ঢাকা ০১:০৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বন্যায় পৌনে ৯ লাখ পরিবার পানিবন্দি, ১৩ জনের মৃত্যু

দেবব্রত দত্ত
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ০১:৩৪:১৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ অগাস্ট ২০২৪ ৩৪ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

দেশে ভয়াবহ বন্যার কবলে ১১টি জেলা। এসব জেলাগুলোয় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা ৪৫ লাখ। এই মুহূর্তে আট লাখ ৮৭ হাজার ৬২৯টি পরিবার পানিবন্দী অবস্থায় রয়েছে। আর বন্যায় এখন পর্যন্ত মারা গেছে ১৩ জন।

শুক্রবার (২৩ আগস্ট) দুপুর ১২টার দিকে সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. কামরুল হাসান।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়েছে, বন্যাক্রান্ত জেলাগুলো হলো- কুমিল্লা, ফেনী,নোয়াখালী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চট্টগ্রাম, লক্ষ্মীপুর,কক্সবাজার, সিলেট, খাগড়াছড়ি, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ।

বন্যায় এই পর্যন্ত কুমিল্লায় ৪ জন, কক্সবাজারে ৩ জন, চট্টগ্রামে দুই জন, ফেনীতে একজন, নোয়াখালীতে একজন, লক্ষ্মীপুরে একজন ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একজনের মৃত্যু হয়েছে।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব কামরুল হাসান বলেন, বন্যাকবলিত এলাকাগুলোয় এ পর্যন্ত তিন কোটি ৫২ লাখ নগদ টাকা, ২০ হাজার ১৫০ টন চাল, ১৫ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, বন্যাকবলিত এলাকায় সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড, বিজিবি, ফায়ার সার্ভিস, পুলিশের সদস্য ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা উদ্ধারকাজ অব্যাহত রেখেছে।

এদিকে, আবহাওয়ার পূর্বাবাসে বলা হয়েছে, সারা দেশে বিক্ষিপ্তভাবে আগামী ২৬ আগস্ট পর্যন্ত ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। তবে বন্যাকবলিত নোয়াখালী, ফেনী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি ও কক্সবাজারে শুক্রবার (২৩ আগস্ট) বৃষ্টির প্রবণতা কম থাকার আভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। সংস্থাটির মতে, শনিবার (২৪ আগস্ট) থেকে এসব এলাকাগুলোয় আবারও ভারী বৃষ্টি হতে পারে।

শুক্রবার (২৩ আগস্ট) সকালে দেয়া আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়, মৌসুমি বায়ু ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। এর প্রভাবে সারাদেশে বৃষ্টির প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

এছাড়া, আগামী ৭২ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়, দেশের দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলসহ রংপুর, ঢাকা, রাজশাহী,বরিশাল ও সিলেটের অধিকাংশ জায়গায় ভারী বৃষ্টি হতে পারে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টি হয় কক্সবাজারে ১৫১ মিলিমিটার।

কয়েকদিনের টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে ভয়াবহ হয়ে উঠছে দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি। ১২ জেলায় বন্যাকবলিত অন্তত ৪২ লাখ মানুষ। হঠাৎ বন্যায় ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট তলিয়ে বিপাকে পড়েছে মানুষজন। অনেকেই ঘর থেকে কিছু বের করতে না পেরে খালি হাতে ছুটছেন আশ্রয়কেন্দ্রে। দুর্গত এলাকায় এখন দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানি ও খাবার সংকট।

অভিযোগ উঠেছে, ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের ডুম্বুর জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের বাঁধ খুলে দেয়ার জন্যই বাংলাদেশে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। তবে ভারত সরকার এই অভিযোগ নাকোজ করে দিয়ে বলছে, বাংলাদেশের বন্যা গোমতির নদীর ওপর নির্মিত ডুম্বুর জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের বাঁধ খুলে দেয়ার কারণে হয়নি।

বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত গোমতী নদীর ক্যাচমেন্ট এলাকায় কয়েকদিন ধরে বৃষ্টিপাত হয়েছে। বাংলাদেশে বন্যা মূলত বাঁধের নিচের দিকের এই বৃহৎ ক্যাচমেন্টের পানির কারণে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

