ঢাকা ১০:৪৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

‘জো বাইডেন’ ও ‘জয়া’র ৩ মেয়ে? জানেন তাদের নাম

চট্টগ্রাম ব্যুরো
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ১০:১৫:১৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ মার্চ ২০২৪ ১২৬ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় বাঘ ‘জো বাইডেন’ ও বাঘিনী ‘জয়া’র ঘর আলো করে আসা তিন মেয়ের নাম রাখা হয়েছে- প্রকৃতি, স্রোতস্বিনী ও রূপসী। সোমবার (২৫ মার্চ) বেলা ১২টার দিকে নামকরণের আয়োজনে যোগ দেন জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় যান।

কিউরেটর শুভ বাঘ শাবক তিনটিকে খাঁচা থেকে বের করে জেলা প্রশাসকের হাতে তুলে দেন। এর মধ্য দিয়ে জন্মের একমাস পর শাবকগুলো মানুষের দৃষ্টির মধ্যে এল। জন্মমাস পার হওয়ার পর বাঘ শাবকগুলোকে প্রথমবারের মতো খাঁচার বাইরে কিছু সময়ের জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়। দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতেই ঘটা করে এ নামকরণের আয়োজন।

এসময় জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, তিনটি ব্যাঘ্র শাবকের বয়স একমাস পূর্ণ হয়েছে। তিনটিই মেয়ে। আমরা এগুলোর নামকরণ করেছি। একটির নাম প্রকৃতি, একটির নাম রূপসী এবং আরেকটির নাম স্রোতস্বিনী। বাঙালির আবহমান সংস্কৃতি ও প্রকৃতির সঙ্গে মিলিয়ে আমরা তিনটি বাঘের বাংলা নাম রেখেছি। এ তিনটি বাঘ শাবকের জন্ম হয়েছে ‘জো বাইডেন’ পরিবারে। প্যারিস জলবায়ু পরিবর্তন চুক্তিতে স্বাক্ষর করায় আমেরিকার প্রেসিডেন্টের সম্মানার্থে জো বাইডেন রাখা হয়েছিল বাঘটির নাম।

তিনি বলেন, গত ২৩ ফেব্রুয়ারি জো বাইডেন পরিবারে তিনটি বাচ্চার জন্ম হয়। সাতদিন পর আমরা লিঙ্গ নির্ধারণ করি যে, তিনটিই মেয়ে। প্রথমবারের মতো এগুলো আমরা উন্মুক্ত করেছি। এজন্য আমরা নামকরণের আয়োজন করেছি। ফিজিক্যালি এগুলো এখন যথেষ্ঠ ভালো আছে। মায়ের ভালো রেসপন্স পাচ্ছে। হাঁটাচলা-দৌঁড়ানো আস্তে আস্তে শিখতে শুরু করেছে। সামনে ঈদুল ফিতর, এবার ঈদের প্রধান আকর্ষণ হবে এ তিনটি ছোট বাঘ। শুভ জানান, চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় এ মুহূর্তে ১৭টি বাঘ আছে। এর মধ্যে পাঁচটি ছেলে ও ১২টি মেয়ে। এর মধ্যে আবার পাঁচটি বিরল সাদা বাঘ।

জেলা প্রশাসক বলেন, ২০১৬ সালে প্রথম চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় দুটি রয়েল বেঙ্গল টাইগার আমরা দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে নিয়ে এসেছিলাম। সেই দুটি বাঘ বংশবিস্তার করে এখন আমাদের ১৯টি বাঘ হয়েছে। প্রাণি বিনিময় চুক্তির আওতায় ঢাকা ও রংপুর চিড়িয়াখানায় দুটি বাঘ দিয়ে আমরা দুটি জলহস্তী পেয়েছি। সেজন্য এখন বাঘের সংখ্যা ১৭টি।

জানা গেছে, ২০১৬ সালের ৯ ডিসেম্বর ৩৩ লাখ টাকায় কেনা ১১ মাস বয়সী রাজ এবং ৯ মাস বয়সী পরীকে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় আনা হয়। ২০১৮ সালের ১৯ জুলাই বেঙ্গল টাইগার দম্পতি রাজ-পরীর তিনটি ছানার জন্ম হয়, যার মধ্যে দু্টি ছিল ‘হোয়াইট টাইগার’, অন্যটি কমলা-কালো ডোরাকাটা। পরদিন একটি সাদা বাঘ শাবক মারা যায়। অন্য সাদা বাঘিনীটি ‘শুভ্রা’। কমলা-কালো বাঘিনীটির নাম দেওয়া হয় ‘জয়া’। শুভ্রা বাংলাদেশে প্রথম সাদা বাঘ। সেই কমলা-কালো জয়া’র ঘরে ২০২০ সালের ১৪ নভেম্বর জন্ম নেয় তিন শাবক। কিন্তু প্রথমবার সন্তান জন্মদানের পর জয়া অসহিঞ্চু আচরণ শুরু করে। তার অবহেলায় পরদিন দু’টি শাবক মারা যায়। মুমূর্ষু অবস্থায় থাকা আরেকটির প্রাণ রক্ষায় নিজের হেফাজতে নেন চিড়িয়াখানার ভারপ্রাপ্ত কিউরেটর শুভ।

চিড়িয়াখানার কর্মীরা নিজেরাই দুধ খাইয়ে, নিবিড় পরিচর্যা করে, পেলে-পুষে বাঘের ছানাটিকে বাঁচিয়ে তোলেন। সাড়ে পাঁচ মাস পর ২০২১ সালের ২১ এপ্রিল ‘জো বাইডেন’ নামের বাঘের ছানাটিকে খাঁচায় ছেড়ে দেওয়া হয়।

শুভ তখন বাঘের ছানাটির নাম রেখেছিলেন ‘বাইডেন’, যদিও বলা হয়- প্যারিস জলবায়ু পরিবর্তন চুক্তিতে স্বাক্ষর করায় আমেরিকার প্রেসিডেন্টের সম্মানার্থে বাঘটির নাম রাখা হয় ‘জো বাইডেন’। মানুষের ঘরে বড় হওয়া সেই জো বাইডেনের ঔরসে গত ২৩ ফেব্রæয়ারি সন্ধ্যায় জন্ম নেয় তিন শাবক। মানুষের ঘরে বেড়ে ওঠা বাঘের ঔরসে শাবকের জন্ম বিরল ঘটনা বলেছিলেন চিড়িয়াখানার কর্মীরা।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

‘জো বাইডেন’ ও ‘জয়া’র ৩ মেয়ে? জানেন তাদের নাম

সংবাদ প্রকাশের সময় : ১০:১৫:১৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ মার্চ ২০২৪

চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় বাঘ ‘জো বাইডেন’ ও বাঘিনী ‘জয়া’র ঘর আলো করে আসা তিন মেয়ের নাম রাখা হয়েছে- প্রকৃতি, স্রোতস্বিনী ও রূপসী। সোমবার (২৫ মার্চ) বেলা ১২টার দিকে নামকরণের আয়োজনে যোগ দেন জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় যান।

কিউরেটর শুভ বাঘ শাবক তিনটিকে খাঁচা থেকে বের করে জেলা প্রশাসকের হাতে তুলে দেন। এর মধ্য দিয়ে জন্মের একমাস পর শাবকগুলো মানুষের দৃষ্টির মধ্যে এল। জন্মমাস পার হওয়ার পর বাঘ শাবকগুলোকে প্রথমবারের মতো খাঁচার বাইরে কিছু সময়ের জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়। দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতেই ঘটা করে এ নামকরণের আয়োজন।

এসময় জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, তিনটি ব্যাঘ্র শাবকের বয়স একমাস পূর্ণ হয়েছে। তিনটিই মেয়ে। আমরা এগুলোর নামকরণ করেছি। একটির নাম প্রকৃতি, একটির নাম রূপসী এবং আরেকটির নাম স্রোতস্বিনী। বাঙালির আবহমান সংস্কৃতি ও প্রকৃতির সঙ্গে মিলিয়ে আমরা তিনটি বাঘের বাংলা নাম রেখেছি। এ তিনটি বাঘ শাবকের জন্ম হয়েছে ‘জো বাইডেন’ পরিবারে। প্যারিস জলবায়ু পরিবর্তন চুক্তিতে স্বাক্ষর করায় আমেরিকার প্রেসিডেন্টের সম্মানার্থে জো বাইডেন রাখা হয়েছিল বাঘটির নাম।

