ঢাকা ০৫:৩৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চারদিকে থৈ থৈ পানি, পানিবন্দি মানুষ

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৪:৪৩:২৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ জুন ২০২৪ ৬২ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে প্লাবিত হয়েছে সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা। বন্যার পানিতে থৈ থৈ করছে উপজেলার সর্বত্রই। উপজেলা পরিষদ, থানা, হাসপাতাল, বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। ছাতক পৌরসভাসহ উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের প্রায় লক্ষাধিক মানুষ হয়ে পড়েছেন পানিবন্দি।

আশ্রয় কেন্দ্রে মানুষের ঠাঁই হচ্ছে না। এই উপজেলা এক সপ্তাহ ধরে বন্যাকবলিত। এখানে ৭৬টি আশ্রয় কেন্দ্রে প্রায় ৭ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে শুকনো ও রান্না করা খাবার দেওয়া হচ্ছে। এছাড়াও লোকজন উচু দালান ঘর এবং যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানি প্রবেশ করেনি তাতে আশ্রয় নিয়েছেন।

শহরের আশ্রয় কেন্দ্রে সরকারি-বেসরকারি সংস্থা ও ব্যাক্তি উদ্যোগে রান্না করা খাবার, শুকনো খাবার পৌছে দিলেও প্রত্যন্ত অঞ্চলের লক্ষাধিক পানিবন্দি মানুষ চরম দুর্ভোগে রয়েছেন। বিশুদ্ধ পানির সংকটে ভুগছেন দুর্গত এলাকার লোকজন।

উপজেলা সদরের সাথে সকল ইউনিয়নের সড়ক যোগাযোগ রয়েছে বিচ্ছিন্ন। ছাতক-দোয়ারাবাজার, ছাতক-সিলেট, ছাতক-সুনামগঞ্জ সড়কসহ সবকটি গ্রামীণ সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। নদীতে পানি বৃদ্ধি আর প্রবল স্রোতের কারনে কার্গোতে সব ধরনের লোড আনলোড বন্ধ রয়েছে। ছাতকে সুরমা, চেলা ও পিয়াইন নদীর পানি প্রবল বেগে প্রবাহিত হচ্ছে। ওই কারনে নৌযান চলাচলও রয়েছে সীমিত।

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (২০ জুন) সকালে ছাতক পয়েন্টে সুরমা নদীর পানি বিপৎ সীমার ১২৯ সেন্টিমিটার ওপর প্রবাহিত হচ্ছে। তবে এখানে গত দুইদিন ধরে বৃষ্টি কম হলেও ছাতকের উজানে ভারতের চেরাপুঞ্জিতে বেশী বৃষ্টি হচ্ছে। যে কারনে উজান থেকে ব্যাপক পরিমাণে ছাতকে পাহাড়ি ঢল নামছে।

উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের গণেশপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, উত্তর খুরমা ইউনিয়নের গদারমহল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ইসলামপুর উচ্চ বিদ্যালয়, হাদা চাঁনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ছাতক সদর ইউনিয়নের কাজিহাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কালারুকা ইউনিয়নের একটি কমিউনিটি সেন্টার সহ বিভিন্ন বন্যাশ্রয় কেন্দ্রে মানুষ, গবাদি পশুসহ একসাথে বসবাস করতে দেখা গেছে।

এদিকে, বন্যাকে পুঁজি করে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি করেছে। বন্যা পরিস্থিতি অবনতি হওয়ায় স্থানীয় ব্যবসায়ীরা চাল, ডাল, সিলিন্ডার গ্যাস, চিড়া, মুড়ি, মোমবাতিসহ নিত্যপণ্য গুদামজাত করেছেন। তারা প্রতি বস্তা চাল ৩০০-৪০০ টাকা, সিলিন্ডার গ্যাস ৪০০-৫০০ টাকা, প্রতি কেজি আলু ২০-৩০ টাকা, মোমবাতি প্রতি প্যাকেট ৩০-৪০ টাকা বৃদ্ধি করে বিক্রি করছেন।

ছাতক থানার অফিসার ইনচার্জ শাহ আলম জানান, ঘটনার সত্যতা পেলে প্রয়োজনে তিনি আইনের আশ্রয় নিবেন। ছাতক-দোয়ারাবাজার নির্বাচনী এলাকার সংসদ সদস্য, জাতীয় সংসদের সরকারি প্রতিশ্রুতি সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি মুহিবুর রহমান মানিক বন্যাকবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন। এ সময় তিনি বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে থাকা লোকজনদের সাথে কথা বলেন এবং খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

চারদিকে থৈ থৈ পানি, পানিবন্দি মানুষ

সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৪:৪৩:২৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ জুন ২০২৪

ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে প্লাবিত হয়েছে সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা। বন্যার পানিতে থৈ থৈ করছে উপজেলার সর্বত্রই। উপজেলা পরিষদ, থানা, হাসপাতাল, বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। ছাতক পৌরসভাসহ উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের প্রায় লক্ষাধিক মানুষ হয়ে পড়েছেন পানিবন্দি।

আশ্রয় কেন্দ্রে মানুষের ঠাঁই হচ্ছে না। এই উপজেলা এক সপ্তাহ ধরে বন্যাকবলিত। এখানে ৭৬টি আশ্রয় কেন্দ্রে প্রায় ৭ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে শুকনো ও রান্না করা খাবার দেওয়া হচ্ছে। এছাড়াও লোকজন উচু দালান ঘর এবং যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানি প্রবেশ করেনি তাতে আশ্রয় নিয়েছেন।

শহরের আশ্রয় কেন্দ্রে সরকারি-বেসরকারি সংস্থা ও ব্যাক্তি উদ্যোগে রান্না করা খাবার, শুকনো খাবার পৌছে দিলেও প্রত্যন্ত অঞ্চলের লক্ষাধিক পানিবন্দি মানুষ চরম দুর্ভোগে রয়েছেন। বিশুদ্ধ পানির সংকটে ভুগছেন দুর্গত এলাকার লোকজন।

উপজেলা সদরের সাথে সকল ইউনিয়নের সড়ক যোগাযোগ রয়েছে বিচ্ছিন্ন। ছাতক-দোয়ারাবাজার, ছাতক-সিলেট, ছাতক-সুনামগঞ্জ সড়কসহ সবকটি গ্রামীণ সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। নদীতে পানি বৃদ্ধি আর প্রবল স্রোতের কারনে কার্গোতে সব ধরনের লোড আনলোড বন্ধ রয়েছে। ছাতকে সুরমা, চেলা ও পিয়াইন নদীর পানি প্রবল বেগে প্রবাহিত হচ্ছে। ওই কারনে নৌযান চলাচলও রয়েছে সীমিত।

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (২০ জুন) সকালে ছাতক পয়েন্টে সুরমা নদীর পানি বিপৎ সীমার ১২৯ সেন্টিমিটার ওপর প্রবাহিত হচ্ছে। তবে এখানে গত দুইদিন ধরে বৃষ্টি কম হলেও ছাতকের উজানে ভারতের চেরাপুঞ্জিতে বেশী বৃষ্টি হচ্ছে। যে কারনে উজান থেকে ব্যাপক পরিমাণে ছাতকে পাহাড়ি ঢল নামছে।

উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের গণেশপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, উত্তর খুরমা ইউনিয়নের গদারমহল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ইসলামপুর উচ্চ বিদ্যালয়, হাদা চাঁনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ছাতক সদর ইউনিয়নের কাজিহাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কালারুকা ইউনিয়নের একটি কমিউনিটি সেন্টার সহ বিভিন্ন বন্যাশ্রয় কেন্দ্রে মানুষ, গবাদি পশুসহ একসাথে বসবাস করতে দেখা গেছে।

এদিকে, বন্যাকে পুঁজি করে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি করেছে। বন্যা পরিস্থিতি অবনতি হওয়ায় স্থানীয় ব্যবসায়ীরা চাল, ডাল, সিলিন্ডার গ্যাস, চিড়া, মুড়ি, মোমবাতিসহ নিত্যপণ্য গুদামজাত করেছেন। তারা প্রতি বস্তা চাল ৩০০-৪০০ টাকা, সিলিন্ডার গ্যাস ৪০০-৫০০ টাকা, প্রতি কেজি আলু ২০-৩০ টাকা, মোমবাতি প্রতি প্যাকেট ৩০-৪০ টাকা বৃদ্ধি করে বিক্রি করছেন।

ছাতক থানার অফিসার ইনচার্জ শাহ আলম জানান, ঘটনার সত্যতা পেলে প্রয়োজনে তিনি আইনের আশ্রয় নিবেন। ছাতক-দোয়ারাবাজার নির্বাচনী এলাকার সংসদ সদস্য, জাতীয় সংসদের সরকারি প্রতিশ্রুতি সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি মুহিবুর রহমান মানিক বন্যাকবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন। এ সময় তিনি বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে থাকা লোকজনদের সাথে কথা বলেন এবং খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেন।