ঢাকা ০৩:৩১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গরু কিনলে ফ্রি এসি-মোটরসাইকেল

মাগুরা প্রতিনিধি
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ১০:৫২:৩০ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ জুন ২০২৪ ১১৫ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

কোরবানির হাটে প্রতিযোগীতায় নেমেছে মহারাজ ও ভাগ্যরাজ। আরও এই নিয়ে পড়েছে হৈ চৈ। তাদের দেখতে উৎসুক জনতাও ভীড় করছেন। এমন কান্ড মাগুরার মোহাম্দপুরে।

জেলার মোহাম্মদপুরে বহুলবাড়িয়া ও খালিয়া গ্রামে ৩০ ও ৪০ মন ওজনের ষাঁড় দু’টির দাম হাকছেন ২০ ও ২৫ লাখ টাকা। বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে গরুর সাথে ক্রেতাকে পুরস্কার দেয়া হবে এসি ও মোটরসাইকেল।

প্রত্যন্ত দু’টি গ্রামে প্রাকৃতিক উপায়ে লালন পালন করা গরুগুলোকে তারা দাবি করছেন দেশের অন্যতম সেরা হিসেবে। কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে এ ধরনের গরু মোটাতাজাকরণ প্রকল্প কৃষকের অর্থনৈতিক ভিত্তি গড়ে দেওয়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এমনটাই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

সরেজমিনে বহুলবাড়িয়া গ্রামে জীবন বিশ্বাস ও মাধবীলতা বিশ্বাস এর বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিদিন সেখানে বিশাল আকার গরু মহারাজকে দেখতে ভীড় করেন শত শত মানুষ। বিশালাকার গরু বাইরে বের করতে হলে কমপক্ষে চারজনের সহায়তা প্রয়োজন। গোয়াল থেকে উঠোনে নিয়ে আসতেই রাজকীয় ভঙ্গিতে শব্দ করে নিজেকে জানান দেয় ছয় ফিট উচ্চতা ও ১৪ ফিট লম্বা কালো রঙের বিশালদেহী মহারাজ। এ যেন নিজের শ্রেষ্ঠ প্রমাণের বাদশাহী ঘোষণা।

গোয়াল ঘর থেকে মহারাজকে বের করতে ঘাম ঝড়াতে হয় মালিকপক্ষকে। এবারের কোরবানির ঈদে বাজারে ইতিমধ্যে ৩০ মন ওজনের মহারাজের নাম ছড়িয়ে পড়েছে।

অন্যদিকে, পার্শ্ববর্তী গ্রাম খালিয়ার কৃষক মোফাজ্জল হোসেন তার গোয়ালে দেশি পদ্ধতিতে লালন করেছেন ৪০ মন ওজনের ভাগ্যরাজ নামে একটি গরু । জন্মের পর থেকে নিজের মায়ের পাশাপাশি একই গোয়ালে থাকা আরও চারজন মা গাভীর দুধ খেয়ে বড় হওয়া ভাগ্যবান এই ষাঁড় গরুটির তাই নাম রাখা হয়েছে ভাগ্যরাজ।

এই মহারাজ এর মূল্য ২০ লাখ টাকা হাকিয়েছেন মালিক জীবন বিশ্বাস। আর ক্রেতার জন্য পুরস্কার হিসেবে ঘোষণা করেছেন একটি দুই টনের এসি।

অন্যদিকে, ভাগ্যরাজের মালিক মোফাজ্জল হোসেন এর পক্ষ থেকে তার জন্য ঘোষনা এসেছে পালসার মোটরসাইকেল এর মতো আকর্ষণীয় পুরস্কার। খামারি ও স্থানীয়দের দাবি সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপায় কৃত্রিম ফিডবিহীন প্রাকৃতিক খাবারে বিশালাকার মহারাজ ও ভাগ্যরাজ কোরবানির বাজারে ভালো মূল্যে বিক্রি হবে। তাদের সবার মুখে শোনা গেছে গরুগুলোর সুখ্যাতি।

জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগের তথ্যমতে, মাগুরা জেলায় এ বছর কোরবানি উপলক্ষে ছয় হাজার ৭৪৭ টি অনিবন্ধিত ও চারটি নিবন্ধিত গরু মোটাতাজাকরণ খামারে দুই হাজার ৩৯২ টি ষাড়, ৬৬৫টি বলদ ও আট হাজার ৪৭৭ টি গাভীসহ ৩২হাজার ২৩৪টি গরু মোটাতাজা করা হয়েছে।

সরকারি হিসাব অনুযায়ী জেলায় চলতি বছর মহিষ, ছাগল ও ভেড়াসহ ৯২ হাজার ৮৯১ টি পশু কোরবানিযোগ্য পশু হিসেবে তালিকাভুক্ত হয়েছে। জেলার চাহিদা হিসেবে ৬৯ হাজার ৬৭৮ টি বিক্রির পরও ২৩ হাজার ২২৩টি কোরবানিযোগ্য পশু উদ্বৃত্ত থাকবে।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মিহির কান্তি বিশ্বাস এ বিষয়ে জানান, কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে দেশীয় পদ্ধতিতে স্বল্প খরচে দানাদার খাবারের বিপরীতে প্রাকৃতিক খাবারের মাধ্যমে এ ধরনের গরু মোটাতাজাকরণ কৃষকের অর্থনীতি আরও মজবুত করবে ।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

