ঢাকা ০৩:৩৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৫ জুন ২০২৫, ৩১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নিক্কেই ফোরামে প্রধান উপদেষ্টা

সব দল নয়, একটি দলই শুধু ডিসেম্বরে নির্বাচন চায়

বিশেষ প্রতিবেদক
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ১১:২৭:২৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ মে ২০২৫ ২১ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

প্রধান উপদেষ্টা ড মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, আমার কোনো রাজনৈতিক অভিলাষ নেই। নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করাই আমার প্রধান লক্ষ্য। সব দল নয়, একটি রাজনৈতিক দলই শুধু ডিসেম্বরে নির্বাচন চায়। ডিসেম্বরে নির্বাচন করতে হলে সংস্কার কার্যক্রমে তাড়াহুড়ো হবে। তাই প্রয়োজন আরো ৬ মাস।

বৃহস্পতিবার (২৯ মে) সকালে জাপানের টোকিওতে অনুষ্ঠিত ৩০তম নিক্কেই ফোরামে বক্তব্যে একথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা।

বন্ধুত্ব, বিশ্বাস আর আস্থা। এই তিলে মিলে পারস্পরিক সহযোগিতার বন্ধনে আবদ্ধ অন্যন্য এক সম্পর্কের নাম জাপান-বাংলাদেশ। বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টার ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সফরকে ঘিরে তাই জাপানের ব্যস্ততা শুরু সূর্যদয়ের আগে থেকেই। সফরের তৃতীয় দিন সকালে নিক্কেই ফোরামের ৩০তম সম্মেলনে যোগ দেন প্রধান উপদেষ্টা।

বক্তব্যের শুরুতেই জলবায়ু পরিবর্তন এবং টেকসই উন্নয়নে এশিয়ার দেশগুলোকে পারস্পরিক সহায়তার ভিত্তিতে এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান তিনি। তুলে ধরেন জুলাই অভ্যুত্থানের স্মৃতিকথা। বলেন, ছাত্র জনতার গণ আন্দোলনে পালিয়ে গেছে স্বৈরাচার। এখন চলছে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ পর্ব। এর জন্য প্রয়োজন জাপানের আন্তরিক কারিগরি এবং আর্থিক সহায়তা।

তিনি জানান, মানুষের ন্যায়বিচার, সমতা, স্বাধীনতা, মর্যাদা নিশ্চিত এবং গণতন্ত্র মসৃণ রূপান্তরের লক্ষ্যে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য সাধারণ নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার।

ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘মানুষের ন্যায়বিচার, সমতা, স্বাধীনতা এবং মর্যাদা নিশ্চিত করতে এবং গণতন্ত্রে মসৃণ রূপান্তরের লক্ষ্যে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, বিশ্বাসযোগ্য এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক সাধারণ নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি।’

তিনি বলেন, ‘ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে স্বৈরাচার বিদায় হয়েছে। বাংলাদেশকে নতুন করে বিনির্মাণে কাজ করছে অন্তর্বর্তী সরকার। একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সাধারণ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে সরকার।’

সংস্কার, বিচার এবং নির্বাচন এই ৩টি দায়িত্বই পালন করবে অন্তর্বর্তী সরকার জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ডিসেম্বরে নির্বাচন কি না, তা নির্ভর করছে সংস্কার কতটুকু সম্পন্ন হয়, তার ওপর। ডিসেম্বরে নির্বাচন দেয়া নিয়ে একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলই বলছে, সব দল নয়। ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন করতে সরকার বদ্ধ পরিকর। ডিসেম্বরে নির্বাচন করতে গেলে তাড়াহুড়ো সংস্কার করতে হবে। ভালো করে সংস্কারের জন্য ডিসেম্বরের পরে আরো ৬ মাস প্রয়োজন। আমার কোনো অভিলাষ নেই, নির্বাচিত দলের হাতে দায়িত্ব ছেড়ে দিতে চাই।’

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘অনেক চড়াই-উৎরাইয়ের মধ্য দিয়ে ক্ষমতায় আসা এই সরকারের মূল লক্ষ্য দেশের মানুষের আকাঙ্ক্ষা পূরণ।’ এসময় রোহিঙ্গা সংকটে বাংলাদেশের মানবিক ভূমিকা এবং জাতিসংঘ শান্তিরক্ষায় সক্রিয় অংশগ্রহণের কথাও তুলে ধরেন তিনি।

অপরদিকে, এশিয়ার অস্থির বাস্তবতায় শান্তি, আস্থা ও অন্তর্ভুক্তির ওপর জোর দেন ড. ইউনূস। তিনি বলেন, ‘আঞ্চলিক ভবিষ্যৎ শুধু জিডিপির সংখ্যায় নয়, মানুষের কল্যাণ, বিশ্বাস এবং সাহসিকতা দিয়ে নির্ধারিত হবে।’ এসময় অনুষ্ঠানে তরুণদের চাকরি না খুঁজে উদ্যোক্তা হওয়ার আহ্বান জানান প্রধান উপদেষ্টা।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

নিক্কেই ফোরামে প্রধান উপদেষ্টা

সব দল নয়, একটি দলই শুধু ডিসেম্বরে নির্বাচন চায়

সংবাদ প্রকাশের সময় : ১১:২৭:২৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ মে ২০২৫

প্রধান উপদেষ্টা ড মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, আমার কোনো রাজনৈতিক অভিলাষ নেই। নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করাই আমার প্রধান লক্ষ্য। সব দল নয়, একটি রাজনৈতিক দলই শুধু ডিসেম্বরে নির্বাচন চায়। ডিসেম্বরে নির্বাচন করতে হলে সংস্কার কার্যক্রমে তাড়াহুড়ো হবে। তাই প্রয়োজন আরো ৬ মাস।

বৃহস্পতিবার (২৯ মে) সকালে জাপানের টোকিওতে অনুষ্ঠিত ৩০তম নিক্কেই ফোরামে বক্তব্যে একথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা।

বন্ধুত্ব, বিশ্বাস আর আস্থা। এই তিলে মিলে পারস্পরিক সহযোগিতার বন্ধনে আবদ্ধ অন্যন্য এক সম্পর্কের নাম জাপান-বাংলাদেশ। বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টার ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সফরকে ঘিরে তাই জাপানের ব্যস্ততা শুরু সূর্যদয়ের আগে থেকেই। সফরের তৃতীয় দিন সকালে নিক্কেই ফোরামের ৩০তম সম্মেলনে যোগ দেন প্রধান উপদেষ্টা।

বক্তব্যের শুরুতেই জলবায়ু পরিবর্তন এবং টেকসই উন্নয়নে এশিয়ার দেশগুলোকে পারস্পরিক সহায়তার ভিত্তিতে এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান তিনি। তুলে ধরেন জুলাই অভ্যুত্থানের স্মৃতিকথা। বলেন, ছাত্র জনতার গণ আন্দোলনে পালিয়ে গেছে স্বৈরাচার। এখন চলছে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ পর্ব। এর জন্য প্রয়োজন জাপানের আন্তরিক কারিগরি এবং আর্থিক সহায়তা।

তিনি জানান, মানুষের ন্যায়বিচার, সমতা, স্বাধীনতা, মর্যাদা নিশ্চিত এবং গণতন্ত্র মসৃণ রূপান্তরের লক্ষ্যে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য সাধারণ নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার।

ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘মানুষের ন্যায়বিচার, সমতা, স্বাধীনতা এবং মর্যাদা নিশ্চিত করতে এবং গণতন্ত্রে মসৃণ রূপান্তরের লক্ষ্যে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, বিশ্বাসযোগ্য এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক সাধারণ নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি।’

তিনি বলেন, ‘ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে স্বৈরাচার বিদায় হয়েছে। বাংলাদেশকে নতুন করে বিনির্মাণে কাজ করছে অন্তর্বর্তী সরকার। একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সাধারণ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে সরকার।’

সংস্কার, বিচার এবং নির্বাচন এই ৩টি দায়িত্বই পালন করবে অন্তর্বর্তী সরকার জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ডিসেম্বরে নির্বাচন কি না, তা নির্ভর করছে সংস্কার কতটুকু সম্পন্ন হয়, তার ওপর। ডিসেম্বরে নির্বাচন দেয়া নিয়ে একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলই বলছে, সব দল নয়। ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন করতে সরকার বদ্ধ পরিকর। ডিসেম্বরে নির্বাচন করতে গেলে তাড়াহুড়ো সংস্কার করতে হবে। ভালো করে সংস্কারের জন্য ডিসেম্বরের পরে আরো ৬ মাস প্রয়োজন। আমার কোনো অভিলাষ নেই, নির্বাচিত দলের হাতে দায়িত্ব ছেড়ে দিতে চাই।’

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘অনেক চড়াই-উৎরাইয়ের মধ্য দিয়ে ক্ষমতায় আসা এই সরকারের মূল লক্ষ্য দেশের মানুষের আকাঙ্ক্ষা পূরণ।’ এসময় রোহিঙ্গা সংকটে বাংলাদেশের মানবিক ভূমিকা এবং জাতিসংঘ শান্তিরক্ষায় সক্রিয় অংশগ্রহণের কথাও তুলে ধরেন তিনি।

অপরদিকে, এশিয়ার অস্থির বাস্তবতায় শান্তি, আস্থা ও অন্তর্ভুক্তির ওপর জোর দেন ড. ইউনূস। তিনি বলেন, ‘আঞ্চলিক ভবিষ্যৎ শুধু জিডিপির সংখ্যায় নয়, মানুষের কল্যাণ, বিশ্বাস এবং সাহসিকতা দিয়ে নির্ধারিত হবে।’ এসময় অনুষ্ঠানে তরুণদের চাকরি না খুঁজে উদ্যোক্তা হওয়ার আহ্বান জানান প্রধান উপদেষ্টা।