উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা উত্তরপত্র মূল্যায়ন
পরীক্ষা পেছালেও যথাসময়েই খাতা দিতে তাগাদা
- সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৬:৩২:৫০ অপরাহ্ন, রবিবার, ৪ অগাস্ট ২০২৪ ৬৭ বার পড়া হয়েছে
কোটা আন্দোলনের প্রভাব পড়েছে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার উত্তরপত্র মূল্যায়নের পর প্রধান পরীক্ষকের কাছে খাতা পৌঁছানো নিয়ে। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা পিছিয়ে গেলেও বন্টনকৃত ৩ বিষয়ের উত্তর পত্র মূল্যায়ন শেষে প্রধান পরীক্ষকের কাছে খাতা পৌঁছানো নিয়ে ভোগান্তিতে পড়েছেন পরীক্ষকরা। প্রধান পরীক্ষকরা তাগাদা দিয়ে বলছেন পোস্ট অফিসের মাধ্যমে খাতা না দিয়ে নির্ধারিত সময়েই সরাসরি বাড়ি এসে খাতা দিয়ে যেতে।
গত ৩০ জুন শুরু হওয়া উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা উত্তরপত্র মূল্যায়নের জন্য দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের তিনটি (বাংলা ১ম ও ২য় পত্র এবং ইংরেজি ১ম পত্র ) বিষয়ের উত্তরপত্র গত জুলাইয়ের ১৪ ও ১৫ তারিখে বাংলা ১ম ও ২য় পত্র এবং ১৬ জুলাই ইংরেজি ১ম পত্র বোর্ড থেকে বিতরণ করা হয়। পরীক্ষক উত্তরপত্র মূল্যায়ন শেষে প্রধান পরীক্ষক কাছে হলে সরাসরি এবং দ‚র- দ‚রান্তের হলে পোস্ট অফিসের মাধ্যমে পৌঁছানোর নিয়ম।
কিন্তু বর্তমানে পরীক্ষা পিছিয়ে যাওয়ায় এবং পোস্ট অফিস- ট্রেনে খাতা পৌঁছানো ছাত্র আন্দোলনের কারণে অনিরাপদ হওয়ায় প্রধান পরীক্ষকগণ নির্ধারিত সময়েই সরাসরি বাড়ি এসে খাতা দিয়ে দেওয়ার তাগাদা দিয়ে আসছেন। এতে করে যাদের প্রধান পরীক্ষক দ‚র- দ‚রান্তে রয়েছেন তাদের বাড়িতে গিয়ে উত্তরপত্র পৌঁছানো নিয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন পরীক্ষকরা।
শিক্ষা বোর্ড সূত্র বলছে, নির্ধারিত সময়ে খাতা দেয়া স্থগিত করা হয়েছে। কিন্তু প্রধান পরীক্ষকরা বলছেন এমন নির্দেশনা তারা বোর্ড থেকে পাননি। তারা গত ২ আগস্ট দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ড থেকে ‘এইচএসসি-২৪ পরীক্ষায় ওএমআর-এর মাঝের অংশ কম্পিউটার সেল, রাজশাহীতে জমার তারিখ (১ম ও ২য় কিস্তি) অনিবার্য কারণবশত: স্থগিত করা হলো।পরবর্তীতে নতুন জমার তারিখ জানানো হবে।’এই খুদে বার্তাটি পান।পরীক্ষকদের নির্ধারিত সময়েই উত্তরপত্র মূল্যায়ন শেষে আমাদের কাছে পৌঁছাতে হবে ।
বঙ্গবন্ধু সরকারি কলেজ ফুলবাড়ী, দিনাজপুরের বাংলা বিষয়ের পরীক্ষক প্রভাষক আবু হানিফা মন্ডল বলেন, আমার প্রধান পরীক্ষক ৪০ কি. মি. দূরে। যথাসময়েই খাতা হাতে হাতে দিতে প্রধান পরীক্ষক ফোন দেন। অথচ বোর্ড নাকি পরীক্ষা পিছিয়ে যাওয়ার জন্য সময় বাড়িয়ে দিয়েছেন প্রধান পরীক্ষককে উত্তরপত্র পৌঁছে দিতে,তা জানানো হয়নি।
দিনাজপুরের ফুলবাড়ীর শহীদ স্মৃতি আদর্শ কলেজের সহকারী অধ্যাপক আব্দুর রউফ বলেন, আমি অসুস্থ মানুষ।আমার প্রধান পরীক্ষক পার্বতীপুর উপজেলার খোলাহাটি কলেজের ম্যাডাম।এতদূরে গিয়ে পরীক্ষার খাতা দিয়ে আসা খুবই কষ্টকর।পোস্ট অফিসের মাধ্যমে হলে অনেকের জন্য ভালো হতো।
পঞ্চগড়ের আটোয়ারি মীর্জা গোলাম হাফিজ ডিগ্রি কলেজের ইংরেজি বিষয়ের সহকারী অধ্যাপক মো. ফরহাদ হোসেন বলেন, বোর্ড থেকে উত্তরপত্র পৌঁছানোর তারিখ বাড়ানো হয়েছে,তা আমার জানা নেই।তবে পরীক্ষা পিছিয়ে যাওয়ায় এবং কোটা আন্দোলনের প্রভাব ট্রেন- ডাক বিভাগের উপর পড়ায় প্রধান পরীক্ষককে উত্তরপত্র পাঠানোর সময় বাড়িয়ে দেয়া উচিত ছিল।তাতে ভোগান্তি কম হতো।
দিনাজপুরের পার্বতীপুর খোলাহাটি কলেজের সহকারী অধ্যাপক এবং দিনাজপুর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের বাংলা দ্বিতীয় পত্রের প্রধান পরীক্ষক মোছা. রাফেয়া জাহান প্রামাণিক বলেন, বোর্ড থেকে প্রধান পরীক্ষদের ২ আগস্ট একটি মেসেজ দেয়া হয়েছে। তাতে উল্লেখ করা হয়েছে প্রধান পরীক্ষদের ওএমআর-এর মাঝের অংশ কম্পিউটার সেল, রাজশাহীতে জমার তারিখ প্রথম কিস্তি ১ আগস্ট এবং দ্বিতীয়/শেষ কিস্তি ১১ আগস্ট নিবার্য কারণবশত: স্থগিত করা হলো। সাধারণ পরীক্ষকদের সময় বাড়ানো হয়নি।
ফুলবাড়ী পোস্ট অফিসের পোস্ট মাস্টার মো. মাহবুবুর রহমান বুলবুল বলেন, আমাদেরকে কেই চলমান উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার খাতা দেননি। হয়তো দিলে আমরা যথাযথভাবে যথাস্থানে পৌঁছানোর চেষ্টা করতাম।
দিনাজপুর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর মীর সাজ্জাদ আলী সমকালকে বলেন, ‘গত ২ আগস্ট পরীক্ষকদের “এইচএসসি-২৪ পরীক্ষায় ওএমআর-এর মাঝের অংশ কম্পিউটার সেল, রাজশাহীতে জমার তারিখ (১ম ও ২য় কিস্তি) অনিবার্য কারণবশত: স্থগিত করা হলো। পরবর্তীতে নতুন জমার তারিখ জানানো হবে।” এই মেসেজটি দেয়া হয়েছে।’ তবে এই মেসেজটি কোনো ক্রমেই সাধারণ পরীক্ষকদের নয় বলে প্রধান পরীক্ষকরা জানিয়েছেন।