দেশবাসীর উদ্দেশে তারেক রহমানের ভিডিও বার্তা
- সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৯:০২:৫৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ৫ অগাস্ট ২০২৪ ৬৫ বার পড়া হয়েছে
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান চলমান অবস্থার প্রেক্ষিতে দেশবাসীকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়ে ভিডিও বার্তা দিয়েছেন । সোমবার( ৫ আগস্ট) এক ভিডিও বার্তায় এ আহ্বান জানান তিনি ।
ভিডিও বার্তার শুরুতে তারেক রহমান বলেন, গৌরবজনক ঐতিহাসিক এ মুহূর্তে বাংলাদেশের সাহসী ছাত্রজনতাকে বীরোচিত অভিনন্দন । হাজারও শহীদের প্রাণের বিনিময়ে জনতার ঐতিহাসিক বিপ্লবের মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনার পতন হয়েছে । রাহুমুক্ত হয়েছে প্রিয় বাংলাদেশ । জনতার বিপ্লবের প্রথম ধাপ চূড়ান্তভাবে সফল হয়েছে । লাখো শহীদের প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত বাংলাদেশ কখনো পরাজয় মানতে পারে না । এই ঐতিহাসিক বিপ্লবের মধ্য দিয়ে আবারও প্রমাণিত হয়েছে, দল- মত- নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধ থাকলে এ বাংলাদেশকে কেউ কখনো পরাজিত করতে পারবে না ।
তিনি আরও বলেন, বিজয়ের এ ঐতিহাসিক মুহূর্তে আমি আজ সেইসব মায়েদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই, এই গণবিপ্লবে যারা তাদের প্রিয় সন্তান হারিয়েছেন । এভাবে গত ১৫ বছরের ফ্যাসিবাদী শাসনকালে অনেক সন্তান তার প্রিয়তম পিতা হারিয়েছেন, অনেক স্ত্রী প্রিয়তম স্বামী হারিয়েছেন গুম খুন অপহরণ করে অসংখ্য মায়ের বুক খালি করে দেওয়া হয়েছে । আপনাদের সন্তানের শহীদি মৃত্যু স্বজনদের ত্যাগ তিতিক্ষায় ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আরেকটি বিজয় দেখেছে বাংলাদেশ ।
তারেক রহমান বলেন, জনতার ঐতিহাসিক বিপ্লব সফল করতে গিয়ে অসংখ্য ছাত্রজনতা আহত হয়েছেন । বাসায়, হাসপাতালে কিংবা ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন যন্ত্রণাবিদ্ধ সময়ে সমস্ত ভালোবাসা নিয়ে আপনাদের পাশে আজ সারা বাংলাদেশ । সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে গিয়ে অসংখ্য মানুষ মিথ্যা মামলা ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলায় গ্রেপ্তারের শিকার হয়েছেন । কারাগারে নিক্ষিপ্ত হয়েছেন । অবিলম্বে তাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং তাদের কারামুক্তির দাবি জানাচ্ছি । একইসঙ্গে, ছাত্রছাত্রীরা যাতে আবার স্বাভাবিকভাবে হলে, হোস্টেলে, ক্লাসে ফিরতে পারে এবং পরীক্ষায় অংশ নিতে পারে, আশা করি সরকার সবার আগে সেই পদক্ষেপ গ্রহণ করবে ।
তিনি বলেন, দেশের ১৮ কোটি মানুষকে জিম্মি করে সাড়ে ১২ কোটি ভোটারের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়ে বাংলাদেশকে তাবেদার রাষ্ট্রে পরিণত করা হয়েছিল । গণহত্যাকারী, সরকারের পতনের মধ্য দিয়ে জনগণ তাদের গণতন্ত্র, মানবাধিকার, লুণ্ঠিত ভোটের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার পথ সুগম করেছে । এর মধ্য দিয়ে জনগণের বিপ্লবের প্রথম ধাপ সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে । এরপর একটি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের মধ্য দিয়ে যেদিন দেশের সাড়ে ১২ কোটি ভোটার নিরাপদে নিশ্চিন্তে ভোট দিয়ে জনগণের কাছে জবাবদিহিমূলক সরকার প্রতিষ্ঠা করতে পারবে রাষ্ট্র- সরকার- শাসন- প্রশাসনে মুক্তিযুদ্ধের মূলমন্ত্র সাম্য- মানবিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করতে পারবে সর্বোপরি একটি গণতান্ত্রিক বৈষম্যহীন রাষ্ট্র ও সমাজ গড়তে পারবে তখনই জনতার ঐতিহাসিক বিপ্লবের চূড়ান্ত সফলতা আসবে ।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন বলেন, জনতার ঐতিহাসিক বিপ্লবকে চূড়ান্ত লক্ষ্যে পৌঁছতে তাই যথাসম্ভব দ্রুততম সময়ের মধ্যে একটি অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন করতে হবে । জনগণের দ্বারা নির্বাচিত প্রতিনিধিদের কাছে দ্রুততম সময়ের মধ্যে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে । একটি বৈষম্যহীন গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে একটি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের জন্য বিএনপিসহ বাংলাদেশের প্রতিটি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল সবরকমের সহযোগিতা করবে ।
তিনি আরও বলেন, প্রিয় দেশবাসী, এবার আপনাদের কাছে আমি একটি বিনীত আহ্বান রাখতে চাই । বিজয়ীর কাছে পরাজিতরা নিরাপদ থাকলে বিজয়ের আনন্দ মহিমান্বিত হয় । সুতরাং, বিজয়ের এই আনন্দঘন সময় রাহুমুক্তির এই ঐতিহাসিক মুহূর্ত শান্তভাবে উদযাপন করুন । অনুগ্রহ করে কেউ প্রতিশোধ কিংবা প্রতিহিংসাপরায়ণ হবেন না । কেউ নিজের হাতে আইন তুলে নেবেন না । অর্জিত বিজয় যাতে লক্ষচ্যুত না হয় সে ব্যাপারে সতর্ক এবং সজাগ দৃষ্টি রাখার জন্য আপনাদের প্রতি আহ্বান ।’ ৫২,’ ৭১ কিংবা’ ৯০- এর মতো ছাত্রজনতা আবারও একটি বিজয়ের ইতিহাস রচনা করেছে । প্রিয় দেশবাসীকে আবারও বীরোচিত অভিনন্দন ।