ঢাকা ০৩:২৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দানা’র প্রভাবে উত্তাল সাগর, উৎকন্ঠায় সাগরপাড়ের মানুষ

উত্তম কুমার হাওলাদার, পটুয়াখালী
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৬:১৪:২৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৪ ৩৮ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ঘূর্ণিঝড় দানা’র প্রভাবে কুয়াকাটা সংলগ্ন বঙ্গোপসাগর উত্তাল হয়ে উঠেছে। বড় বড় ঢেউ আছড়ে পড়ছে তীরে। বুধবার (২৩ অক্টোবর) সকাল থেকে আকাশ ঘন মেঘাচ্ছন্ন রয়েছে। অনেক স্থানে গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি হয়েছে। বাতাসের চাপ কিছুটা বেড়েছে। নদ-নদীর পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পেয়েছে।

নিরাপদ প্রজনন ও মা ইলিশ রক্ষার লক্ষ্যে নদী ও সাগরে মাছ ধরার উপর নিষেধাজ্ঞা চলমান থাকায় গভীরে অবস্থানরত অধিকাংশ মাছধরা ট্রলার তীরে রয়েছে বলে জানিয়েছে মৎস্য অফিস। তবে ঘূর্ণিঝড়ের আগাম আবহাওয়া বার্তা শুনে ফের দুশ্চিন্তায় কপালে ভাজ পড়েছে সাগর পাড়ের মানুষের মাঝে। তারা ঝড়ের কথা শুনিলেই চমকে উঠে।

স্থানীয়রা জানান, ২০০৯ সালের ২৫ মে ঘূর্ণিঝড় আইলা উপক‚লে আঘাত হেনেছিল। ২০১৭ সালের ৩০ মে ঘূর্ণিঝড় মোরা, ২০১৯ সালের ২ মে ফণী, ২০২০ সালের ১৮ মে আফান, ২০২১ সালের ২৬ মে ইয়াস, ২০২২ সালের ৭ মে অশনি একই বছরে সিত্রাং এবং ২০২৩ সালের ১৪ মোখা আঘাত হেনেছিল। সম্প্রতি ঘূর্ণিঝড় রেমাল’র ক্ষতি উপকূলের মানুষ এখনো পুরোপুরি কাটিয়ে উঠতে পারেনি। নিজেদের রক্ষা করতে পারলেও বসতঘর, ফসলি জমি, গবাদি পশু, মাছের ঘের ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। প্রতি বছর নিয়মিতভাবেই প্রাকৃতিক দুর্যোগ আঁচড়ে পড়ছে উপকূলে।

এবার উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় দানা। তাই উৎকন্ঠায় রয়েছে সাগপাড়ের মানুষ। এখন আবারও ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার শঙ্কায় রয়েছেন তারা।

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড় দানা’য় রূপান্তরিত হলেও এর প্রভাব পরেনি কলাপাড়ায়। স্বাভাবিক রয়েছে পায়রা বন্দরের কার্যক্রম। যদিও আবহাওয়া অফিস পায়রা বন্দরে দুই নম্বর দূরবর্তী সতর্কতা সংকেত জারি করেছে। ঘূর্ণিঝড়টি বর্তমানে পায়রা সমুন্দ্র বন্দর থেকে ৬৪৫ কিলোমিটার দক্ষিণ দক্ষিণ পূর্বে অবস্থান করছে বলে আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে।

এদিকে ঝড় আসবে এ আশঙ্কায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে কলাপাড়ার উপজেলার নীলগঞ্জ ও ধানখালী ইউনিয়নের অন্তত: ১৫ টি গ্রামের মানুষ। এই দুই ইউনিয়নে বেরিবাঁধ ভাঙ্গা অবস্থায় থাকায় ঝড়ে পানির উচ্চতা বাড়লে ওইসব গ্রামের মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে। এছাড়া আশঙ্কায় রয়েছে কৃষকরাও। ঘূর্ণিঝড় দানা’র প্রভাবে বুধবার সকাল থেকে উপক‚লীয় এলাকায় বিরাজ করছে গুমোট পরিবেশ। কালো মেঘে ঢেকে আছে কলাপাড়া ও কুয়াকাটার আকাশ।

কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশ রিজিওনের দায়িত্বরত পুলিশ সুপার আবুল কালাম আজাদ বাংলা টাইমসকে বলেন, ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাবে সাগর উত্তাল হয়ে উঠেছে। তাই ট্যুরিস্ট পুলিশের পক্ষ থেকে পর্যটকদের নিরাপদ স্থানে সরে যেতে মাইকিং করা হচ্ছে।

এদিকে, ঘূর্ণিঝড় দানা মোকাবিলায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফিন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

দানা’র প্রভাবে উত্তাল সাগর, উৎকন্ঠায় সাগরপাড়ের মানুষ

সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৬:১৪:২৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৪

ঘূর্ণিঝড় দানা’র প্রভাবে কুয়াকাটা সংলগ্ন বঙ্গোপসাগর উত্তাল হয়ে উঠেছে। বড় বড় ঢেউ আছড়ে পড়ছে তীরে। বুধবার (২৩ অক্টোবর) সকাল থেকে আকাশ ঘন মেঘাচ্ছন্ন রয়েছে। অনেক স্থানে গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি হয়েছে। বাতাসের চাপ কিছুটা বেড়েছে। নদ-নদীর পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পেয়েছে।

নিরাপদ প্রজনন ও মা ইলিশ রক্ষার লক্ষ্যে নদী ও সাগরে মাছ ধরার উপর নিষেধাজ্ঞা চলমান থাকায় গভীরে অবস্থানরত অধিকাংশ মাছধরা ট্রলার তীরে রয়েছে বলে জানিয়েছে মৎস্য অফিস। তবে ঘূর্ণিঝড়ের আগাম আবহাওয়া বার্তা শুনে ফের দুশ্চিন্তায় কপালে ভাজ পড়েছে সাগর পাড়ের মানুষের মাঝে। তারা ঝড়ের কথা শুনিলেই চমকে উঠে।

স্থানীয়রা জানান, ২০০৯ সালের ২৫ মে ঘূর্ণিঝড় আইলা উপক‚লে আঘাত হেনেছিল। ২০১৭ সালের ৩০ মে ঘূর্ণিঝড় মোরা, ২০১৯ সালের ২ মে ফণী, ২০২০ সালের ১৮ মে আফান, ২০২১ সালের ২৬ মে ইয়াস, ২০২২ সালের ৭ মে অশনি একই বছরে সিত্রাং এবং ২০২৩ সালের ১৪ মোখা আঘাত হেনেছিল। সম্প্রতি ঘূর্ণিঝড় রেমাল’র ক্ষতি উপকূলের মানুষ এখনো পুরোপুরি কাটিয়ে উঠতে পারেনি। নিজেদের রক্ষা করতে পারলেও বসতঘর, ফসলি জমি, গবাদি পশু, মাছের ঘের ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। প্রতি বছর নিয়মিতভাবেই প্রাকৃতিক দুর্যোগ আঁচড়ে পড়ছে উপকূলে।

এবার উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় দানা। তাই উৎকন্ঠায় রয়েছে সাগপাড়ের মানুষ। এখন আবারও ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার শঙ্কায় রয়েছেন তারা।

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড় দানা’য় রূপান্তরিত হলেও এর প্রভাব পরেনি কলাপাড়ায়। স্বাভাবিক রয়েছে পায়রা বন্দরের কার্যক্রম। যদিও আবহাওয়া অফিস পায়রা বন্দরে দুই নম্বর দূরবর্তী সতর্কতা সংকেত জারি করেছে। ঘূর্ণিঝড়টি বর্তমানে পায়রা সমুন্দ্র বন্দর থেকে ৬৪৫ কিলোমিটার দক্ষিণ দক্ষিণ পূর্বে অবস্থান করছে বলে আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে।

এদিকে ঝড় আসবে এ আশঙ্কায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে কলাপাড়ার উপজেলার নীলগঞ্জ ও ধানখালী ইউনিয়নের অন্তত: ১৫ টি গ্রামের মানুষ। এই দুই ইউনিয়নে বেরিবাঁধ ভাঙ্গা অবস্থায় থাকায় ঝড়ে পানির উচ্চতা বাড়লে ওইসব গ্রামের মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে। এছাড়া আশঙ্কায় রয়েছে কৃষকরাও। ঘূর্ণিঝড় দানা’র প্রভাবে বুধবার সকাল থেকে উপক‚লীয় এলাকায় বিরাজ করছে গুমোট পরিবেশ। কালো মেঘে ঢেকে আছে কলাপাড়া ও কুয়াকাটার আকাশ।

কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশ রিজিওনের দায়িত্বরত পুলিশ সুপার আবুল কালাম আজাদ বাংলা টাইমসকে বলেন, ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাবে সাগর উত্তাল হয়ে উঠেছে। তাই ট্যুরিস্ট পুলিশের পক্ষ থেকে পর্যটকদের নিরাপদ স্থানে সরে যেতে মাইকিং করা হচ্ছে।

এদিকে, ঘূর্ণিঝড় দানা মোকাবিলায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফিন।