ঢাকা ০৬:১০ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৫ জুন ২০২৫, ১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কাজিরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ে দুই দিনে অচেতন ৪১ শিক্ষার্থী

মাসুদ রানা ,পাবনা
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৪:৩৩:০১ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৯ মে ২০২৫ ১৮ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

পাবনার বেড়া উপজেলার আমিনপুরের কাজিরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ে ২ দিনে ৪১ জন শিক্ষার্থী অচেতন হয়ে অসুস্থ হওয়ার ঘটনা ঘটেছ। হঠাৎ এ ঘটনায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

সোমবার (১৯ মে) সকাল ১০টার দিকে বিদ্যালয়ের দোতলার যষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিকক্ষে ৩৫ জন ছাত্র-ছাত্রী অচেতন হয়ে পড়ে। এর আগে গতকাল রোববার (১৮ মে) ৬ জন শিক্ষার্থী অচেতন হওয়ার ঘটনা ঘটে।

অচেতন শিক্ষার্থীরা হলো- মাইমুনা খাতুন, সুমী,সুমাইয়া, জেরিন ইসলাম, জান্নাতুল, জাকিয়া আক্তার, মরিয়ম খাতুন, লিমা আক্তার, সাদ্দাম হোসেন, আসিফ, ফাতেমা খাতুন, দুলা আক্তার, মারিয়া, আসিফ মাহমুদ, জিয়াসমিন, মারিয়া, মুহাম্মদ আলী, রিফাত হোসেন, শাকিলা, সানজিদা, ফাতেমা খাতুন, আফসানা খাতুন। বাকিদের নাম পাওয়া যায়নি।

জানা গেছে, রোববার (১৮ মে) শিক্ষার্থীরা ক্লাস করছিল। বিকেল ৩টার দিকে হঠাৎ ৭ম শ্রেণির ৬ জন শিক্ষার্থী অচেতন হয়ে পড়ে। তাদের উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। এরপর আজ সোমবার সকাল ১০টার দিকে ক্লাস চলাকালীন ৬ষ্ঠ ও ৭ম শ্রেণির ৩৫ জন শিক্ষার্থী অচেতন হয়ে পড়ে। এরপর স্থানীয়ভাবে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে পরিবারের কাছে তাদের বুঝিয়ে দেওয়া হয়। দুটি শ্রেণিকক্ষ থেকেই এক ধরনের গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে বলে জানা গেছে।

এদিকে এ খবর ছড়িয়ে পড়লে অভিভাবক ও সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

কয়েকজন শিক্ষার্থীর অভিভাবক জানান, সকালে সুস্থ অবস্থায় তাদের ছেলে-মেয়েরা স্কুলে এসেছে। কিছুক্ষণ পরই তারা জানতে পারে অসুস্থ। আমরা স্কুলে গিয়ে নিয়ে এসে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা করে বাড়িতে নিয়ে এসেছি।

তারা অভিযোগ করে বলেন, গতকাল ৬ জন যখন অচেতন হয়েছে তখনই যদি শিক্ষকরা ব্যবস্থা নেওয়ার উদ্যোগ নিতেন তাহলে এতো বড় ঘটনা ঘটত না। এরপর স্কুলের ক্লাসরুম গুলো খুবই নোংরা। স্কুলে কোনো নিরাপত্তা নাই। নিশ্চয় কোনো বখাটে অথবা দুষ্কৃতকারী শ্রেণিকক্ষে চেতনানাশক স্প্রে করেছে।

কাজিরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. ফরহাদ হোসেন বলেন, গত ২ দিনে ৪১ জন শিক্ষার্থী অচেতন হয়ে পড়ার ঘটনা ঘটেছে। দুটি শ্রেণিকক্ষে এক ধরনের গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। আমরা ধারণা করছি শ্রেণিকক্ষে কেউ চেতনানাশক স্প্রে করে থাকতে পারে। আমরা এ বিষয়ে সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে কাজ করছি। এলাকার কোনো লোক এ কাজ করতে পারে কিনা খতিয়ে দেখছি। যদি শনাক্ত করতে পারি তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

বেড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা তাহমিনা সুলতানা নিলা বলেন, ভ্যাপসা গরম অথবা ফুড পয়জনের কারণে অচেতন হয়ে থাকতে পারে। তবে পরীক্ষা না করে সঠিকভাবে কিছু বলা সম্ভব না। তবে সেখানে আমাদের মেডিকেল টিম গিয়েছে। স্বাস্থ্য পরীক্ষা করলেই আসল রহস্য বের হয়ে আসবে।

বেড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মোরশেদুল ইসলাম বলেন, স্কুলের শিক্ষার্থীদের অচেতন হয়ে পড়ার বিষয়ে আমি অবগত হয়েছি। প্রধান শিক্ষকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি। অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের এসে বাড়িতে নিয়ে গেছেন।

ঘটনাস্থলে মেডিকেল টিম গিয়েছে। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখবে। পুলিশও গিয়েছে। স্কুলের আঙিনা ও রুম অপরিচ্ছন্ন কি না বা অন্য কোনো সমস্যা আছে কিনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

কাজিরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ে দুই দিনে অচেতন ৪১ শিক্ষার্থী

সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৪:৩৩:০১ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৯ মে ২০২৫

পাবনার বেড়া উপজেলার আমিনপুরের কাজিরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ে ২ দিনে ৪১ জন শিক্ষার্থী অচেতন হয়ে অসুস্থ হওয়ার ঘটনা ঘটেছ। হঠাৎ এ ঘটনায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

সোমবার (১৯ মে) সকাল ১০টার দিকে বিদ্যালয়ের দোতলার যষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিকক্ষে ৩৫ জন ছাত্র-ছাত্রী অচেতন হয়ে পড়ে। এর আগে গতকাল রোববার (১৮ মে) ৬ জন শিক্ষার্থী অচেতন হওয়ার ঘটনা ঘটে।

অচেতন শিক্ষার্থীরা হলো- মাইমুনা খাতুন, সুমী,সুমাইয়া, জেরিন ইসলাম, জান্নাতুল, জাকিয়া আক্তার, মরিয়ম খাতুন, লিমা আক্তার, সাদ্দাম হোসেন, আসিফ, ফাতেমা খাতুন, দুলা আক্তার, মারিয়া, আসিফ মাহমুদ, জিয়াসমিন, মারিয়া, মুহাম্মদ আলী, রিফাত হোসেন, শাকিলা, সানজিদা, ফাতেমা খাতুন, আফসানা খাতুন। বাকিদের নাম পাওয়া যায়নি।

জানা গেছে, রোববার (১৮ মে) শিক্ষার্থীরা ক্লাস করছিল। বিকেল ৩টার দিকে হঠাৎ ৭ম শ্রেণির ৬ জন শিক্ষার্থী অচেতন হয়ে পড়ে। তাদের উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। এরপর আজ সোমবার সকাল ১০টার দিকে ক্লাস চলাকালীন ৬ষ্ঠ ও ৭ম শ্রেণির ৩৫ জন শিক্ষার্থী অচেতন হয়ে পড়ে। এরপর স্থানীয়ভাবে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে পরিবারের কাছে তাদের বুঝিয়ে দেওয়া হয়। দুটি শ্রেণিকক্ষ থেকেই এক ধরনের গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে বলে জানা গেছে।

এদিকে এ খবর ছড়িয়ে পড়লে অভিভাবক ও সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

কয়েকজন শিক্ষার্থীর অভিভাবক জানান, সকালে সুস্থ অবস্থায় তাদের ছেলে-মেয়েরা স্কুলে এসেছে। কিছুক্ষণ পরই তারা জানতে পারে অসুস্থ। আমরা স্কুলে গিয়ে নিয়ে এসে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা করে বাড়িতে নিয়ে এসেছি।

তারা অভিযোগ করে বলেন, গতকাল ৬ জন যখন অচেতন হয়েছে তখনই যদি শিক্ষকরা ব্যবস্থা নেওয়ার উদ্যোগ নিতেন তাহলে এতো বড় ঘটনা ঘটত না। এরপর স্কুলের ক্লাসরুম গুলো খুবই নোংরা। স্কুলে কোনো নিরাপত্তা নাই। নিশ্চয় কোনো বখাটে অথবা দুষ্কৃতকারী শ্রেণিকক্ষে চেতনানাশক স্প্রে করেছে।

কাজিরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. ফরহাদ হোসেন বলেন, গত ২ দিনে ৪১ জন শিক্ষার্থী অচেতন হয়ে পড়ার ঘটনা ঘটেছে। দুটি শ্রেণিকক্ষে এক ধরনের গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। আমরা ধারণা করছি শ্রেণিকক্ষে কেউ চেতনানাশক স্প্রে করে থাকতে পারে। আমরা এ বিষয়ে সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে কাজ করছি। এলাকার কোনো লোক এ কাজ করতে পারে কিনা খতিয়ে দেখছি। যদি শনাক্ত করতে পারি তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

বেড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা তাহমিনা সুলতানা নিলা বলেন, ভ্যাপসা গরম অথবা ফুড পয়জনের কারণে অচেতন হয়ে থাকতে পারে। তবে পরীক্ষা না করে সঠিকভাবে কিছু বলা সম্ভব না। তবে সেখানে আমাদের মেডিকেল টিম গিয়েছে। স্বাস্থ্য পরীক্ষা করলেই আসল রহস্য বের হয়ে আসবে।

বেড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মোরশেদুল ইসলাম বলেন, স্কুলের শিক্ষার্থীদের অচেতন হয়ে পড়ার বিষয়ে আমি অবগত হয়েছি। প্রধান শিক্ষকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি। অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের এসে বাড়িতে নিয়ে গেছেন।

ঘটনাস্থলে মেডিকেল টিম গিয়েছে। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখবে। পুলিশও গিয়েছে। স্কুলের আঙিনা ও রুম অপরিচ্ছন্ন কি না বা অন্য কোনো সমস্যা আছে কিনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।