বিনিয়োগ বাড়াতে ব্যবসায়ীরা আস্থা পাচ্ছেন না
- সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৩:৪০:৫৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৪ ১৯ বার পড়া হয়েছে
টিকে থাকার লড়াইয়ে এবার ব্যাংক খাতে ঋণের সুদের উচ্চহার নিয়ে প্রশ্ন তুললেন ব্যবসায়ীরা। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে আস্থার ঘাটতিতেও রয়েছেন তাঁরা। ব্যবসায়ীদের মতে, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সরকারের উচিত বাজার ব্যবস্থাপনা ঠিক করাসহ অন্য বিষয়গুলোতে মনোযোগ দেওয়া। অথচ সুদের হার বেশি রেখে ব্যবসায়ীদের ঝুঁকিতে ফেলা হচ্ছে, যে ব্যবসায়ীরা বর্তমানেও গ্যাস-বিদ্যুতের সংকটে আছেন।আগামী মার্চ মাসের পর ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ বাড়বে বলেও ব্যবসায়ীরা আশঙ্কা করেন।
ব্যবসায়ীরা বলেছেন, সরকারের পক্ষে ৫ শতাংশ চাকরি দেওয়া সম্ভব। আর বেসরকারি খাত অসুবিধায় থাকলে বিনিয়োগ বাড়বে না, আর বিনিয়োগ না বাড়লে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে না।
ঢাকার ইস্কাটনের বিজ মিলনায়তনে গত শনিবার সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজের (সিজিএস) আয়োজনে অনুষ্ঠিত ‘গণতান্ত্রিক পুনর্গঠনের সংলাপ-অর্থনৈতিক সংলাপ প্রসঙ্গ’ শীর্ষক সংলাপে ব্যবসায়ীরা এসব কথা বলেন।
এতে বিশেষ বক্তা ছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের জাতীয় শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রধান ও সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
সিজিএসের চেয়ার মুনিরা খানের সভাপতিত্বে পুরো অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক জিল্লুর রহমান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষার্থী সাদিক মাহবুব ইসলাম ও বর্তমান শিক্ষার্থী সুপ্রভা শোভা জামানকে দিয়ে সংলাপ শুরু হয়। তাঁরা কোটা সংস্কার ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে যুক্ত ছিলেন।
যা বললেন দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য :চুরির ঘটনায়ও যদি মামলা করার প্রয়োজন পড়ত, কোনো থানা নিত না। চুরির মামলা নেওয়ার জন্য এলাকার নেতাদের অনুমতি নিতে হতো। দেশটা এমন পর্যায়ে চলে গিয়েছিল বলে মন্তব্য করেন দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
তিনি বলেন, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিকল করে দেওয়া হয়েছিল।
দেবপ্রিয় বলেন, ‘আপনাদের কথা শুনে মনে হলো দেশে একটি স্বাভাবিক সরকার বিদ্যমান রয়েছে। মানুষের পুঞ্জীভূত ক্ষোভের পর একটি আন্দোলনের মুখে সরকার এসেছে। এটা কোনো স্বাভাবিক সরকার নয়, যার বয়স তিন মাসও হয়নি। রাষ্ট্রযন্ত্রের একটা ছেদ হয়েছে, যে কারণে নতুন প্রত্যাশা তৈরি হয়েছে। একটা ভিন্নতর পরিস্থিতিতে সরকার পরিচালিত হচ্ছে, কারও আলোচনায় এই স্বীকৃতিটাও দেখা গেল না।’
আগের সরকারের বিভিন্ন কাজের সমালোচনা করে দেবপ্রিয় বলেন, ‘জাতীয় আয় নিয়ে খেলাধুলা করা হয়েছে, মূল্যস্ফীতির তথ্য বিকৃত করা হয়েছে, রপ্তানি আয়ের পার্থক্যের কারণে লেনদেনের ভারসাম্যে সমস্যা তৈরি করা হয়েছে। আর বিকল করে দেওয়া হয়েছে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে।’
দেবপ্রিয় বলেন, ‘সবাই সংস্কার নিয়ে কথা বলছি। কিন্তু গরিব মানুষের কথা ভাবছি না। ভূমিহীন কৃষকের কী হবে, পোশাককর্মীদের মজুরি কত হবে, এসব নিয়েও ভাবতে হবে। আর প্রতিমুহূর্তে সবার কাছ থেকে জবাবদিহি চাইতে হবে, নইলে হবে না। দ্রব্যমূল্য নিয়ে অনেক কথা হচ্ছে। সরকার বেশ কিছু উদ্যোগ ও পদক্ষেপ নিয়েছে। এখন সুফল না এলেও সামনে হয়তো আসবে।’
দেবপ্রিয় আরও বলেন, ‘তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিতে হবে, তাকে তুলে নিতে হবে—এসব চলছে। কিন্তু রাজনৈতিক অধিকার ক্ষুণ্ন করার অর্থনৈতিক তাৎপর্য আছে। কারও রাজনৈতিক অধিকার না থাকলে তার অর্থনৈতিক অধিকার কমে যায়।