাম আতিয়ার রহমান। তিনি একজন ইজিবাইক চালক।

হত্যাকাণ্ডের সাথে তাদের বাড়ির ভাড়াটিয়া বাবলা ও তার মামাতো ভাই সুমন সম্পৃক্ত থাকতে পারে বলে পুলিশ ধারণা করছে। তারা পলাতক রয়েছে।

আতিয়ার রহমান, তার ছেলে সোহেল রানা এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বুধবার (৩০ অক্টোবর) বিকেল ৩টার দিকে আতিয়ার রহমান তার ইজিবাইক নিয়ে বের হন। রাত ১০টার দিকে বাড়িতে ফিরে ঘরে তালা দেখে স্ত্রীর ফোন দেন। কিন্তু সেটির সুইচড অফ ছিল। এরপর বাবা ও ছেলে তাকে খুঁজতে বের হন। স্বজনদের কাছে ফোন করেন, কেউই তার সন্ধান দিতে পারেনি।

বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) সকালে তারা ঘরের তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে মেঝেতে সানার গলা ও বুকের পাশে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কাটা রক্তাক্ত মরদেহ দেখতে পান। এরপর পুলিশে খবর দেওয়া হয়। আতিয়ার-সানা দম্পতির তিন ছেলে-মেয়ে। তারা বিয়েশাদি করে বাইরে থাকে। সোহেল রানা একই এলাকায় শ্বশুরবাড়িতে থাকেন।

আতিয়ার রহমান জানান, মাস তিনেক আগে তাদের বাড়ির দুটি রুম ভাড়া নেয় বাবলা। তারা স্বামী, স্ত্রী ও বাচ্চা নিয়ে থাকতো। এক মাস আগে তাদের বাসা ছেড়ে দিতে বলা হয়। কেননা বাবলা আগে ইজিবাইক চালালেও পরে নেশা-ভাঙ করতো। কিন্তু তারা ‍‍আজ যাই-কাল যাই বলে সময়ক্ষেপণ করছিল। চার-পাঁচদিন আগে তার স্ত্রী (বাবলার) ও বাচ্চারা চলে যায়। তবে, বাবলা ও তার মামাতো ভাই সুমন বাড়িতে ছিল। বুধবার সকালে বাবলার সাথে সানার কথা কাটাকাটিও হয়। এরপর তিনি বিকেলে ইজিবাইক নিয়ে বের হয়ে যান।

স্ত্রীর গলায় থাকা সোনার চেইন, কানের দুল ও মোবাইলফোনের জন্যে তারা তাকে খুন করে সেগুলো নিয়ে পালিয়ে গেছে- বলে জানান আতিয়ার রহমান।

স্থানীয়রা জানায়, বাবলা ও সুমনের বাড়ি যশোর সদরের তালবাড়িয়া গ্রামে। বাবলার বাবার নাম হোসেন আলী শেখ, সুমনের বাবার নাম জানা যায়নি। তবে, তালবাড়ীয়া এলাকার বাসিন্দা ও ফটো সাংবাদিক শামসুজ্জামান স্বজন জানিয়েছেন, হোসেন আলী শেখের শ্বশুরবাড়ি তালবাড়ীয়ায়। এক সময় তারা এখানে ছিলেন। হোসেন আলীর বাড়ি পাশের গ্রাম বড় গোপালপুরে।

এদিকে, হত্যাকাণ্ডের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান যশোর কোতোয়ালি থানার ওসি আব্দুর রাজ্জাক। তিনি বলেন, নিহতের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে আমরা ধারণা করছি বাড়ির ভাড়াটিয়া বাবলা ও তার ভাই সুমন এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ত। তাদের মোবাইলফোন ট্রাকিং করা হচ্ছে। তাদের আটক করা গেলে হত্যার মূল কারণ উদ্ঘাটন সম্ভব হবে।