ঝিকরগাছায় সরকারি সম্পত্তি উদ্ধারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন

- সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৭:৩৭:৪৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৬ মে ২০২৫ ৩১ বার পড়া হয়েছে
যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার শিমুলিয়া ইউনিয়নের রাজাপুর, আজমপুর দু’টি বাওড় ও পাল্লাবাজার পেরিফেরির বিপুল সরকারি সম্পত্তি উদ্ধারে তিন গ্রামের মানুষ একাট্টা হয়েছেন।
সোমবার (২৬ মে) দুপুরে ঝিকরগাছা প্রেসক্লাব কার্যালয়ে এক জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে তিন গ্রামের মানুষ এই অভিযোগ তুলে ধরেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন, পাশ্ববর্তী মাটিকোমরা গ্রামের বাসিন্দা ও শিমুলিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. শাহাজান আলী।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ঝিকরগাছার শিমুলিয়া ইউনিয়নের ১৭নং উত্তর রাজাপুর মৌজাধীন খাস ১নং খতিয়ানভুক্ত রাজাপুর বাওড়ের ১৮একর জলমহাল যা সরকারের সায়রাতভুক্ত বদ্ধজলাশয় শ্রেণির। উল্লেখিত বাওড়টি সরকার কর্তৃক প্রতি ইজারা বাংলা সন মোতাবেক বিধি অনুযায়ী ইজারা প্রদান করে আসছে।
কিন্তু, অতি পরিতাপ ও উদ্বেগের বিষয় এই যে, সোহারব হোসেন বিশ্বাস পিতাঃ মৃত: আব্দুল আজিজ বিশ্বাস গং, সাংÑউত্তররাজাপুর কর্তৃক উক্ত সায়রাত জলমহালের ১৮একর জমির মধ্যে প্রায় ৭একর সম্পত্তি সরকারি স্বার্থের তথ্য গোপন করে মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে ভুয়া, বানোয়াট, তঞ্চকিপূর্ণ ও জাল জালিয়াতি মূলক সৃষ্ট দলিল কাগজ পত্রাদির মাধ্যমে যশোরের বিজ্ঞ দেওয়ানী সহকারী জজ নিম্ন আদালতেএকটি মামলা দায়ের করেন। অতঃপর একতরফা রায় ডিক্রি ও আদেশ প্রাপ্ত হয়। এই ঘটনায় আমরা অত্র এলাকার সর্বস্তরের সাধারণ মানুষ হতবাক ও মর্মাহত হই। সরকারি স্বার্থ রক্ষার পাশাপাশি আমরা সর্বস্তরের এলাকাবাসী এর যথাযথ আইনি প্রতিকার দাবি করছি।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, আজমপুর মৌজাধীন সরকারি খাস ১নং খতিয়ানভুক্ত ১২একর ৬৭শতক আজমপুর বাওড় জলমহালটির মাধ্যমে অত্র এলাকার আজমপুুর, পাল্লা, বোধখানা, জাফরনগর, মধুখালী, ফতেপুর, কামারপাড়া ও শিমুলিয়াসহ অত্র গ্রামবাসী খরা মৌসুমে আবাদি জমির সেচ কাজে ব্যবহার, গৃহাস্থালি কাজের পাশাপাশি গবাদি পশুর সুপেয় পানির অপূরণীয় চাহিদা পূরণ করে থাকে ঐতিহাসিক এই বাওড় দুটি।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, ঘটনাটি জানাজানির পর উন্মুক্ত ও সরকারি খাস শ্রেণিভুক্ত হওয়ায় সর্বস্তরের এলাকাবাসীর বৃহত্তর স্বার্থের পাশাপাশি সরকারি স্বার্থ রক্ষায় আমরা বিষয়টি বিভিন্ন সময়ে লিখিত এবং মৌখিক ভাবে স্থানীয় প্রশাসনকে অবহিত করি। অতঃপর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মহোদয়ের নির্দেশে সহকারী কমিশনার (ভূমি) উল্লেখিত সম্পত্তির সরকারি স্বার্থ রক্ষা ও উদ্ধারে বিজ্ঞ আদালতে আপিল মামলা দায়ের করেন। যা বিচারাধীন।
