ঢাকা ১১:৩৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

তদন্ত শুরু করেছে ৭ সদস্যের তদন্ত কমিটি

অশান্ত পাহাড়ে শান্তির প্রত্যাশা

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৮:৫৯:৪৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ৯ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

খাখাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটি দুই পার্বত্য জেলায় সহিংসতা ও সংঘর্ষের ঘটনার কারণ উদঘাটনে গঠিত ৭ সদস্যের তদন্ত কমিটি কাজ শুরু করেছেন। রোববার (২৯তশে সেপ্টেম্বর) তদন্ত কমিটির প্রধান চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার(উন্নয়ন) মোহাম্মদ নূরল্লাহ নূরীর নেতৃত্বে ৭ সদস্যের কমিটি খাগড়াছড়ির জেলার দীঘিনালার লারমা স্কয়ার এলাকা পরিদর্শন করেন ও ক্ষতিগ্রস্ত এবং প্রত্যক্ষদর্শীর সাথে কথা বলেন।

এরপর বিকেলে কমিটির সদস্যদের খাগড়াছড়ি জেলা সদরে পরিদর্শন ও সদর উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ও প্রত্যক্ষদর্শীর সাথে কথা বলেন।

তদন্ত কমিটির প্রধান মোহাম্মদ নূরল্লাহ নূরী বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত, প্রত্যক্ষদর্শী ও সাংবাদিকসহ সবার সাথে কথা বলে ঘটনার কারণ উদঘাটনের চেষ্টা করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, বুধবার(১৮ সেপ্টেম্বর) সকাল ৭টার দিকে মোটর সাইকেল খাগড়াছড়ি জেলা সদরে ফার্নিচার ব্যবসায়ী মো: মামুনকে মোটর সাইকেল চুরির অভিযোগে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনার জেরে সহিংসতায় ছড়িয়ে পড়ে। দীঘিনালায় অর্ধশতাধিক দোকানপাটে আগুন, স্বণির্ভরে গুলি বর্ষনের ঘটনা ঘটেছে। সহিংসতার ধারাবাহিকতায় খাগড়াছড়িতে ৩জন ও রাঙামাটি একজনসহ মোট ৪ জন নিহত হয়।

খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটিতে সহিংসতার কারণ উদঘাটনে গত বৃস্পতিবার (২৬শে সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার(উন্নয়ন) মোহাম্মদ নূরল্লাহ নূরীকে আহবায়ক করে সাত সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো: তোফায়েল ইসলাম। কমিটিকে আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে সরেজমিন পরিদর্শন ও তদন্তপূর্বক চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের কাছে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

তদন্ত কমিটির অন্য সদস্যরা হচ্ছেন, খাগড়াছড়ি অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট রোজলিন সহিদ চৌধুরী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(সদর সার্কেল) তৌফিক উল আলম, রাঙ্গামাটি ও বান্দরবানের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, দীঘিনালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মামুনুর রশীদ গন।

চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো: তোফায়েল ইসলামের স্বাক্ষর করা অফিস আদেশে সাত সদস্যের তদন্ত কমিটিকে খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটিতে সংঘটিত সহিংসতা ঘটনার প্রকৃত কারণ অনুসন্ধান, ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিতকরণ ও ভবিষ্যতে একই জাতীয় ঘটনার পুনরাৃত্তি রোধে যথাযথ সুপারিশ প্রণয়নের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

সহিংসতার ঘটনার পরদিন দুই জেলায় অন্তবর্তীকালীন সরকারের তিন প্রভাবশালী উপদেষ্টা খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটি জেলায় সফর করে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, বিশিষ্টজন ও সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেন। পরে সাংবাদিকদের একটি উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন তদন্ত কমিটি গঠনের কথা জানিয়েছিলেন অন্তবরতী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল(অবসরপ্রাপ্ত) মো: জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটিতে বিরাজমান অশান্ত পাহাড়ে শান্তির প্রত্যাশায় সা¤প্রদায়িক সহিংসতা ও সংঘর্ষের ঘটনার কারণ উদঘাটনে গঠিত তদন্ত কমিটি রোববার থেকে তদন্তের কাজ শ্ররু করেছে। বিষয়টি নিশ্চিত করে খাগড়াছড়ি সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) সুজন চন্দ্র রায় জানান, রোববার বিকেলে খাগড়াছড়ি সদর উপজেলা নির্বাহী কার্যালয়ে তদন্ত কমিটি কাজ শুরু করেছে।

তবে দীঘিনালা-খাগড়াছড়ি-রাঙ্গামাটি হামলার ঘটনায় ৭সদস্যের তদন্ত কমিটিকে প্রত্যাখ্যান করেছে ইউপিডিএফ। গত ১৯-২০সেপ্টেম্বর দীঘিনালা, খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটিতে সংঘটিত সা¤প্রদায়িক হামলার ঘটনা তদন্তের জন্য সরকার কর্তৃক গঠিত ৭সদস্যের তদন্ত কমিটিকে প্রত্যাখ্যান করে জাতিসংঘের তত্ত¡াবধানে ও অংশগ্রহণে স্বাধীন ও অবাধ তদন্তের দাবি জানিয়েছে ইউনাইটেড পিপল্স ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট(ইউপিডিএফ)।

এদিকে শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) এক বিবৃতিতে ইউপিডিএফের সহ-সভাপতি নূতন কুমার চাকমা ইউপিডিএফের দাবিকে পাশ কাটিয়ে সরকার কর্তৃক বৃহস্পতিবার একতরফাভাবে তদন্ত কমিটি গঠনকে লোকদেখানো আখ্যায়িত করে বলেন, এই কমিটির প্রতি পার্বত্য চট্টগ্রাম তথা দেশের জনগণের কোন আস্থা নেই।

অতীতে বিভিন্ন সময় গঠিত তদন্ত কমিটিগুলোর ব্যর্থতার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, লোগাং গণহত্যা ও কল্পনা চাকমার অপহরণ তদন্তের জন্য গঠিত দু’টি তদন্ত কমিশন সম্পর্কে জনগণের অভিজ্ঞতা মোটেই সুখকর নয়। এই কমিটিগুলো স্বাধীন ও নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছিল।

ইউপিডিএফ নেতা আরো বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের বর্তমান বাস্তবতায় জাতিসংঘের তত্ত্বাবধান ও অংশগ্রহণে তদন্ত ছাযা হামলার প্রকৃত কারণ ও অপরাধীদের চিহ্নিত করা সম্ভব নয়। ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট(ইউপিডিএফ) প্রচার ও প্রকাশনা বিভাগের নিরন চাকমা স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

আরও উল্লেখ্য অতি সাম্প্রতি সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় ধাওয়া,পাল্টা ধাওয়া ও হামলার কারণে খাগড়াছড়িতে আতঙ্কে কেটেছিল জনজীবন। মামুন হত্যাকে কেন্দ্র করে গত ১৯শে সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার খাগড়াছড়ির দীঘিনালা উপজেলার লারমা স্কয়ারে দোকান-পাট আগুন পুড়লে রাঙ্গামাটিসহ পার্বত্য চট্টগ্রামে সা¤প্রদায়িক সহিংসতা দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়ে। গত ২০ সেপ্টম্বর শুক্রবার বিক্ষুব্ধ জুম্ম ছাত্র-জনতার ব্যানারে সড়ক ও নৌপথ অবরোধের ডাক দেওয়া হয়।

খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটিতে সংঘাতের ঘটনায় জুম্ম ছাত্র-জনতা তিন পার্বত্য জেলায় ৭২ঘণ্টা সড়ক ও নৌপথ অবরোধের ডাকে সর্মঠন দেয় ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট(ইউপিডিএফ)। এতে সমর্থন দেয় সংঘাত ও বৈষম্য বিরোধী পাহাড়ি ছাত্র আন্দোলন নামে একটি সংগঠন। গতকাল সোমবার ছিল তাদের অবরোধের শেষ দিন। এদিন বান্দরবান থেকে ঢাকা, কক্সবাজার, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন গন্তব্যে যান চলাচল শুরু করে। উপজেলার সড়কেও যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক ছিল।

উল্লেখ্য, গত ১৮ সেপ্টেম্বর সকাল ৭টার দিকে খাগড়াছড়ি জেলা সদরে ফার্নিচার ব্যবসায়ী মো: মামুনকে মোটরসাইকেল চুরির অভিযোগে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনার জেরে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। দীঘিনালায় অর্ধশতাধিক দোকানপাটে আগুন, স্বনির্ভরে গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে। সহিংসতায় ও গুলি বর্ষনে খাগড়াছড়িতে ৩জন ও রাঙ্গামাটিতে একজনসহ মোট ৪ জন নিহত হয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

তদন্ত শুরু করেছে ৭ সদস্যের তদন্ত কমিটি

অশান্ত পাহাড়ে শান্তির প্রত্যাশা

সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৮:৫৯:৪৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

খাখাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটি দুই পার্বত্য জেলায় সহিংসতা ও সংঘর্ষের ঘটনার কারণ উদঘাটনে গঠিত ৭ সদস্যের তদন্ত কমিটি কাজ শুরু করেছেন। রোববার (২৯তশে সেপ্টেম্বর) তদন্ত কমিটির প্রধান চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার(উন্নয়ন) মোহাম্মদ নূরল্লাহ নূরীর নেতৃত্বে ৭ সদস্যের কমিটি খাগড়াছড়ির জেলার দীঘিনালার লারমা স্কয়ার এলাকা পরিদর্শন করেন ও ক্ষতিগ্রস্ত এবং প্রত্যক্ষদর্শীর সাথে কথা বলেন।

এরপর বিকেলে কমিটির সদস্যদের খাগড়াছড়ি জেলা সদরে পরিদর্শন ও সদর উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ও প্রত্যক্ষদর্শীর সাথে কথা বলেন।

তদন্ত কমিটির প্রধান মোহাম্মদ নূরল্লাহ নূরী বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত, প্রত্যক্ষদর্শী ও সাংবাদিকসহ সবার সাথে কথা বলে ঘটনার কারণ উদঘাটনের চেষ্টা করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, বুধবার(১৮ সেপ্টেম্বর) সকাল ৭টার দিকে মোটর সাইকেল খাগড়াছড়ি জেলা সদরে ফার্নিচার ব্যবসায়ী মো: মামুনকে মোটর সাইকেল চুরির অভিযোগে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনার জেরে সহিংসতায় ছড়িয়ে পড়ে। দীঘিনালায় অর্ধশতাধিক দোকানপাটে আগুন, স্বণির্ভরে গুলি বর্ষনের ঘটনা ঘটেছে। সহিংসতার ধারাবাহিকতায় খাগড়াছড়িতে ৩জন ও রাঙামাটি একজনসহ মোট ৪ জন নিহত হয়।

খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটিতে সহিংসতার কারণ উদঘাটনে গত বৃস্পতিবার (২৬শে সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার(উন্নয়ন) মোহাম্মদ নূরল্লাহ নূরীকে আহবায়ক করে সাত সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো: তোফায়েল ইসলাম। কমিটিকে আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে সরেজমিন পরিদর্শন ও তদন্তপূর্বক চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের কাছে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

তদন্ত কমিটির অন্য সদস্যরা হচ্ছেন, খাগড়াছড়ি অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট রোজলিন সহিদ চৌধুরী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(সদর সার্কেল) তৌফিক উল আলম, রাঙ্গামাটি ও বান্দরবানের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, দীঘিনালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মামুনুর রশীদ গন।

চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো: তোফায়েল ইসলামের স্বাক্ষর করা অফিস আদেশে সাত সদস্যের তদন্ত কমিটিকে খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটিতে সংঘটিত সহিংসতা ঘটনার প্রকৃত কারণ অনুসন্ধান, ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিতকরণ ও ভবিষ্যতে একই জাতীয় ঘটনার পুনরাৃত্তি রোধে যথাযথ সুপারিশ প্রণয়নের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

সহিংসতার ঘটনার পরদিন দুই জেলায় অন্তবর্তীকালীন সরকারের তিন প্রভাবশালী উপদেষ্টা খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটি জেলায় সফর করে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, বিশিষ্টজন ও সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেন। পরে সাংবাদিকদের একটি উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন তদন্ত কমিটি গঠনের কথা জানিয়েছিলেন অন্তবরতী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল(অবসরপ্রাপ্ত) মো: জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটিতে বিরাজমান অশান্ত পাহাড়ে শান্তির প্রত্যাশায় সা¤প্রদায়িক সহিংসতা ও সংঘর্ষের ঘটনার কারণ উদঘাটনে গঠিত তদন্ত কমিটি রোববার থেকে তদন্তের কাজ শ্ররু করেছে। বিষয়টি নিশ্চিত করে খাগড়াছড়ি সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) সুজন চন্দ্র রায় জানান, রোববার বিকেলে খাগড়াছড়ি সদর উপজেলা নির্বাহী কার্যালয়ে তদন্ত কমিটি কাজ শুরু করেছে।

তবে দীঘিনালা-খাগড়াছড়ি-রাঙ্গামাটি হামলার ঘটনায় ৭সদস্যের তদন্ত কমিটিকে প্রত্যাখ্যান করেছে ইউপিডিএফ। গত ১৯-২০সেপ্টেম্বর দীঘিনালা, খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটিতে সংঘটিত সা¤প্রদায়িক হামলার ঘটনা তদন্তের জন্য সরকার কর্তৃক গঠিত ৭সদস্যের তদন্ত কমিটিকে প্রত্যাখ্যান করে জাতিসংঘের তত্ত¡াবধানে ও অংশগ্রহণে স্বাধীন ও অবাধ তদন্তের দাবি জানিয়েছে ইউনাইটেড পিপল্স ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট(ইউপিডিএফ)।

এদিকে শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) এক বিবৃতিতে ইউপিডিএফের সহ-সভাপতি নূতন কুমার চাকমা ইউপিডিএফের দাবিকে পাশ কাটিয়ে সরকার কর্তৃক বৃহস্পতিবার একতরফাভাবে তদন্ত কমিটি গঠনকে লোকদেখানো আখ্যায়িত করে বলেন, এই কমিটির প্রতি পার্বত্য চট্টগ্রাম তথা দেশের জনগণের কোন আস্থা নেই।

অতীতে বিভিন্ন সময় গঠিত তদন্ত কমিটিগুলোর ব্যর্থতার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, লোগাং গণহত্যা ও কল্পনা চাকমার অপহরণ তদন্তের জন্য গঠিত দু’টি তদন্ত কমিশন সম্পর্কে জনগণের অভিজ্ঞতা মোটেই সুখকর নয়। এই কমিটিগুলো স্বাধীন ও নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছিল।

ইউপিডিএফ নেতা আরো বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের বর্তমান বাস্তবতায় জাতিসংঘের তত্ত্বাবধান ও অংশগ্রহণে তদন্ত ছাযা হামলার প্রকৃত কারণ ও অপরাধীদের চিহ্নিত করা সম্ভব নয়। ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট(ইউপিডিএফ) প্রচার ও প্রকাশনা বিভাগের নিরন চাকমা স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

আরও উল্লেখ্য অতি সাম্প্রতি সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় ধাওয়া,পাল্টা ধাওয়া ও হামলার কারণে খাগড়াছড়িতে আতঙ্কে কেটেছিল জনজীবন। মামুন হত্যাকে কেন্দ্র করে গত ১৯শে সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার খাগড়াছড়ির দীঘিনালা উপজেলার লারমা স্কয়ারে দোকান-পাট আগুন পুড়লে রাঙ্গামাটিসহ পার্বত্য চট্টগ্রামে সা¤প্রদায়িক সহিংসতা দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়ে। গত ২০ সেপ্টম্বর শুক্রবার বিক্ষুব্ধ জুম্ম ছাত্র-জনতার ব্যানারে সড়ক ও নৌপথ অবরোধের ডাক দেওয়া হয়।

খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটিতে সংঘাতের ঘটনায় জুম্ম ছাত্র-জনতা তিন পার্বত্য জেলায় ৭২ঘণ্টা সড়ক ও নৌপথ অবরোধের ডাকে সর্মঠন দেয় ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট(ইউপিডিএফ)। এতে সমর্থন দেয় সংঘাত ও বৈষম্য বিরোধী পাহাড়ি ছাত্র আন্দোলন নামে একটি সংগঠন। গতকাল সোমবার ছিল তাদের অবরোধের শেষ দিন। এদিন বান্দরবান থেকে ঢাকা, কক্সবাজার, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন গন্তব্যে যান চলাচল শুরু করে। উপজেলার সড়কেও যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক ছিল।

উল্লেখ্য, গত ১৮ সেপ্টেম্বর সকাল ৭টার দিকে খাগড়াছড়ি জেলা সদরে ফার্নিচার ব্যবসায়ী মো: মামুনকে মোটরসাইকেল চুরির অভিযোগে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনার জেরে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। দীঘিনালায় অর্ধশতাধিক দোকানপাটে আগুন, স্বনির্ভরে গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে। সহিংসতায় ও গুলি বর্ষনে খাগড়াছড়িতে ৩জন ও রাঙ্গামাটিতে একজনসহ মোট ৪ জন নিহত হয়।