ঢাকা ১১:৫৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চা বিক্রেতা হাসান আলীর জীবন-সংগ্রাম

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ০১:০৬:৪৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৯ জুন ২০২৪ ১১৭ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

গরম চা ভর্তি ফ্লাক্স, সাথে একটি ব্যাগে ওয়ান টাইম চায়ের কাপ। রায়গঞ্জ উপজেলার ধানগড়া এলাকা ঘুরে হাঁক আ উ শব্দে বোঝানো হয় ‘এই চা গরম’, ‘গরম চা’। এভাবেই ফেরি করে চা বিক্রি করছেন জন্মগত বাক প্রতিবন্ধী হাসান আলী (২৮)।

করোনাকালীন লকডাউনে তার বাবার ছোট্ট চায়ের দোকানে এক সময় চা বিক্রি করতেন তিনি। আত্মবিশ্বাসী এই বাক প্রতিবন্ধী বেছে নিয়েছেন ব্যতিক্রমী আয়ের পথ। হাসান আলীর বাড়ি রায়গঞ্জ পৌরসভার রণতিথা গ্রামে । তার বাবার নাম আব্দুল হান্নান।

দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে মেজ সন্তান তিনি। ধানগড়া পুরাতন খেয়াঘাটে রয়েছে তার বাবার একটি চায়ের দোকান। লকডাউনের শুরু থেকে সরকারের নির্দেশনা মানতে বন্ধ রাখতে হয়েছিল বাবার দোকানটি। এরপর থেকে তিনি তার বাবার দেওয়া ফ্লাক্স নিয়ে উপজেলা সদর ধানগড়া এলাকা ঘুরে বিক্রি করছেন চা।

পৌর বাসিন্দা আব্দুল বাকি বিল্লাহ জানান, এক কাপ চায়ের জন্য মনটা আনচান করছে, লকডাউন থাকার কারণে বাইরে দোকানপাট বন্ধ। এমন সময় হাসান আলীর ‘আ’ উ শব্দে চায়ের ডাক, গ্রামের পরিবেশে যুক্ত করেছে নতুন মাত্রা।

প্রতিদিন ঘুরে ঘুরে প্রায় ১০০ থেকে ১৫০ কাপ চা বিক্রি করেন। এতে অন্তত ২শ’ থেকে তিনশত’ টাকা উপার্জন হয় হাসান আলীর। এ অর্থ দিয়ে বাবার সংসারে সহযোগিতা করার পাশাপাশি বড় ভাই ও ছোট বোনকে শিক্ষিত করে গড়ে তুলতে অবদান রাখেন।

রায়গঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি কেএম রফিকুল ইসলাম বলেন, একজন বাক প্রতিবন্ধী হয়েও নিজের উপর আত্মবিশ্বাসী হয়ে থেমে না থেকে চা বিক্রি করে চলেছে হাসান আলী। এজন্য আমি তার চা যেমন নিজে পান করি ঠিক অন্যদেরও সময় সুযোগে পান করাই। এতে আত্মতৃপ্তি পাই। বাক প্রতিবন্ধী হাসান আলীকে সরকারি, সামাজিক ও মানবিক সংগঠনের সহায়তায় উপজেলা সদরে একটি চায়ের দোকান করে দিলে প্রেরণা দিবে আরো অনেককে এই প্রত্যাশা অনেকের।

রায়গঞ্জ উপজেলা সমাজ সেবা অফিসার ইলিয়াস হোসেন বলেন, হাসান আলী ইতিমধ্যে প্রতিবন্ধী ভাতা পাচ্ছেন। তিনি বা তার পরিবার সহযোগিতার আবেদন করলে বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

চা বিক্রেতা হাসান আলীর জীবন-সংগ্রাম

সংবাদ প্রকাশের সময় : ০১:০৬:৪৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৯ জুন ২০২৪

গরম চা ভর্তি ফ্লাক্স, সাথে একটি ব্যাগে ওয়ান টাইম চায়ের কাপ। রায়গঞ্জ উপজেলার ধানগড়া এলাকা ঘুরে হাঁক আ উ শব্দে বোঝানো হয় ‘এই চা গরম’, ‘গরম চা’। এভাবেই ফেরি করে চা বিক্রি করছেন জন্মগত বাক প্রতিবন্ধী হাসান আলী (২৮)।

করোনাকালীন লকডাউনে তার বাবার ছোট্ট চায়ের দোকানে এক সময় চা বিক্রি করতেন তিনি। আত্মবিশ্বাসী এই বাক প্রতিবন্ধী বেছে নিয়েছেন ব্যতিক্রমী আয়ের পথ। হাসান আলীর বাড়ি রায়গঞ্জ পৌরসভার রণতিথা গ্রামে । তার বাবার নাম আব্দুল হান্নান।

দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে মেজ সন্তান তিনি। ধানগড়া পুরাতন খেয়াঘাটে রয়েছে তার বাবার একটি চায়ের দোকান। লকডাউনের শুরু থেকে সরকারের নির্দেশনা মানতে বন্ধ রাখতে হয়েছিল বাবার দোকানটি। এরপর থেকে তিনি তার বাবার দেওয়া ফ্লাক্স নিয়ে উপজেলা সদর ধানগড়া এলাকা ঘুরে বিক্রি করছেন চা।

পৌর বাসিন্দা আব্দুল বাকি বিল্লাহ জানান, এক কাপ চায়ের জন্য মনটা আনচান করছে, লকডাউন থাকার কারণে বাইরে দোকানপাট বন্ধ। এমন সময় হাসান আলীর ‘আ’ উ শব্দে চায়ের ডাক, গ্রামের পরিবেশে যুক্ত করেছে নতুন মাত্রা।

প্রতিদিন ঘুরে ঘুরে প্রায় ১০০ থেকে ১৫০ কাপ চা বিক্রি করেন। এতে অন্তত ২শ’ থেকে তিনশত’ টাকা উপার্জন হয় হাসান আলীর। এ অর্থ দিয়ে বাবার সংসারে সহযোগিতা করার পাশাপাশি বড় ভাই ও ছোট বোনকে শিক্ষিত করে গড়ে তুলতে অবদান রাখেন।

রায়গঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি কেএম রফিকুল ইসলাম বলেন, একজন বাক প্রতিবন্ধী হয়েও নিজের উপর আত্মবিশ্বাসী হয়ে থেমে না থেকে চা বিক্রি করে চলেছে হাসান আলী। এজন্য আমি তার চা যেমন নিজে পান করি ঠিক অন্যদেরও সময় সুযোগে পান করাই। এতে আত্মতৃপ্তি পাই। বাক প্রতিবন্ধী হাসান আলীকে সরকারি, সামাজিক ও মানবিক সংগঠনের সহায়তায় উপজেলা সদরে একটি চায়ের দোকান করে দিলে প্রেরণা দিবে আরো অনেককে এই প্রত্যাশা অনেকের।

রায়গঞ্জ উপজেলা সমাজ সেবা অফিসার ইলিয়াস হোসেন বলেন, হাসান আলী ইতিমধ্যে প্রতিবন্ধী ভাতা পাচ্ছেন। তিনি বা তার পরিবার সহযোগিতার আবেদন করলে বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে।