তানোরে আ’ লীগের নেতাকর্মী ও সমর্থকের বাড়িতে হামলা-ভাংচুর (ভিডিও)
- সংবাদ প্রকাশের সময় : ০২:২৬:১২ অপরাহ্ন, রবিবার, ১১ অগাস্ট ২০২৪ ২১৭ বার পড়া হয়েছে
রাজশাহীর তানোরে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও সমর্থকের বাড়িঘর আর দোকানপাটে, হামলা, ভাংচুর লুটপাট চালানো হয়েছে। ৫ আগস্ট বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্র্মী ও সমর্থকরা এমন লুটপাট ও হামলা চালায়। এছাড়াও তাদের অব্যহত হুমকিতে প্রাণের ভয়ে রোববার (১১ আগস্ট) পর্যন্ত ৬ দিন ধরে গ্রামছাড়া চেয়ারম্যান ও বেশ কয়েকটি পরিবার।
উপজেলার কামারগাঁ ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা শফি কামাল মিন্টু জানান, সরকার পতনের পরদিন ৬ আগস্ট সকালে তার বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা ভাংচুর চালিয়ে ১৮ টন চাল ও নগদ ৭ লাখ টাকা লুটপাট করে তান্ডব চালায় স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা। এছাড়াও তার ৭০ বছরের বৃদ্ধ পিতা মুকলেসুর রহমানকে মারধর করা হয়। এরআগে পালিয়ের্ ষা পান। তবে, প্রাণের ভয়ে এখন গ্রাম ছাড়া তিনি।
হামলাকারীরা হলো- কামারগাঁ গ্রামের বাসিন্দা ফেন্সি (৪০), প্রিন্স (৩২), টুকু (৩৮), মিশন (২৮), হাসান (৪০), মিঠু (৪০) ও সুফিয়ান (৪৫) ছাড়াও স্থানীয় বিএনপি ও যুবদলের এক দেড়শ নেতাকর্মী ও সমর্থকরা।
এদিকে উপজেলার কলমা ইউপির রামনাথপুর গ্রামের বাসিন্দা ভুকভোগী আতিকুর রহমান জানান, সরকার পতনের দিন রাত ৯টার দিকে জমিজমার মামলা সংক্রান্ত শত্রæতার জেরে তাদের বসতবাড়ি ও দোকানঘরে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়েছে। এছাড়াও রামনাথপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বই খাতা পুড়িয়ে ফেলা হয়। অপরদিকে, পানি খাবার মটর ভাংচুর করা হয়। এমন ধ্বংসযজ্ঞ চালায় একই গ্রামের বিএনপি নেতা ফাইজুদ্দিন (৫০), রফিক মাস্টার (৪৫) ও যুবদল নেতা বাশির (৪০) এবং এনতাজ আলী (৪২) ছাড়াও আরও বেশ কয়েকজন তাদের অনুসারী বিএনপির সন্ত্রাসি বাহিনী।
ফলে আতিকুর, এজাবুল ও জালাল উদ্দিনসহ ৩টি বাড়ির খাবার পানি বন্ধ হয়ে গেছে। এছাড়াও সুমন আলীর দোকান লুট করায় তার ব্যবসা বন্ধ হয়ে পড়েছে। এমন কি তাদের অব্যহত হুমকির মধ্যেও পাশের বাড়ি থেকেও খাবার পানি আনা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। এহেন পরিস্থিতিতে বিগত ৬ দিন ধরে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন একই গ্রামের আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী জালাল উদ্দিন (৪০), এজাবুল হক (৪৫), জুম্মন আলী (৩৫), সুজন আলী (৩০) ও সুমন আলী (৩০)।
এছাড়াও ৬ আগস্ট (মঙ্গলবার) রাতে উপজেলার মুন্ডুমালা পৌর ভবনে ব্যাপক ভাংচুর চালায়। এতে মেয়রের বসার স্থানের টেবিল ও অর্ধশত চেয়ার টেবিল এবং টিভি ছাড়াও সিসি ক্যামেরাই ব্যাপক ্ষয়্ষতি হয়। এরপরে দ্বিতীয় তলায় মেয়র এর ছেলের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ঘর ছিল সে ঘরের তালা ভেঙ্গে কমম্পিউটার, গুরুত্বর্পূণ কাগজপত্র কিছু মালামাল লুট ও ডয়ারের তালা ভেঙ্গে নগদ ১০ লাখ টাকা নিয়ে যায় দৃবৃত্তরা। এছাড়াও বাজারে ব্যক্তিগত কার্যালয়েও ব্যাপক ভাংচুর চালানো হয়।
একই রাতে পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আমির হোসেন ও সাবেক সভাপতি গোলাম মোস্তাফা বসার স্থানে থাকা কয়েকটি চেয়ার ভাংচুর চালানো হয়। এর একদিন আগে সোমবার রাতে শেখ হাসিনার পতনের পর বাজারের তিন রাস্তার মোড়ে বঙ্গবন্ধুর ম্যুর্যাল ভাংচুর করা হয়েছে।
পৌর মেয়র সাইদুর রহমান বলেন, তার কার্যালয়ে গভীর রাতে তালা ভেঙ্গে অনেক মূল্যবান মালামাল ভাংচুর ও নগদ ১০ লাখ টাকা লুট করা হয়েছে। সব মিলে ২০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়। মেয়র আরো বলেন, যারা এমন কাজ করেছেন তাদের চিহ্নিত করা হয়েছে। দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এর আগে তানোর পৌর আওয়ামী লীগ নেতা আবুল বাসার সুজনের গোল্লাপাড়াস্থ খামার হতে ৩টি গরু নিয়ে যায় আশপাশের বিএনপির নেতাকর্মী ও সমর্থকরা। এরমধ্যে গুবিরপাড়া গ্রামের লোকজন একটি গরু জবাই করে মাংস ভাগ-বাটোয়ারা করে নেয়। আর দুটি গরুর মধ্যে একটি আমশো গ্রামের এক বিএনপি নেতার বাড়িতে রয়েছে। তবে আরেক গরু আমশো গ্রামের লোকজনও জবাই করে মাংস ভাগাভাগি করে নেয় বলে জানান সুজনের ব্যবসায়ী পাটনার আয়েন উদ্দিন।
এ ব্যাপারে তানোর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি)’র সরকারি ০১৩২০১২২৬২০ নম্বরে ফোন দেয়া হলে অপর প্রান্ত থেকে বলা হয়, আমাদের কার্যক্রম স্বাভাবিক হলে তদন্ত সাপে্েষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।