‘রাসেল ভাইপার’ আতঙ্ক, ফেসবুক পোস্টে গুজব ছড়াচ্ছে!
- সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৪:১৭:৩২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৪ জুন ২০২৪ ৭৫ বার পড়া হয়েছে
রাসেলস ভাইপারের উপদ্রব বেড়ে যাওয়ায় আতঙ্ক বিরাজ করছে চাঁদপুরে। এতে করে বিভ্রান্তিতে পড়ছে সাধারণ মানুষ। চাঁদপুর সদর ও বিভিন্ন উপজেলাসহ শহরের পার্শ্ববর্তী গ্রামাঞ্চল এবং শরীয়তপুর লাগোয়া মেঘনা নদীর চর এলাকা এখন সবচেয়ে বড় আতঙ্কের নাম বিষাক্ত সাপ রাসেলস ভাইপার।
প্রায় এক-দেড় দুই আগে চাঁদপুরের পার্শ্ববর্তী এলাকা শরিয়তপুর এবং মতলব উত্তর ও চাঁদপুর সদর উপজেলার ইব্রাহিমপুর ও রাজরাজ্বেশর ইউনিয়নের চরাঞ্চলের কৃষি জমিতে প্রথমে কয়েকটি রাসেল ভাইপার সাপের দেখা মিল। তবে এখন নদীর পাড় এলাকায় এই সাপের দেখা মিলছে। গত এক সপ্তাহ ধরে ফেসবুকে এই সাপ নিয়ে একাধিক পোস্ট ভাইরাল হওয়ার পর আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
গত ২২ জুলাই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক ব্যক্তি তার ফেসবুক পেজে চাঁদপুর সদর উপজেলার তরপুরচন্ডীতে রাসেলস ভাইপার সাপের কামড়ে সদর হাসপাতালে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে খবর পোস্ট করেন। তবে বাস্তবে এমন কোনো ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়নি। যে কারণে আরও বেশি আতঙ্কিত হয়ে পড়েন চাঁদপুর জেলাবাসী।
সম্প্রতি, ফেসবুকে একাধিক ব্যক্তি লিখেছেন, বিষাক্ত রাসেলস ভাইপারে কাটলে নিশ্চিত মৃত্যু। এর কোনো ভ্যাকসিনও দেশে নেই। এমন কিছু পোস্টের ফলে সাধারণ মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়ে।
তবে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে ,অন্যান্য বিষাক্ত খোকড়া সাপ এবং ফানক সাপ কাটলে মানুষকে বিষ প্রতিষেধক যে এন্টিভেনম ভ্যাকসিন দেয়া হয়। রাসেলস ভাইপার বা চন্দ্রবোড়া সাপে কাটলেও একই ভ্যাকসিন দেয়া হয় বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য বিভাগ।
চাঁদপুর সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার ডা. মো. শাখাওয়াত হোসেন জানান, চাঁদপুর সদর উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগে প্রায় ১০০ বেশি এ্যান্টিভেনম স্টকে রয়েছে। এরমধ্যে মতলব উত্তর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৩০টি, মতলব দক্ষিণ স্বস্থ্য কমপ্লেক্সে ২০টি, ফরিদগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১০টি।
চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডা. একেএম মাহাবুবুর রহমান জানান, যে কোনো বিষাক্ত সাপে কাটলে বিষ প্রতিষেধকের একই এ্যান্টিভেনম ভ্যাকসিন দেয়া হয়। আমাদের হাসপাতালে ১৩০টি এ্যান্টিভেনম মজুদ রয়েছে। এর পাশাপাশি আরো ২০০ চাহিদার কথা সাস্থ্য মন্ত্রনালয়ে জানানো হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, যেকোনো সাপে কাটলে সময় নষ্ট না করে যতো দ্রুত সম্ভব রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে আসতে হবে। আমরা তার সিমটম দেখে, সেই অনুযায়ী ভ্যাকসিন প্রদান করবো।
এদিকে,বিবিসি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, রাসেলস ভাইপার সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে বাংলাদেশের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি প্রধান বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইঁদুর শিকার রাসেলস ভাইপার প্রায়শই মানুষের বসতির কাছাকাছি এবং বিশেষ করে ফসল কাটার সময়ে কৃষি জমিতে চলে আসে। এক গবেষণায় বলা হয়েছে, প্রতি বছর বাংলাদেশে প্রায় ৭ হাজার মানুষ সাপের কামড়ে মারা যায়।
রাসেলস ভাইপর এদেশের মানুষের কাছে চন্দ্রবোড়া সাপ হিসাবেই বেশি পরিচিত। এ সময়ের বিলুপ্ত প্রায় এই বিষধর সাপটিই এখন সারাদেশে নতুন করে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। এরমধ্যে, দেশের প্রায় ২৮ জেলায় এই রাসেলস ভাইপারের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। চলতি বছরের ২৩ জুন পর্যন্ত এই সাপের কামড়ে ১০ জন মারা যাওয়ার খবর গণমাধ্যমে এসেছে। তবে এই বিষধর সাপে কামড়ের সংখ্যা আরও বেশি বলে জানা গেছে।