প্রতি বর্ষা মৌসুমে অতিবর্ষণের ফলে সৃষ্ট জলবদ্ধতা নিষ্কাশনের একমাত্র পথ এই বাওড় দুটি। অথচ উক্ত জলমহালটির আনুমানিক ৬একর জায়গার উপর অত্র এলাকার প্রভাবশালী ভূমিদস্যু মো. ইব্রাহিম বিশ্বাস, পিতাঃ মৃত: মকছেদ বিশ্বাস, মো. আব্দুল জলিল, পিতাঃ মৃত: শাহাদত, নূর ইসলাম, পিতাঃ মৃত: তালুক সরদার, মো. ইউনুস দফাদার, পিতাঃ মৃত: শাহাদত দফাদার, মো. বাপ্পি, পিতাঃ মৃত: সালাম মোড়ল, সিরাজ, পিতাঃ মৃত: আয়নাল মোড়ল সর্বসং- আজমপুর ও লেয়াকত আলী, পিতাঃ অজ্ঞত, গ্রামঃ বোধখানা, জলমহালটির ৬একর জায়গা দখল করে পুকুর খনন করে পানি চলাচলের পথ বন্ধ করে রেখেছে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, অভিযুক্তরা পরস্পরের যোগসাজসে সরকারি খাস ১নং খতিয়ানভুক্ত জায়গার উপর তথ্য গোপন করে মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে ভুয়া, বানোয়াট, তঞ্চকিপূর্ণ ও জাল জালিয়াতি মূলক সৃষ্ট দলিল, কাগজ পত্রাদির মাধ্যমে যশোরের বিজ্ঞ দেওয়ানী সহকারী জজ নি¤œ আদালতে একটি মামলা দায়েরকরেন। আমরা এব্যপারে ঝিকরগাছা উপজেলার নির্বাহী অফিসারের নিকট এই সরকারি সম্পত্তি উদ্ধারে বিজ্ঞ আদালতে আপিল দায়ের করার জন্য ও সরকারি সম্পত্তি উদ্ধারের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানিয়েছি।
সংবাদ সম্মেমলনে দাবি করা হয়, শিমুলিয়া ইউনিয়নের পাল্লাবাজারের ১নং সরকারি খতিয়ানভুক্তু ১একর ৭০শতক জমির মধ্যে ১০শতক জমি অতি গ্রহণ পূর্বক একটি ভ‚মি অফিস নির্মাণের সরকারি বরাদ্ধ প্রদান করা হয়েছে। কিন্তু বাজারটিতে সরকারি সম্পত্তির উপর পাল্লা গ্রামের প্রভাবশালি ভ‚মিদস্যু আব্দুল হামিদ পিতাঃ মৃত: মোজাহার ও তার শীর্ষ ক্যাডার আব্দুল মাজিদ পিতাঃ ওলিয়ার রহমান পাল্লা বাজারের সরকারি সম্পত্তি দখলপূর্বক দুই তলা মার্কেট নির্মাণ করেছেন। আমরা অত্র এলাকাবাসী সাংবাদিক ভাইদের মাধ্যমে ঝিকরগাছা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট আমাদের আকুল আবেদন উক্ত বাজারের সরকারি খতিয়ানভুক্ত ১একর ৭০শতক জমির উপর সকল অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ পূর্বক বাজার পেরিফেরি করে সরকারি বিধি মোতাবেক প্রকৃত ব্যবসায়িদের মধ্যে দোকান বরাদ্ধ প্রদানে জোর দাবি রাখছি।
সংবাদ সম্মেলনে এ সময় উপস্থিত ছিলেন হাফিজুর রহমান, মিজানুর রহমান, আলমগীর হোসেন আলম, মনজুরুল ইসলাম, আব্দুল অহেদ, আশরাফুজ্জামান আশা, ওয়াছেল উদ্দিন, শরিফ উদ্দিন, আনারুল ইসলাম, আব্দুল বারিক, খাইরুল ইসলাম, তরিকুল ইসলাম, আজগার আলীসহ তিন গ্রামের অর্ধশতাধিক স্থায়ী বাসিন্দা।