বন্যায় পৌনে ৯ লাখ পরিবার পানিবন্দি, ১৩ জনের মৃত্যু

সংবাদ প্রকাশের সময় : ০১:৩৪:১৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ অগাস্ট ২০২৪

দেশে ভয়াবহ বন্যার কবলে ১১টি জেলা। এসব জেলাগুলোয় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা ৪৫ লাখ। এই মুহূর্তে আট লাখ ৮৭ হাজার ৬২৯টি পরিবার পানিবন্দী অবস্থায় রয়েছে। আর বন্যায় এখন পর্যন্ত মারা গেছে ১৩ জন।

শুক্রবার (২৩ আগস্ট) দুপুর ১২টার দিকে সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. কামরুল হাসান।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়েছে, বন্যাক্রান্ত জেলাগুলো হলো- কুমিল্লা, ফেনী,নোয়াখালী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চট্টগ্রাম, লক্ষ্মীপুর,কক্সবাজার, সিলেট, খাগড়াছড়ি, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ।

বন্যায় এই পর্যন্ত কুমিল্লায় ৪ জন, কক্সবাজারে ৩ জন, চট্টগ্রামে দুই জন, ফেনীতে একজন, নোয়াখালীতে একজন, লক্ষ্মীপুরে একজন ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একজনের মৃত্যু হয়েছে।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব কামরুল হাসান বলেন, বন্যাকবলিত এলাকাগুলোয় এ পর্যন্ত তিন কোটি ৫২ লাখ নগদ টাকা, ২০ হাজার ১৫০ টন চাল, ১৫ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, বন্যাকবলিত এলাকায় সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড, বিজিবি, ফায়ার সার্ভিস, পুলিশের সদস্য ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা উদ্ধারকাজ অব্যাহত রেখেছে।

এদিকে, আবহাওয়ার পূর্বাবাসে বলা হয়েছে, সারা দেশে বিক্ষিপ্তভাবে আগামী ২৬ আগস্ট পর্যন্ত ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। তবে বন্যাকবলিত নোয়াখালী, ফেনী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি ও কক্সবাজারে শুক্রবার (২৩ আগস্ট) বৃষ্টির প্রবণতা কম থাকার আভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। সংস্থাটির মতে, শনিবার (২৪ আগস্ট) থেকে এসব এলাকাগুলোয় আবারও ভারী বৃষ্টি হতে পারে।

শুক্রবার (২৩ আগস্ট) সকালে দেয়া আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়, মৌসুমি বায়ু ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। এর প্রভাবে সারাদেশে বৃষ্টির প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

এছাড়া, আগামী ৭২ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়, দেশের দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলসহ রংপুর, ঢাকা, রাজশাহী,বরিশাল ও সিলেটের অধিকাংশ জায়গায় ভারী বৃষ্টি হতে পারে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টি হয় কক্সবাজারে ১৫১ মিলিমিটার।

কয়েকদিনের টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে ভয়াবহ হয়ে উঠছে দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি। ১২ জেলায় বন্যাকবলিত অন্তত ৪২ লাখ মানুষ। হঠাৎ বন্যায় ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট তলিয়ে বিপাকে পড়েছে মানুষজন। অনেকেই ঘর থেকে কিছু বের করতে না পেরে খালি হাতে ছুটছেন আশ্রয়কেন্দ্রে। দুর্গত এলাকায় এখন দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানি ও খাবার সংকট।

অভিযোগ উঠেছে, ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের ডুম্বুর জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের বাঁধ খুলে দেয়ার জন্যই বাংলাদেশে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। তবে ভারত সরকার এই অভিযোগ নাকোজ করে দিয়ে বলছে, বাংলাদেশের বন্যা গোমতির নদীর ওপর নির্মিত ডুম্বুর জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের বাঁধ খুলে দেয়ার কারণে হয়নি।

বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত গোমতী নদীর ক্যাচমেন্ট এলাকায় কয়েকদিন ধরে বৃষ্টিপাত হয়েছে। বাংলাদেশে বন্যা মূলত বাঁধের নিচের দিকের এই বৃহৎ ক্যাচমেন্টের পানির কারণে।