তিনি বলেন, গত ২৩ ফেব্রুয়ারি জো বাইডেন পরিবারে তিনটি বাচ্চার জন্ম হয়। সাতদিন পর আমরা লিঙ্গ নির্ধারণ করি যে, তিনটিই মেয়ে। প্রথমবারের মতো এগুলো আমরা উন্মুক্ত করেছি। এজন্য আমরা নামকরণের আয়োজন করেছি। ফিজিক্যালি এগুলো এখন যথেষ্ঠ ভালো আছে। মায়ের ভালো রেসপন্স পাচ্ছে। হাঁটাচলা-দৌঁড়ানো আস্তে আস্তে শিখতে শুরু করেছে। সামনে ঈদুল ফিতর, এবার ঈদের প্রধান আকর্ষণ হবে এ তিনটি ছোট বাঘ। শুভ জানান, চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় এ মুহূর্তে ১৭টি বাঘ আছে। এর মধ্যে পাঁচটি ছেলে ও ১২টি মেয়ে। এর মধ্যে আবার পাঁচটি বিরল সাদা বাঘ।

জেলা প্রশাসক বলেন, ২০১৬ সালে প্রথম চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় দুটি রয়েল বেঙ্গল টাইগার আমরা দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে নিয়ে এসেছিলাম। সেই দুটি বাঘ বংশবিস্তার করে এখন আমাদের ১৯টি বাঘ হয়েছে। প্রাণি বিনিময় চুক্তির আওতায় ঢাকা ও রংপুর চিড়িয়াখানায় দুটি বাঘ দিয়ে আমরা দুটি জলহস্তী পেয়েছি। সেজন্য এখন বাঘের সংখ্যা ১৭টি।

জানা গেছে, ২০১৬ সালের ৯ ডিসেম্বর ৩৩ লাখ টাকায় কেনা ১১ মাস বয়সী রাজ এবং ৯ মাস বয়সী পরীকে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় আনা হয়। ২০১৮ সালের ১৯ জুলাই বেঙ্গল টাইগার দম্পতি রাজ-পরীর তিনটি ছানার জন্ম হয়, যার মধ্যে দু্টি ছিল ‘হোয়াইট টাইগার’, অন্যটি কমলা-কালো ডোরাকাটা। পরদিন একটি সাদা বাঘ শাবক মারা যায়। অন্য সাদা বাঘিনীটি ‘শুভ্রা’। কমলা-কালো বাঘিনীটির নাম দেওয়া হয় ‘জয়া’। শুভ্রা বাংলাদেশে প্রথম সাদা বাঘ। সেই কমলা-কালো জয়া’র ঘরে ২০২০ সালের ১৪ নভেম্বর জন্ম নেয় তিন শাবক। কিন্তু প্রথমবার সন্তান জন্মদানের পর জয়া অসহিঞ্চু আচরণ শুরু করে। তার অবহেলায় পরদিন দু’টি শাবক মারা যায়। মুমূর্ষু অবস্থায় থাকা আরেকটির প্রাণ রক্ষায় নিজের হেফাজতে নেন চিড়িয়াখানার ভারপ্রাপ্ত কিউরেটর শুভ।

চিড়িয়াখানার কর্মীরা নিজেরাই দুধ খাইয়ে, নিবিড় পরিচর্যা করে, পেলে-পুষে বাঘের ছানাটিকে বাঁচিয়ে তোলেন। সাড়ে পাঁচ মাস পর ২০২১ সালের ২১ এপ্রিল ‘জো বাইডেন’ নামের বাঘের ছানাটিকে খাঁচায় ছেড়ে দেওয়া হয়।

শুভ তখন বাঘের ছানাটির নাম রেখেছিলেন ‘বাইডেন’, যদিও বলা হয়- প্যারিস জলবায়ু পরিবর্তন চুক্তিতে স্বাক্ষর করায় আমেরিকার প্রেসিডেন্টের সম্মানার্থে বাঘটির নাম রাখা হয় ‘জো বাইডেন’। মানুষের ঘরে বড় হওয়া সেই জো বাইডেনের ঔরসে গত ২৩ ফেব্রæয়ারি সন্ধ্যায় জন্ম নেয় তিন শাবক। মানুষের ঘরে বেড়ে ওঠা বাঘের ঔরসে শাবকের জন্ম বিরল ঘটনা বলেছিলেন চিড়িয়াখানার কর্মীরা।