সাবেক মন্ত্রী রাজ্জাক ও টিটুর নামে হত্যা মামলা
- সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৬:৪৯:৪২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৯ অগাস্ট ২০২৪ ২২৩ বার পড়া হয়েছে
টাঙ্গাইলে ছাত্র আন্দোলনের বিজয় মিছিলে হামলার ঘটনায় মারুফ মিয়া (১৪) নামের এক স্কুলছাত্র নিহতের ঘটনায় সাবেক কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক ও সাবেক বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটুর বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের ৫৬ জনকে আসামি করা হয়েছে।
এছাড়াও অজ্ঞাতনামা আরও ১৫০-২০০ জনকে হত্যা মামলার আসামি করা হয়েছে। রবিবার (১৮ আগস্ট) রাতে টাঙ্গাইল সদর মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করেন নিহত মারুফের মা মোর্শেদা। বিষয়টি নিশ্চিত করেন সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লোকমান হোসেন।
জানা যায়, গত (৫ আগস্ট) সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার খবর পেয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা শহরে বিজয় মিছিল বের করে। মিছিলটি পৌর শহরের মেইন রোড সিটি ব্যাংক মোড় এলাকায় পৌঁছলে উল্লেখিত ও অজ্ঞাতনামা আসামিরা পরিকল্পিতভাবে অস্ত্র-সস্ত্র নিয়ে আনন্দ মিছিলে অতর্কিতভাবে হামলা করে মিছিলটি ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এক পার্যায়ে মারুক বাঁচার জন্য রাস্তার পাশে সিটি ব্যাংকের দ্বিতীয় তলায় আশ্রয় নেন। ওই স্থানে আসামিরা ঢুকে পড়ে। আসামির মধ্যে একজন মারুফের মাথার ডান পাশের কানের নিচে গুলি করে। গুলি লাগার পর মারুফ মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। পরে ছাত্র-জনতারা উদ্ধার করে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
মামলায় এক নম্বর আসামি করা হয়েছে সাবেক মন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক। দ্বিতীয় আসামি করা হয়েছেন টাঙ্গাইল পৌরসভার মেয়র ও শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি সিরাজুল হক আলমগীর।
অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু, সাবেক এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক তানভীর হাসান ছোট মনির, তার বড় ভাই ও জেলা বাস কোচ মিনিবাস মালিক সমিতির মহাসচিব গোলাম কিবরিয়া বড় মনি, সাবেক এমপি ছানোয়ার হোসেন, সাবেক এমপি অনুপম শাহজাহান জয়, সাবেক এমপি খান আহমেদ শুভ, সাবেক এমপি হাছান ইমাম খান সোহেল হাজারী, কেন্দ্রীয় যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এড. মামুনুর রশিদ মামুন, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট জোয়াহেরুল ইসলাম জোয়াহের, সাংগঠনিক সম্পাদক জামিলুর রহমান মিরন, সাইফুজ্জামান খান সোহেল, কাউন্সিল তানভীর হাসান ফেরদৌস নোমান, কাউন্সিল কামরুল হাসান মামুন, কাউন্সিল আসাদুজ্জামান প্রিন্স, কাউন্সিল আব্দুল্লাহ আল মামুন বাদশা, কাকুয়া ইউপি চেয়ারম্যান এড. বদিউজ্জামান ফারুক, বার সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এড. শহিদুল ইসলাম শহিদ,সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফারুক হোসেন মানিক, শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ রৌফ, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান তোফাজ্জল হোসেন খান তোফা, কাউন্সিল আতিকুর রহমান মোর্শেদ, কাউন্সিল আমিনুর রহমান আমিন, ঘারিন্দা ইউপি চেয়ারম্যান তোফায়েল আহমেদ, দপ্তর সম্পাদক এড. খোরশেদ আলম, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি, জেলা আওয়ামী লীগরে উপ-দপ্তর সম্পাদক ও বিবেকানন্দ স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ আনন্দ মোহন দে, জেলা যুবলীগের সভাপতি মাসুদ পারভেজ, সম্পাদক আবু সাঈম বিপ্লব, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সোহানুর রহমান সোহান, সম্পাদক ইলিয়াস হোসেন, শহর ছাত্রলীগের সভাপতি মীর ওয়াসেদুল হক তানজীল, জেলা যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদক নুর মোহাম্মদ সিকদার মানিক, ১১নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক কাউন্সিল সালাউদ্দিন হায়দার, ৩নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সম্পাদক ও সাবেক কাউন্সিল হেলাল ফকির, ৩নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি সোনা আকন্দ, ১১নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সম্পাদক আব্দুর রহিম মিয়া, ১১নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নেতা মমিন মিয়া, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্পাদক মাতিনুজ্জামান খান সুখন,আদি টাঙ্গাইল এলাকার আওয়ামী লীগ নেতা রাসেল মিয়া, আব্দুর রহিম মিয়া, শামীম আল মামুন, জেলা আওয়ামী লীগ নেতা আকরাম হোসেন কিসলু, বেড়াবুচনা এলাকার আওয়ামী লীগ নেতা রুবেল আহমেদ, সবুজবাগ এলাকার আওয়ামী লীগ নেতা শহীদ মিয়া, জেলা ছাত্রলীগ নেতা তানভীরুল ইসলাম হিমেল, শহর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মনুসর, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা কোয়ার্টার রনি, ডন সোহেল, ক্যাম্প সোহেল, ডন সোহেলের ভাই রাসেল, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান নাজমুল হুদা নবীন, পৌর মেয়রের পিএস সাজ্জাদ হোসেন সাজু, এড. আব্দুর রহিম, টাঙ্গাইল পৌরসভার প্যানেল মেয়র হাফিজুর রহমান স্বপন প্রমুখ।
টাঙ্গাইল সদর মডেল থানার ওসি লোকমান হোসেন বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের বিজয় মিছিলে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা হামলা চালায়। ওই হামলায় একজনের মৃত্যু হয়। নিহত মারুফের মা মোর্শেদা বাদি হয়ে ৫৬ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ১৫০-২০০ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছে।