ঢাকা ১২:৫৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বরিশালে গণমিছিল, ঢাকা-কুয়াকাটা মহাসড়ক অবরোধ

শাহ জালাল, বরিশাল
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৭:১৮:৪১ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩ অগাস্ট ২০২৪ ১৭ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

সরকারি চাকরিতে কোটা বিরোধী আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বরিশাল-ফরিদপুর-ঢাকা-পটুয়াখালি জাতীয় মহাসড়ক অবরোধ করে শনিবার (৩ আগস্ট) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত মহানগরীর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে দুই ঘন্টাব্যাপী অবস্থান করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে।

তবে কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই বিক্ষোভ সমাবেশ শেষ করে হাজার হাজার ছাত্র-ছাত্রী নগরীরর সি এন্ড বি রোড ধরে নবগ্রাম রোড-চৌমহনীতে এসে কিছু সময় অবস্থান করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। এসময় কয়েক দফা উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হলেও পরে তা শান্ত হয়ে এলে ঘরে ফেরে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-ছাত্রীরা। পুলিশ বা আইন-শৃংখলা বাহিনী কোন ধরনের পদক্ষেপ গ্রহন না করায় শান্তিপূর্ণভাবেই কোটা বিরোধী আন্দোলনকারীদের সব কর্মসূচী শেষ হয়। শনিবারের সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিলে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়, শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ ও ব্রজমোহন কলেজ সহ নগরীর সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীরাই অংশ নেয়। ৎ

বেলা ১১টার দিকে ব্রজমোহন কলেজ সহ নগরীর বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি কলেজের শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে ব্রজমোহন কলেজের সামনে জড়ো হয়। সেখান থেকে একযোগে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকায় বরিশাল-ফরিদপুর-ঢাকা-পটুয়াখালি জাতীয় মহাসড়ক অবরোধ করে। এসময় তাদের সাথে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও যোগ দেয়। সেখানে বিভিন্ন শ্লোগানে শ্লোগানে উত্তাল করে তোলে শিক্ষার্থীরা।

অবরোধের সময় অভ্যন্তরীন ও দূরপাল্লার যানবাহন সহ সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়। দুপর দেড়টা পর্যন্ত বাস টার্মিনাল এলাকায় অবরোধের পরে নবগ্রাম রোড-চৌমহনীতে আরো ঘন্টাকাল অবরোধ চরে। ফলে বরিশালের সাথে পটুয়াখালী, কুয়াকাটা, ভোলা, লক্ষ্মীপুর, চট্টগ্রাম, ঝালকাঠী, পিরোজপুর, বাগেরহাট, মোংলা ও খুলনার সড়ক যোগাযোগও বন্ধ হয়ে যায়। দুপুর সাড়ে ৩টার পরে সড়ক যোগাযোগ স্বাভাবিক হয়। বরিশাল নগরী সহ সন্নিহিত এলাকায় পুলিশ সহ আইন-শৃংখলা বাহিনীর সতর্ক নজরদারি অব্যাহত রয়েছে।

কোটা আন্দোলনের সরকারি ব্রজমোহন কলেজের সমন্বয়ক মো. ইমতিয়াজ বলেন, নিহত ও আহত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারীদের বিচার সহ নয় দফা দাবি মেনে নেয়া না হলে ঢাকা থেকে যে কর্মসূচী দেয়া হবে তা বরিশালের শিক্ষার্থীরা পালন করবে। এ ক্ষেত্রে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ও সরকারি ব্রজমোহন কলেজ সহ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা একাতাবদ্ধ হয়ে কর্মসূচী পালন করছেন। ছাত্র-ছাত্রীরা আন্দোলন সফল না করে কোনভাবেই ঘরে ফিরবে না বলে জানান তিনি।

কোটা আন্দোলনের সরকারি বিএম কলেজের সমন্বয়ক সুজন আহমেদ বলেন, শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে সাংবাদিক এবং পুলিশ নিহত আহত হয়েছেন। সেই রক্তের উপর বসে দেশ শাসন করার অধিকার হারিয়েছে সরকার। আমাদের এখন দাবি ৯ দফা বাস্তবায়ন করতে হবে। আর তা না হলে ঢাকা থেকে আসা কর্মসূচী বাস্তবায়ন করা হবে।

শিক্ষার্থীদের মিছিলটি চৌমাথায় পৌঁছানোর পর সেখান দিয়ে রহমতপুরে দায়িত্বরত পুলিশ কর্মচারীদের খাবার নিয়ে পুলিশের একটি গাড়ি রহমতপুরের দিকে যাচ্ছিল। এসময়ে শিক্ষার্থীরা গাড়িটিকে সড়কের পাশে নিয়ে রাখার জন্য নির্দেশ দেয়। একটু পরেই শিক্ষাথীরা গাড়িটি ও নিকটবর্তী পুলিশ বক্সে হামলা চালায় ও ভাংচুর করে। এতে সিফাত নামক একজন কনস্টবল আহত হয়েছেন। গাড়িতে থাকা অন্য পুলিশ সদস্যরা দৌঁড়ে নিকটবর্তী মসজিদে যেয়ে আশ্রয় নেন। পরে অ্যাম্বুলেন্স এসে আটকে পড়া পুলিশ সদস্যদের উদ্ধার করে নিয়ে যায়। তবে আন্দোলনকারীরা দাবি করেছেন পুলিশের উপর হামলার ঘটনার সাথে তারা জড়িত নন। তাদের অহিংস আন্দোলনকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য ক্ষমতাসীনরা ভাংচুর করেছে। তবে কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানিয়েছেন বিপুল সংখ্যক পুলিশ উপস্থিত থাকলেও তারা কোনরূপ বাঁধা দেননি বা কোন অ্যাকশনে যাননি।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

বরিশালে গণমিছিল, ঢাকা-কুয়াকাটা মহাসড়ক অবরোধ

সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৭:১৮:৪১ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩ অগাস্ট ২০২৪

সরকারি চাকরিতে কোটা বিরোধী আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বরিশাল-ফরিদপুর-ঢাকা-পটুয়াখালি জাতীয় মহাসড়ক অবরোধ করে শনিবার (৩ আগস্ট) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত মহানগরীর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে দুই ঘন্টাব্যাপী অবস্থান করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে।

তবে কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই বিক্ষোভ সমাবেশ শেষ করে হাজার হাজার ছাত্র-ছাত্রী নগরীরর সি এন্ড বি রোড ধরে নবগ্রাম রোড-চৌমহনীতে এসে কিছু সময় অবস্থান করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। এসময় কয়েক দফা উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হলেও পরে তা শান্ত হয়ে এলে ঘরে ফেরে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-ছাত্রীরা। পুলিশ বা আইন-শৃংখলা বাহিনী কোন ধরনের পদক্ষেপ গ্রহন না করায় শান্তিপূর্ণভাবেই কোটা বিরোধী আন্দোলনকারীদের সব কর্মসূচী শেষ হয়। শনিবারের সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিলে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়, শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ ও ব্রজমোহন কলেজ সহ নগরীর সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীরাই অংশ নেয়। ৎ

বেলা ১১টার দিকে ব্রজমোহন কলেজ সহ নগরীর বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি কলেজের শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে ব্রজমোহন কলেজের সামনে জড়ো হয়। সেখান থেকে একযোগে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকায় বরিশাল-ফরিদপুর-ঢাকা-পটুয়াখালি জাতীয় মহাসড়ক অবরোধ করে। এসময় তাদের সাথে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও যোগ দেয়। সেখানে বিভিন্ন শ্লোগানে শ্লোগানে উত্তাল করে তোলে শিক্ষার্থীরা।

অবরোধের সময় অভ্যন্তরীন ও দূরপাল্লার যানবাহন সহ সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়। দুপর দেড়টা পর্যন্ত বাস টার্মিনাল এলাকায় অবরোধের পরে নবগ্রাম রোড-চৌমহনীতে আরো ঘন্টাকাল অবরোধ চরে। ফলে বরিশালের সাথে পটুয়াখালী, কুয়াকাটা, ভোলা, লক্ষ্মীপুর, চট্টগ্রাম, ঝালকাঠী, পিরোজপুর, বাগেরহাট, মোংলা ও খুলনার সড়ক যোগাযোগও বন্ধ হয়ে যায়। দুপুর সাড়ে ৩টার পরে সড়ক যোগাযোগ স্বাভাবিক হয়। বরিশাল নগরী সহ সন্নিহিত এলাকায় পুলিশ সহ আইন-শৃংখলা বাহিনীর সতর্ক নজরদারি অব্যাহত রয়েছে।

কোটা আন্দোলনের সরকারি ব্রজমোহন কলেজের সমন্বয়ক মো. ইমতিয়াজ বলেন, নিহত ও আহত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারীদের বিচার সহ নয় দফা দাবি মেনে নেয়া না হলে ঢাকা থেকে যে কর্মসূচী দেয়া হবে তা বরিশালের শিক্ষার্থীরা পালন করবে। এ ক্ষেত্রে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ও সরকারি ব্রজমোহন কলেজ সহ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা একাতাবদ্ধ হয়ে কর্মসূচী পালন করছেন। ছাত্র-ছাত্রীরা আন্দোলন সফল না করে কোনভাবেই ঘরে ফিরবে না বলে জানান তিনি।

কোটা আন্দোলনের সরকারি বিএম কলেজের সমন্বয়ক সুজন আহমেদ বলেন, শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে সাংবাদিক এবং পুলিশ নিহত আহত হয়েছেন। সেই রক্তের উপর বসে দেশ শাসন করার অধিকার হারিয়েছে সরকার। আমাদের এখন দাবি ৯ দফা বাস্তবায়ন করতে হবে। আর তা না হলে ঢাকা থেকে আসা কর্মসূচী বাস্তবায়ন করা হবে।

শিক্ষার্থীদের মিছিলটি চৌমাথায় পৌঁছানোর পর সেখান দিয়ে রহমতপুরে দায়িত্বরত পুলিশ কর্মচারীদের খাবার নিয়ে পুলিশের একটি গাড়ি রহমতপুরের দিকে যাচ্ছিল। এসময়ে শিক্ষার্থীরা গাড়িটিকে সড়কের পাশে নিয়ে রাখার জন্য নির্দেশ দেয়। একটু পরেই শিক্ষাথীরা গাড়িটি ও নিকটবর্তী পুলিশ বক্সে হামলা চালায় ও ভাংচুর করে। এতে সিফাত নামক একজন কনস্টবল আহত হয়েছেন। গাড়িতে থাকা অন্য পুলিশ সদস্যরা দৌঁড়ে নিকটবর্তী মসজিদে যেয়ে আশ্রয় নেন। পরে অ্যাম্বুলেন্স এসে আটকে পড়া পুলিশ সদস্যদের উদ্ধার করে নিয়ে যায়। তবে আন্দোলনকারীরা দাবি করেছেন পুলিশের উপর হামলার ঘটনার সাথে তারা জড়িত নন। তাদের অহিংস আন্দোলনকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য ক্ষমতাসীনরা ভাংচুর করেছে। তবে কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানিয়েছেন বিপুল সংখ্যক পুলিশ উপস্থিত থাকলেও তারা কোনরূপ বাঁধা দেননি বা কোন অ্যাকশনে যাননি।