৯ মাসে সড়কে ঝরল ৭২৯ শিশুর প্রাণ
- সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৫:৪২:২১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ অক্টোবর ২০২৪ ৩৩ বার পড়া হয়েছে
চলতি বছরের ৯ মাসে সারা দেশে ৫৪৮৫টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় নিহত হয়েছে ৫ হাজার ৫৯৮ জন। আর আহত ৯ হাজার ৬০১ জন। নিহতের মধ্যে নারী ৬৭৭ জন ও শিশু ৭২৯ জন।
একই সময়ে ২ হাজার ৪১টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছে এক হাজার ৯২৪ জন। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার হার ৩৭.২১ শতাংশ। দুর্ঘটনায় ১১২১ জন পথচারী নিহত হয়েছে। যানবাহনের চালক ও সহকারী নিহত হয়েছে ৬৮৮ জন।
একই সময়ে ৮৩টি নৌ-দুর্ঘটনা ঘটেছে। এসব দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছে ১২৪ জন। আহত হয়েছে ১২৫ জন। এছাড়া ১৯ জন নিখোঁজ রয়েছে। ২৪৩টি রেলপথ দুর্ঘটনায় ২২৭ জন নিহত ও ২২৩ জন আহত হয়েছে।
রোববার (২০ অক্টোবর) রোড সেফটি ফাউন্ডেশন এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
দুর্ঘটনার যানবাহনভিত্তিক নিহতের চিত্র: দুর্ঘটনায় যানবাহনভিত্তিক নিহতের পরিসংখ্যানে দেখা যায়- মোটরসাইকেল চালক ও আরোহী ১৯২৪ জন, বাস যাত্রী ২৯৩ জন, পণ্যবাহী যানবাহনের আরোহী (ট্রাক-পিকআপ-কাভার্ডভ্যান-ট্রাক্টর-ট্রলি-লরি ইত্যাদি) ৪২০ জন, প্রাইভেটকার-মাইক্রোবাস-অ্যাম্বুলেন্স-জীপ আরোহী ২৯৫ জন, থ্রি-হুইলার যাত্রী (সিএনজি-ইজিবাইক-অটোরিকশা-অটোভ্যান ইত্যাদি) ১০৯৭ জন, স্থানীয়ভাবে তৈরি যানবাহনের যাত্রী (নসিমন-করিমন-ভটভটি-আলমসাধু-মাহিন্দ্র-টমটম) ২৭৮ জন এবং বাইসাইকেল-রিকশা আরোহী ১৭০ জন নিহত হয়েছে।
দুর্ঘটনা সংঘটিত সড়কের ধরন: রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ বলছে, দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ১৮৪৯টি জাতীয় মহাসড়কে, ২১৩৪টি আঞ্চলিক সড়কে, ৭৭১টি গ্রামীণ সড়কে, ৬৭০টি শহরের সড়কে এবং অন্যান্য স্থানে ৬১ টি সংঘটিত হয়েছে।
দুর্ঘটনার ধরন: দুর্ঘটনাসমূহের ১২০৪টি মুখোমুখি সংঘর্ষ, ২৩৬৯ টি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে, ১১৪৮টি পথচারীকে চাপা/ধাক্কা দেয়া, ৬৪৯টি যানবাহনের পেছনে আঘাত করা এবং ১১৫টি অন্যান্য কারণে ঘটেছে।
দুর্ঘটনায় সম্পৃক্ত যানবাহন: দুর্ঘটনায় সম্পৃক্ত যানবাহনের মধ্যে পণ্যবাহী যানবাহন (ট্রাক-পিকআপ-কাভার্ডভ্যান-ড্রামট্রাক ট্রাক্টর-ট্রলি-লরি তেলবাহী ট্যাংকার-বিদ্যুতের খুঁটিবাহী ট্রাক-সিটি করপোরেশনের ময়লাবাহী ট্রাক ইত্যাদি) ২৩.১৪ শতাংশ, যাত্রীবাহী বাস ১০.২৫ শতাংশ, মাইক্রোবাস-প্রাইভেটকার-অ্যাম্বুলেন্স-জীপ ৪.৭৬ শতাংশ, মোটরবাইক ২০.৭৫ শতাংশ, থ্রি-হুইলার (ইজিবাইক-সিএনজি-অটোরিকশা-অটোভ্যান ইত্যাদি) ১৬.৪৯ শতাংশ, স্থানীয়ভাবে তৈরি যানবাহন (নসিমন-করিমন-ভটভটি-মাহিন্দ্র-টমটম) ৫.৯১ শতাংশ, বাইসাইকেল-রিকশা ২.২০ শতাংশ এবং অজ্ঞাত যানবাহন ১৬.৪৬ শতাংশ।
দুর্ঘটনায় সম্পৃক্ত যানবাহনের সংখ্যা: দুর্ঘটনায় সম্পৃক্ত যানবাহনের সংখ্যা ১০,৬৭৯টি। বাস ১০৯৫, পণ্যবাহী যানবাহন (ট্রাক-কাভার্ডভ্যান-পিকআপ-ট্রলি-লরি-ট্রাক্টর-ড্রামট্রাক-সিটি করপোরেশনের ময়লাবাহী ট্রাক ইত্যাদি) ২৪৭২, মাইক্রোবাস-প্রাইভেটকার-অ্যাম্বুলেন্স-জীপ ৫০৯, মোটরসাইকেল ২২১৬, থ্রি-হুইলার ১৭৬১ (ইজিবাইক-সিএনজি-অটোরিকশা-অটোভ্যান-লেগুনা), স্থানীয়ভাবে তৈরি যানবাহন ৬৩২ (নসিমন-ভটভটি-আলমসাধু-মাহিন্দ্র-টমটম ইত্যাদি), বাইসাইকেল রিকশা ২৩৬ এবং অজ্ঞাত গাড়ি ১৭৫৮টি।
দুর্ঘটনার সময় বিশ্লেষণ: সময় বিশ্লেষণে দেখা যায়, দুর্ঘটনাসমূহ ঘটেছে ভোরে ৩১০টি (৫.৬৫%), সকালে ১৪৬৫টি (২৬.৭০%), দুপুরে ১১০২টি (২০.০৯%), বিকালে ৮৬৫টি (১৫.৭৭%), সন্ধ্যায় ৫২৪টি (৯.৫৫%) এবং রাতে ১২১৯টি (২২.২২%)।
দুর্ঘটনার বিভাগওয়ারী পরিসংখ্যান: দুর্ঘটনার বিভাগওয়ারী পরিসংখ্যান বলছে, ঢাকা বিভাগে দুর্ঘটনা ২১.৩৬%, প্রাণহানি ২৪.৩৬%, রাজশাহী বিভাগে দুর্ঘটনা ১৪.৮৭%, প্রাণহানি ১৩.৮৪%, চট্টগ্রাম বিভাগে দুর্ঘটনা ১৯.১০%, প্রাণহানি ২০.৪৮%, খুলনা বিভাগে দুর্ঘটনা ১৩.২৭%, প্রাণহানি ১২.৬৮%, বরিশাল বিভাগে দুর্ঘটনা ৬.৪৫%, প্রাণহানি ৬.১০%, সিলেট বিভাগে দুর্ঘটনা ৫.৮১%, প্রাণহানি ৫.৩৪%, রংপুর বিভাগে দুর্ঘটনা ১০.৯৩%, প্রাণহানি ১০.০৭% এবং ময়মনসিংহ বিভাগে দুর্ঘটনা ৮.১৬%, প্রাণহানি ৭.০৭% ঘটেছে।
ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটেছে। ১১৭২টি দুর্ঘটনায় ১৩৬৪ জন নিহত হয়েছেন। সিলেট বিভাগে সবচেয়ে কম ৩১৯টি দুর্ঘটনায় ২৯৯ জন নিহত হয়েছেন।