ঢাকা ০৩:০৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শোলাকিয়ায় ঈদ জামাত, চলবে দুই স্পেশাল ট্রেন

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৭:২৭:৩৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ জুন ২০২৪ ১০৪ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দান ঈদুল আজহার ঈদ জামাতের জন্যে প্রস্তুত করা হয়েছে। ঈদ জামায়াত আয়োজনে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা।

এবার অনুষ্ঠিত হবে ১৯৭তম ঈদুল আজহার জামাত। ময়দানের ইমাম বাংলাদেশ ইসলাহুল মুসলেমিন পরিষদের চেয়ারম্যান আল্লামা ফরিদ উদ্দিন মাসঊদ অসুস্থ থাকায় বিকল্প ইমাম শোয়েব বিন আব্দুর রউফ ইমামতি করবেন।

দূরদূরান্তের মুসল্লিদের চলাচলের সুবিধার্থে ময়মনসিংহ ও ভৈরব থেকে দুটি স্পেশাল ট্রেন ভোর থেকে চলাচল করবে। কিশোরগঞ্জ শহরের পূর্বদিকে নরসুন্দা নদীর তীরে প্রায় সাত একর জায়গাজুড়ে ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দান।

মুসুল্লিদের দাঁড়িয়ে নামাজ পড়ার জন্যে মাঠে দাগ কাটা হয়েছে। মাঠের বৃষ্টির পানি যাতে না জমে সেজন্য বালু ফেলা হচ্ছে। ওজু খানা ও টয়লেট পরিস্কার করা হয়েছে। শেষ মুহুর্তে মাইক লাগানোর কাজ চলছে।

২০১৬ সালের ৭ জুলাই ঈদ জামায়াতের পূর্বে শোলাকিয়া ময়দানের অদূরেই মোহাম্মদীয় জামে মসজিদের পাশে দেশের ইতিহাসের ভয়াবহ জঙ্গী হামলার ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় ২ পুলিশ, এক গৃহবধূ ও এক জঙ্গি নিহত হয়। আহত হয় বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য।

এরপর থেকেই প্রতিবছর শোলাকিয়া ময়দানের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরো জোরদার করা হয়। এ বছরও নেয়া হয়েছে সর্বোচ্চ নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা। বসানো হয়েছে ৪টি ওয়াচ টাউয়ার। সেখান থেকে র‌্যাব ও পুলিশের সদস্যরা বাইনোকুলারের সাহায্যে পর্যবেক্ষণ করবেন। র‌্যাবের কন্ট্রোল রুম থেকে পুরো ময়দান ও আশপাশ এলাকা সিসিটিভির আওতায় রাখা হয়েছে। দুই প্লাটুন বিজিবিসহ র‌্যাব, পুলিশ, আর্মড পুলিশ ব্যাটেরিয়ানসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুল পরিমাণ সদস্য মোতায়েন থাকবে। বোম্ব ডিসপোজাল টিম ও পুলিশের কুইক রেসপন্স টিমের সদস্যরা থাকবে। চারটি ড্রোন ও প্রশাসনের নিজস্ব ক্যামেরা থাকবে মাঠের নজরদারি করবে।

নিরাপত্তার স্বার্থে প্রতিটি মুসুল্লিকে চার থেকে ছয়টি পুলিশ চেকপোস্টে তল্লাসীর মাধ্যমে ময়দানে প্রবেশ করানো হবে। অ্যাম্বুলেন্সসহ বেশ কয়েকটি মেডিকেল টিম ও ফায়ার সার্ভিসের ইউনিট সার্বক্ষনিক নিয়োজিত থাকবে। এছাড়া বিভিন্ন সংস্থার কর্মীরাও মুসল্লিদের সেবা দিতে মাঠে থাকবেন। কোরবানি বাধ্যবাধতার কারণে ঈদুল আজহার জামাতের দূরদূরান্তের মুসুল্লিদের আগমন কম হয়ে থাকে। তবুও প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিরাপত্তার কোন ঘাটতি থাকবে না।

ময়দানের সার্বিক পরিস্থিতি দেখতে শনিবার (১৫ জুন) জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ, ময়মনসিংহ র‌্যাবের অধিনায়ক মো. আলিমুজ্জামান খান, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ পিপিএম(বার)সহ প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা শোলাকিয়া ময়দান পরিদর্শন করেন।

কিশোরগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মাহমুদ পারভেজ জানান, ঈদ জামায়াতে মুসুল্লিদের সুবিধার্থে মাঠ পরিস্কার পরিচ্ছন্নতাসহ যাবতীয় কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে।

কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ পিএিম (বার) জানান, প্রতিটি মুসল্লিকে ময়দানে প্রবেশ ও বাড়ি পর্যন্ত নিরাপদে পৌঁছে দিতে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সচেষ্ট রয়েছে।

জেলা প্রশাসক ও শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠ পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদজানান, উৎসাহ উদ্দিপনার মাধ্যমে ঈদুল আজহার ১৯৭তম জামায়াত আয়োজনের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে বলে তিনি জানান।

উল্লেখ্য, ১৮২৮ সালে শোলাকিয়া ময়দানে এক সাথে সোয়া লাখ মুসুল্লি একসাথে ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করেছিলো। এতে সোয়া লাখ মুসুল্লি অংশ নেন। সেই সোয়া লাখ থেকে কালের বির্বতনে ঈদগাহ ময়দানটির নাম শোলাকিয়া হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

শোলাকিয়ায় ঈদ জামাত, চলবে দুই স্পেশাল ট্রেন

সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৭:২৭:৩৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ জুন ২০২৪

কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দান ঈদুল আজহার ঈদ জামাতের জন্যে প্রস্তুত করা হয়েছে। ঈদ জামায়াত আয়োজনে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা।

এবার অনুষ্ঠিত হবে ১৯৭তম ঈদুল আজহার জামাত। ময়দানের ইমাম বাংলাদেশ ইসলাহুল মুসলেমিন পরিষদের চেয়ারম্যান আল্লামা ফরিদ উদ্দিন মাসঊদ অসুস্থ থাকায় বিকল্প ইমাম শোয়েব বিন আব্দুর রউফ ইমামতি করবেন।

দূরদূরান্তের মুসল্লিদের চলাচলের সুবিধার্থে ময়মনসিংহ ও ভৈরব থেকে দুটি স্পেশাল ট্রেন ভোর থেকে চলাচল করবে। কিশোরগঞ্জ শহরের পূর্বদিকে নরসুন্দা নদীর তীরে প্রায় সাত একর জায়গাজুড়ে ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দান।

মুসুল্লিদের দাঁড়িয়ে নামাজ পড়ার জন্যে মাঠে দাগ কাটা হয়েছে। মাঠের বৃষ্টির পানি যাতে না জমে সেজন্য বালু ফেলা হচ্ছে। ওজু খানা ও টয়লেট পরিস্কার করা হয়েছে। শেষ মুহুর্তে মাইক লাগানোর কাজ চলছে।

২০১৬ সালের ৭ জুলাই ঈদ জামায়াতের পূর্বে শোলাকিয়া ময়দানের অদূরেই মোহাম্মদীয় জামে মসজিদের পাশে দেশের ইতিহাসের ভয়াবহ জঙ্গী হামলার ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় ২ পুলিশ, এক গৃহবধূ ও এক জঙ্গি নিহত হয়। আহত হয় বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য।

এরপর থেকেই প্রতিবছর শোলাকিয়া ময়দানের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরো জোরদার করা হয়। এ বছরও নেয়া হয়েছে সর্বোচ্চ নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা। বসানো হয়েছে ৪টি ওয়াচ টাউয়ার। সেখান থেকে র‌্যাব ও পুলিশের সদস্যরা বাইনোকুলারের সাহায্যে পর্যবেক্ষণ করবেন। র‌্যাবের কন্ট্রোল রুম থেকে পুরো ময়দান ও আশপাশ এলাকা সিসিটিভির আওতায় রাখা হয়েছে। দুই প্লাটুন বিজিবিসহ র‌্যাব, পুলিশ, আর্মড পুলিশ ব্যাটেরিয়ানসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুল পরিমাণ সদস্য মোতায়েন থাকবে। বোম্ব ডিসপোজাল টিম ও পুলিশের কুইক রেসপন্স টিমের সদস্যরা থাকবে। চারটি ড্রোন ও প্রশাসনের নিজস্ব ক্যামেরা থাকবে মাঠের নজরদারি করবে।

নিরাপত্তার স্বার্থে প্রতিটি মুসুল্লিকে চার থেকে ছয়টি পুলিশ চেকপোস্টে তল্লাসীর মাধ্যমে ময়দানে প্রবেশ করানো হবে। অ্যাম্বুলেন্সসহ বেশ কয়েকটি মেডিকেল টিম ও ফায়ার সার্ভিসের ইউনিট সার্বক্ষনিক নিয়োজিত থাকবে। এছাড়া বিভিন্ন সংস্থার কর্মীরাও মুসল্লিদের সেবা দিতে মাঠে থাকবেন। কোরবানি বাধ্যবাধতার কারণে ঈদুল আজহার জামাতের দূরদূরান্তের মুসুল্লিদের আগমন কম হয়ে থাকে। তবুও প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিরাপত্তার কোন ঘাটতি থাকবে না।

ময়দানের সার্বিক পরিস্থিতি দেখতে শনিবার (১৫ জুন) জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ, ময়মনসিংহ র‌্যাবের অধিনায়ক মো. আলিমুজ্জামান খান, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ পিপিএম(বার)সহ প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা শোলাকিয়া ময়দান পরিদর্শন করেন।

কিশোরগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মাহমুদ পারভেজ জানান, ঈদ জামায়াতে মুসুল্লিদের সুবিধার্থে মাঠ পরিস্কার পরিচ্ছন্নতাসহ যাবতীয় কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে।

কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ পিএিম (বার) জানান, প্রতিটি মুসল্লিকে ময়দানে প্রবেশ ও বাড়ি পর্যন্ত নিরাপদে পৌঁছে দিতে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সচেষ্ট রয়েছে।

জেলা প্রশাসক ও শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠ পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদজানান, উৎসাহ উদ্দিপনার মাধ্যমে ঈদুল আজহার ১৯৭তম জামায়াত আয়োজনের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে বলে তিনি জানান।

উল্লেখ্য, ১৮২৮ সালে শোলাকিয়া ময়দানে এক সাথে সোয়া লাখ মুসুল্লি একসাথে ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করেছিলো। এতে সোয়া লাখ মুসুল্লি অংশ নেন। সেই সোয়া লাখ থেকে কালের বির্বতনে ঈদগাহ ময়দানটির নাম শোলাকিয়া হয়েছে।