ঢাকা ১২:৪৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গাজী টায়ার কারখানা আগুন

তাপ ও ধোঁয়া কমে গেলে শুরু হবে উদ্ধার কার্যক্রম

রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৭:২৮:৫৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৭ অগাস্ট ২০২৪ ১৭ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি


নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের রূপসীতে অবস্থিত গাজী টায়ার কারখানায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসলেও ৩২ ঘন্টা পার হয়ে গেলেও নিখোঁজদের উদ্ধার কার্যক্রম করতে পারেনি ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা। মঙ্গলবার (২৭ আগষ্ট) বিকেল পর্যন্ত কারখানার ৬তলা ভবনটির ভেতরে থেমে থেমে আগুন জলছে। ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা এখনও আগুন নেভানোর কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

এদিকে, দীর্ঘ সময় আগুন থাকায় ভবনটি ঝুকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। খসে খসে পড়ছে আস্তর ও ইটের গাথুনি। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনার শুরুতে ১৪ জনকে উদ্ধার করলেও এখনও কারখানার ভবনটিতে আটকা পড়ে ১৭৬ জন নিখোঁজ বলে দাবি করেছেন নিখোঁজদের স্বজনরা। নিখোঁজদের সন্ধানে স্বজনরা কারখানার সামনে অবস্থান নিয়ে ভিড় করছেন। লুটপাটসহ সকল ধরনের অরাজকতা বন্ধ করতে আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা অবস্থান নিয়েছেন।

গাজী টায়ারে আগুনের ঘটনায় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট হামিদুর রহমানের নেতৃত্বে ৮ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুর দেড়টার দিকে গাজী টায়ার কারখানায় নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মাহমুদুল হক সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। আর এই তদন্ত কমিটিতে বিদ্যুৎ কল কারখানা ফায়ার সার্ভিসসহ সব বিভাগের লোকজনই রয়েছে। এ সময় জেলা প্রশাসক ক্ষতিগ্রস্থ্য গাজী টায়ার কারখানা পরিদর্শন করেন।

Oplus_0

কারখানা পরিদর্শণ শেষে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মাহমুদুল হক বলেন, ৮ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আমি উপজেলা নির্বাহী অফিসার আহসান মাহমুদ রাসেলকে নির্দেশ দিয়েছি ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের একটি তালিকা তালিকা তৈরি করতে। ঘটনা তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গাজী টায়ারের যে ভবনটি সে ভবনের ভেতরে সালফারসহ ক্যামিকেল থাকার কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসলেও তাপ ও ধোয়া রয়ে গছে এ কারণে উদ্ধার কাজ চালানো যাচ্ছে না। খুব দ্রুত উদ্ধার কাজ শুরু করা হবে। নিখোঁজদের একটি তালিকা তৈরি করা হবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে। মঙ্গলবার সকালে পুলিশের ক্রাইম সিন ইউনিটের পুলিশ পরিদর্শক জাহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে ৩ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল কারখানা পরিদর্শন করেন।

অপরদিকে, গাজী টায়ারের ছয়তলা ভবনের আগুন নিয়ন্ত্রণের ৩২ ঘন্টা পেরিয়ে গেলেও উদ্ধার কাজ শুরু করতে পারেনি ফায়ার সার্ভিস। মঙ্গলবার সকাল ১০ টা পর্যন্ত গাজী টায়ারে উদ্ধার কাজ শুরু করতে পারেনি ফায়ার সার্ভিস।

এর আগে, গত সোমবার সন্ধ্যা ৭ টা ৫ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণের এসেছে বলে সংবাদসম্মেলনে জানিয়েছিলেন, ঢাকা ফুলবাড়িয়া ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক লে. কর্ণেল রেজাউল করিম।

এদিকে, মঙ্গলবার সকাল থেকেই নিখোঁজদের স্বজনরা কারখানার ভেতরে ও বাইরে এসে ভীড় জমাতে থাকে। উদ্ধার কাজ শুরু না হওয়ায় তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এ পর্যন্ত ১৭৬ জন নিখোঁজের দাবি জানিয়েছেন স্বজনরা। তবে, শেষ মুহুর্তে ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে নিখোঁজ বা উদ্ধারের বিষয়ে কোন সুস্পষ্ট বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

