ব্যাংকের লকার থেকে ‘গায়েব’ হওয়া সোনা ‘খুঁজবে’ দুদক
- সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৯:১৯:৪৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ জুন ২০২৪ ৯৯ বার পড়া হয়েছে
ইসলামী ব্যাংকের চট্টগ্রামের চকবাজার শাখার লকার থেকে প্রায় দেড়শ ভরি স্বর্ণালংকার গায়েবের ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন ব্যাংকের গ্রাহক রোকেয়া আক্তার বারী। তিনি চট্টগ্রাম নগরীর চট্টেশ্বরী রোডের বাসিন্দা।পুলিশ অভিযোগটি সাধারণ ডায়েরি হিসেবে নিয়ে তদন্তের জন্য মঙ্গলবার (৪ জুন) দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) পাঠিয়েছে।
আরও পড়ুন : ফলোআপ/ বাথরুমে নিয়ে চাপাতি দিয়ে ৪ টুকরা করা হয় সৌরভকে
স্বর্ণালঙ্কার ‘আত্মসাতের’ অভিযোগে ইসলামী ব্যাংকের এমডিসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে থানায় এই অভিযোগ করা হয়। নাম উল্লেখ না করে ব্যাংকের পরিচালক, শাখার কর্মকর্তাসহ আরও কয়েকজনকে অভিযুক্ত করা হয়।
ঘটনার ৫ দিন পর সোমবার (৩ জুন) রাতে গ্রাহক রোকেয়া আক্তার বারী নগরীর চকবাজার থানায় অভিযোগ করেন। অভিযুক্তরা হলো- ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী (সিইও) মোহাম্মদ মনিরুল মওলা, ব্যাংকের চকবাজার শাখার সিনিয়র অ্যাসিস্টেন্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট ও শাখা ব্যবস্থাপক এস এম শফিকুল মওলা, কোম্পানি সেক্রেটারি জে কিউ এম হাবিবউল্লাহ এবং লকারের দায়িত্বরত কর্মকর্তা ইউনুস।
অভিযোগে রোকেয়া আক্তার বারী উল্লেখ করেন, ২০০৬ সাল থেকে তিনি ও তার মেয়ে নাসিয়া মারজুক যৌথ মালিকানায় ইসলামী ব্যাংকের চকবাজার শাখায় একটি লকার ভাড়া নিয়ে ব্যবহার করে আসছিলেন। লকারে নাসিয়া ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের প্রায় ১৬০ ভরি স্বর্ণালঙ্কার গচ্ছিত ছিলো। গত ২৯ মে দুপুরে তিনি ব্যাংকে গিয়ে জানতে পারেন, তার জন্য বরাদ্দ করা লকারটি খোলা অবস্থায় রয়েছে। সেখানে রাখা স্বর্ণালঙ্কারের মধ্যে প্রায় ১৪৯ ভরি ‘চুরি’ হয়েছে। স্বর্ণালঙ্কারের মধ্যে রয়েছে ৬০ ভরি ওজনের ৪০ পিস হাতের চুড়ি, ২৫ ভরি ওজনের ৪ সেট জড়োয়া, ১০ ভরি ওজনের একটি গলার সেট, ২৮ ভরি ওজনের সাতটি গলার চেইন, ১৫ ভরি ওজনের ২৫টি আংটি এবং ১১ ভরি ওজনের ৩০ জোড়া কানের দুল।
আরও পড়ুন : সাবেক আইজিপি বেনজীরের ৩ কালো হাত
চকবাজার থানার ওসি মোহাম্মদ ওয়ালী উদ্দিন আকবর এ প্রসঙ্গে বলেন, ব্যাংকের গ্রাহক অভিযোগ নিয়ে থানায় এসেছেন। যেহেতু আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগ, সেটি দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) শিডিউলভুক্ত। আমরা অভিযোগ গ্রহণ করে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে সেটি দুদকে পাঠাব।
এর আগে, লকারে স্বর্ণালঙ্কার না পেয়ে ২৯ মে রোকেয়া আক্তার বারী তাৎক্ষণিক চকবাজার থানায় গিয়ে মৌখিকভাবে অভিযোগ করেন। চকবাজার থানার ওসি ব্যাংকে গিয়ে এর সত্যতা যাচাই করেন। তবে গ্রাহক লিখিত কোনো অভিযোগ না করায় বিষয়টি তখন প্রকাশ হয়নি। এরপর ১ জুন রাতে বিষয়টি জানাজানি হয়।
অভিযোগ দায়েরে পাঁচ দিন সময় নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে বাদীর ছেলে ডা. রিয়াদ মোহাম্মদ মারজুক বলেন, এ ধরনের ঘটনায় কী ধরনের আইনগত পদক্ষেপ নেয়া যেতে পারে সেটা নিয়ে আমাদের কোনো ধারণা ছিল না। আমরা প্রথমে ব্যাংককে স্বর্ণালঙ্কারগুলো খুঁজে বের করার জন্য সময় দিয়েছিলাম। একই সাথে থানায় জিডি করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু থানা থেকে আমাদের মামলা করতে বলা হয়। এরপর আইনজীবীর সঙ্গে পরামর্শ করি। আইনজীবী আদালতে মামলার পরামর্শ দেন।
এদিকে, চকবাজার শাখা প্রধান ও ইসলামী ব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম শফিকুল মওলা চৌধুরী জানান, গ্রাহকের অভিযোগ তদন্তে ইসলামী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ৩ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে। তদন্ত কার্যক্রম চলমান রয়েছে।