পেটে গজ রেখেই সেলাই, আইসিইউতে প্রসূতি নারী
- সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৬:৫৯:১৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ মে ২০২৪ ৯০ বার পড়া হয়েছে
নওগাঁয় এক প্রসূতি নারীর পেটে গজ রেখেই সেলাই করে দিয়েছিলেন এক চিকিৎসক। এ ঘটনার পর অসুস্থ হয়ে পড়া সুমি (৩০) খাতুন নামে ওই নারীকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সেখানে পুনরায় অপারেশনের পর পেট থেকে বের করা হয় রক্ত পরিষ্কার করা গজ কাপড়। ভুক্তভোগী নারীর স্বামী উজ্জল হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
বর্তমানে সুমিকে আইসিইউতে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। আর সদ্যজাত বাচ্চাকে ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে। ১৫মে (বুধবার) সকালে শহরের একতা ক্লিনিকে এই ঘটনা ঘটেছে। সুমি খাতুন নওগাঁর আত্রাই উপজেলার বান্দাইখাড়া এলাকার উজ্জল হোসেনের স্ত্রী।
জানা যায়, চলতি মাসের ১৫মে প্রসব ব্যথা শুরু হলে শহরের একতা ক্লিনিকে নেয়া হয় ওই প্রসূতিকে। সেখানে ওই দিনই সিজার করান ডাক্তার তানিয়া রহমান তনি। সিজারের জন্য জেনারেল অ্যানেস্থেসিয়া (জি.এ) প্রয়োগ করেন ডাক্তার তানিয়ার স্বামী নওগাঁ সদর হাসপাতালের এ্যানেসথেসিওলজীষ্ট ডাক্তার আদনান ফারুক।
সিজারের পর ওই নারী পেটে তীব্র ব্যথা অনুভব করেন এবং রক্তক্ষরণ শুরু হয়। ডাক্তার তানিয়া ক্লিনিকের মার্কেটিং অফিসার আব্দুর রউফকে দিয়ে দ্রুত রোগির পেটে সেলাই করিয়ে নেয়। তারপর বুধবার রাতে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়।
রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পর রাতেই আল্ট্রাসনোগ্রাফিতে জানা যায়, তার পেটে বাড়তি কিছু একটা জিনিস রয়েছে। আর সেজন্য তাকে বৃহস্পতিবার সকালে পরিবারের সম্মতিতে ফের অপারেশন করে পেট থেকে গজ পাওয়া যায়। ভুল অপারেশন ও অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারনে সংকটপূর্ণ অবস্থায় বর্তমানে তাকে আইসিইউতে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
ভুক্তভোগী নারীর স্বামী উজ্জল হোসেন বলেন, ডাক্তার তানিয়া সিজার করার পর পেটেই গজ রেখেছিলো। আবার হাসপাতালের মার্কেটিং অফিসারকে দিয়ে কিভাবে পেটে সেলাই করিয়ে নেয়। তিনি এ বিষয়ে কোন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নয়। রক্তক্ষরণও বন্ধ হচ্ছিল না। কৌশলে রাজশাহীতে রেফার করে। আমার স্ত্রীর অবস্থা এখনো সংকটাপন্ন। আমরা এর বিচার চাই। মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছি ডাক্তার ও ক্লিনিক মালিকের বিরুদ্ধে।
এ বিষয়ে একতা ক্লিনিকের মার্কেটিং অফিসার আব্দুর রউফ বলেন, ডা. তানিয়ার শিখানো মতোই আমি সেলাই করেছি।
অভিযুক্ত ডাক্তার তানিয়া রহমান তনিকে ফোন করলে তিনি বলেন, চেম্বারে রোগি দেখছি ৫ মিনিট পর আপনাকে কলব্যাক করছি বলে এই প্রতিবেদকের নাম্বার ব্লাকলিস্টে রাখেন। পরে অন্য আরেকটি নাম্বার থেকে ফোন করা হলেও তিনি ফোনকল রিসিভ করেননি।
ডাক্তার তানিয়ার স্বামী ডা. আদনান ফারুককেও ফোন করা হলে তিনি ফোন রিসিভ না করায় কথা বলা সম্ভব হয়নি।
ক্লিনিক মালিক মাসুদুর আলম (আগা) বলেন, এ ঘটনায় আমরা দায়ী নই। যেসব ডাক্তার এর সাথে জড়িত তাদের সঙ্গে কথা বলুন।
সিভিল সার্জন ডা. মো. নজরুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আপনার কাছে থেকে শুনেছি, খোঁজ নিয়ে অবশ্যই দেখবো।