গরু কিনলে ফ্রি এসি-মোটরসাইকেল

সংবাদ প্রকাশের সময় : ১০:৫২:৩০ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ জুন ২০২৪

কোরবানির হাটে প্রতিযোগীতায় নেমেছে মহারাজ ও ভাগ্যরাজ। আরও এই নিয়ে পড়েছে হৈ চৈ। তাদের দেখতে উৎসুক জনতাও ভীড় করছেন। এমন কান্ড মাগুরার মোহাম্দপুরে।

জেলার মোহাম্মদপুরে বহুলবাড়িয়া ও খালিয়া গ্রামে ৩০ ও ৪০ মন ওজনের ষাঁড় দু’টির দাম হাকছেন ২০ ও ২৫ লাখ টাকা। বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে গরুর সাথে ক্রেতাকে পুরস্কার দেয়া হবে এসি ও মোটরসাইকেল।

প্রত্যন্ত দু’টি গ্রামে প্রাকৃতিক উপায়ে লালন পালন করা গরুগুলোকে তারা দাবি করছেন দেশের অন্যতম সেরা হিসেবে। কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে এ ধরনের গরু মোটাতাজাকরণ প্রকল্প কৃষকের অর্থনৈতিক ভিত্তি গড়ে দেওয়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এমনটাই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

সরেজমিনে বহুলবাড়িয়া গ্রামে জীবন বিশ্বাস ও মাধবীলতা বিশ্বাস এর বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিদিন সেখানে বিশাল আকার গরু মহারাজকে দেখতে ভীড় করেন শত শত মানুষ। বিশালাকার গরু বাইরে বের করতে হলে কমপক্ষে চারজনের সহায়তা প্রয়োজন। গোয়াল থেকে উঠোনে নিয়ে আসতেই রাজকীয় ভঙ্গিতে শব্দ করে নিজেকে জানান দেয় ছয় ফিট উচ্চতা ও ১৪ ফিট লম্বা কালো রঙের বিশালদেহী মহারাজ। এ যেন নিজের শ্রেষ্ঠ প্রমাণের বাদশাহী ঘোষণা।

গোয়াল ঘর থেকে মহারাজকে বের করতে ঘাম ঝড়াতে হয় মালিকপক্ষকে। এবারের কোরবানির ঈদে বাজারে ইতিমধ্যে ৩০ মন ওজনের মহারাজের নাম ছড়িয়ে পড়েছে।

অন্যদিকে, পার্শ্ববর্তী গ্রাম খালিয়ার কৃষক মোফাজ্জল হোসেন তার গোয়ালে দেশি পদ্ধতিতে লালন করেছেন ৪০ মন ওজনের ভাগ্যরাজ নামে একটি গরু । জন্মের পর থেকে নিজের মায়ের পাশাপাশি একই গোয়ালে থাকা আরও চারজন মা গাভীর দুধ খেয়ে বড় হওয়া ভাগ্যবান এই ষাঁড় গরুটির তাই নাম রাখা হয়েছে ভাগ্যরাজ।

এই মহারাজ এর মূল্য ২০ লাখ টাকা হাকিয়েছেন মালিক জীবন বিশ্বাস। আর ক্রেতার জন্য পুরস্কার হিসেবে ঘোষণা করেছেন একটি দুই টনের এসি।

অন্যদিকে, ভাগ্যরাজের মালিক মোফাজ্জল হোসেন এর পক্ষ থেকে তার জন্য ঘোষনা এসেছে পালসার মোটরসাইকেল এর মতো আকর্ষণীয় পুরস্কার। খামারি ও স্থানীয়দের দাবি সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপায় কৃত্রিম ফিডবিহীন প্রাকৃতিক খাবারে বিশালাকার মহারাজ ও ভাগ্যরাজ কোরবানির বাজারে ভালো মূল্যে বিক্রি হবে। তাদের সবার মুখে শোনা গেছে গরুগুলোর সুখ্যাতি।

জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগের তথ্যমতে, মাগুরা জেলায় এ বছর কোরবানি উপলক্ষে ছয় হাজার ৭৪৭ টি অনিবন্ধিত ও চারটি নিবন্ধিত গরু মোটাতাজাকরণ খামারে দুই হাজার ৩৯২ টি ষাড়, ৬৬৫টি বলদ ও আট হাজার ৪৭৭ টি গাভীসহ ৩২হাজার ২৩৪টি গরু মোটাতাজা করা হয়েছে।

সরকারি হিসাব অনুযায়ী জেলায় চলতি বছর মহিষ, ছাগল ও ভেড়াসহ ৯২ হাজার ৮৯১ টি পশু কোরবানিযোগ্য পশু হিসেবে তালিকাভুক্ত হয়েছে। জেলার চাহিদা হিসেবে ৬৯ হাজার ৬৭৮ টি বিক্রির পরও ২৩ হাজার ২২৩টি কোরবানিযোগ্য পশু উদ্বৃত্ত থাকবে।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মিহির কান্তি বিশ্বাস এ বিষয়ে জানান, কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে দেশীয় পদ্ধতিতে স্বল্প খরচে দানাদার খাবারের বিপরীতে প্রাকৃতিক খাবারের মাধ্যমে এ ধরনের গরু মোটাতাজাকরণ কৃষকের অর্থনীতি আরও মজবুত করবে ।