নাম না প্রকাশ শর্তে ফায়ার সার্ভিসের কয়েকজন কর্মীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ভবনটিতে দীর্ঘসময় ধরে আগুন জ¦লার কারণে ভবনটি ধ্বসের সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া ভবনের আগুন নিভে গেলেও ভেতরে ধোয়া ও তাপের কারণে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ভবনে প্রবেশ করতে পারছে না। তবে, তারা পানি নিয়ে তাপ ও ধোঁয়া কমিয়ে আনার চেষ্টা চলছে। তাপ ও ধোঁয়া কমে গেলে হয়তো উদ্ধার অভিযান শুরু হবে।

সাবেক পাট ও বস্ত্রমন্ত্রী এবং স্থানীয় সংসদ সদস্য গোলাম দস্তগীর মালিকানাধীন গাজী টায়ার ফ্যাক্টরিতে দ্বিতীয় বারের মতো আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে। গত (২৫ আগস্ট) রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে ফ্যাক্টরির ভেতরে থাকা ৬তলা বিশিষ্ট একটি ভবনে আগুন লাগার পর সোমবার (২৬) আগস্ট সন্ধ্যায় ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। আগুন নেভানোর জন্য ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিট টানা কাজ চালিয়েছেন। কারখানার ভবনটিতে আটকা পড়ে ১৭৬ জন ব্যক্তি নিখোঁজ বলে দাবি করেছেন নিখোঁজদের স্বজনরা। ফায়ার সার্ভিসের কাছে স্বজনরা নিখোঁজদের নাম ঠিকানা লেখালেও পরে আবার ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে তা অস্বীকার করা হয়। পরে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যেগে এবং থানা পুলিশের উপস্থিতিতে স্থানীয় শিক্ষার্থীরা আবারো স্বজনদের কাছ থেকে নিখোঁজদের নাম পরিচয় লেখিয়ে একটি তালিকা তৈরি করা অব্যাহত রেখেছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

গাজী টায়ার কারখানা আগুন

তাপ ও ধোঁয়া কমে গেলে শুরু হবে উদ্ধার কার্যক্রম

সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৭:২৮:৫৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৭ অগাস্ট ২০২৪


নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের রূপসীতে অবস্থিত গাজী টায়ার কারখানায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসলেও ৩২ ঘন্টা পার হয়ে গেলেও নিখোঁজদের উদ্ধার কার্যক্রম করতে পারেনি ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা। মঙ্গলবার (২৭ আগষ্ট) বিকেল পর্যন্ত কারখানার ৬তলা ভবনটির ভেতরে থেমে থেমে আগুন জলছে। ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা এখনও আগুন নেভানোর কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

এদিকে, দীর্ঘ সময় আগুন থাকায় ভবনটি ঝুকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। খসে খসে পড়ছে আস্তর ও ইটের গাথুনি। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনার শুরুতে ১৪ জনকে উদ্ধার করলেও এখনও কারখানার ভবনটিতে আটকা পড়ে ১৭৬ জন নিখোঁজ বলে দাবি করেছেন নিখোঁজদের স্বজনরা। নিখোঁজদের সন্ধানে স্বজনরা কারখানার সামনে অবস্থান নিয়ে ভিড় করছেন। লুটপাটসহ সকল ধরনের অরাজকতা বন্ধ করতে আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা অবস্থান নিয়েছেন।

গাজী টায়ারে আগুনের ঘটনায় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট হামিদুর রহমানের নেতৃত্বে ৮ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুর দেড়টার দিকে গাজী টায়ার কারখানায় নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মাহমুদুল হক সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। আর এই তদন্ত কমিটিতে বিদ্যুৎ কল কারখানা ফায়ার সার্ভিসসহ সব বিভাগের লোকজনই রয়েছে। এ সময় জেলা প্রশাসক ক্ষতিগ্রস্থ্য গাজী টায়ার কারখানা পরিদর্শন করেন।

Oplus_0

কারখানা পরিদর্শণ শেষে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মাহমুদুল হক বলেন, ৮ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আমি উপজেলা নির্বাহী অফিসার আহসান মাহমুদ রাসেলকে নির্দেশ দিয়েছি ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের একটি তালিকা তালিকা তৈরি করতে। ঘটনা তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গাজী টায়ারের যে ভবনটি সে ভবনের ভেতরে সালফারসহ ক্যামিকেল থাকার কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসলেও তাপ ও ধোয়া রয়ে গছে এ কারণে উদ্ধার কাজ চালানো যাচ্ছে না। খুব দ্রুত উদ্ধার কাজ শুরু করা হবে। নিখোঁজদের একটি তালিকা তৈরি করা হবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে। মঙ্গলবার সকালে পুলিশের ক্রাইম সিন ইউনিটের পুলিশ পরিদর্শক জাহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে ৩ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল কারখানা পরিদর্শন করেন।

অপরদিকে, গাজী টায়ারের ছয়তলা ভবনের আগুন নিয়ন্ত্রণের ৩২ ঘন্টা পেরিয়ে গেলেও উদ্ধার কাজ শুরু করতে পারেনি ফায়ার সার্ভিস। মঙ্গলবার সকাল ১০ টা পর্যন্ত গাজী টায়ারে উদ্ধার কাজ শুরু করতে পারেনি ফায়ার সার্ভিস।

এর আগে, গত সোমবার সন্ধ্যা ৭ টা ৫ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণের এসেছে বলে সংবাদসম্মেলনে জানিয়েছিলেন, ঢাকা ফুলবাড়িয়া ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক লে. কর্ণেল রেজাউল করিম।

এদিকে, মঙ্গলবার সকাল থেকেই নিখোঁজদের স্বজনরা কারখানার ভেতরে ও বাইরে এসে ভীড় জমাতে থাকে। উদ্ধার কাজ শুরু না হওয়ায় তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এ পর্যন্ত ১৭৬ জন নিখোঁজের দাবি জানিয়েছেন স্বজনরা। তবে, শেষ মুহুর্তে ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে নিখোঁজ বা উদ্ধারের বিষয়ে কোন সুস্পষ্ট বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

নাম না প্রকাশ শর্তে ফায়ার সার্ভিসের কয়েকজন কর্মীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ভবনটিতে দীর্ঘসময় ধরে আগুন জ¦লার কারণে ভবনটি ধ্বসের সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া ভবনের আগুন নিভে গেলেও ভেতরে ধোয়া ও তাপের কারণে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ভবনে প্রবেশ করতে পারছে না। তবে, তারা পানি নিয়ে তাপ ও ধোঁয়া কমিয়ে আনার চেষ্টা চলছে। তাপ ও ধোঁয়া কমে গেলে হয়তো উদ্ধার অভিযান শুরু হবে।

সাবেক পাট ও বস্ত্রমন্ত্রী এবং স্থানীয় সংসদ সদস্য গোলাম দস্তগীর মালিকানাধীন গাজী টায়ার ফ্যাক্টরিতে দ্বিতীয় বারের মতো আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে। গত (২৫ আগস্ট) রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে ফ্যাক্টরির ভেতরে থাকা ৬তলা বিশিষ্ট একটি ভবনে আগুন লাগার পর সোমবার (২৬) আগস্ট সন্ধ্যায় ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। আগুন নেভানোর জন্য ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিট টানা কাজ চালিয়েছেন। কারখানার ভবনটিতে আটকা পড়ে ১৭৬ জন ব্যক্তি নিখোঁজ বলে দাবি করেছেন নিখোঁজদের স্বজনরা। ফায়ার সার্ভিসের কাছে স্বজনরা নিখোঁজদের নাম ঠিকানা লেখালেও পরে আবার ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে তা অস্বীকার করা হয়। পরে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যেগে এবং থানা পুলিশের উপস্থিতিতে স্থানীয় শিক্ষার্থীরা আবারো স্বজনদের কাছ থেকে নিখোঁজদের নাম পরিচয় লেখিয়ে একটি তালিকা তৈরি করা অব্যাহত রেখেছেন।