ঢাকা ০১:২০ অপরাহ্ন, সোমবার, ১২ মে ২০২৫, ২৯ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ইসলামপুরে সাব-রেজিস্ট্রার নেই, জমির ক্রেতা-বিক্রেতা ভোগান্তিতে

লিয়াকত হোসাইন লায়ন, জামালপুর
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ১০:৪৯:১৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১১ মে ২০২৫ ১২ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

জামালপুরের ইসলামপৃুর উপজেলায় স্থায়ী ভাবে সাব-রেজিস্ট্রার না থাকায় জমির দলিল রেজিস্ট্রি করতে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন জমির ক্রেতা-বিক্রেতারা। পাশাপাশি বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার।

ইসলামপৃুর উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রি অফিস সূত্রে জানা গেছে, রেজিস্টি প্রতি এক লাখ টাকায় সাত হাজার ৫০০ টাকার রাজস্ব জমা হয় সরকারের কোষাগারে। ইসলামপুর উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে প্রতি সপ্তাহে গড়ে দেড় শতাধিক জমি রেজিস্ট্রি হয়, যার আনুমানিক রাজস্বের পরিমাণ প্রায় ৬০ লাখ টাকা। এক্ষেত্রে সপ্তাহে চার দিনের কর্মদিবসের ব্যবস্থা থাকলেও নানা অজুহাতে দুই/এক কর্মদিবসের বেশী সাব-রেজিস্ট্রি অফিস চলে না। আবার স্থায়ী সাব-রেজিস্টার না থাকায় অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা রেজিস্টার অফিস করেন নিজের সুবিধা মতে। তাই জমি বেচাকেনায় চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে উপজেলার জমি ক্রেতা-বিক্রেতারা। পাশাপাশি সরকার বিপুল অংকের রাজস্ব হারাচ্ছে। এছাড়াও স্থায়ী অফিস না থাকায় গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র নস্ট হচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পার্শবর্তী উপজেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত সাব-রেজিস্ট্রার সারোয়ার রহমান জেলা রেজিস্ট্রারের নির্দেশনায়,ইসলামপুর উপজেলা ও বকসীগঞ্জ উপজেলার অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন। অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত সাব-রেজিস্ট্রার সময়মত অফিস না করার ফলে দলিল রেজিস্ট্রি নিয়ে বিভিন্ন ধরনের জটিলতা সৃষ্টি হচ্ছে।

বুধবার (৩০ এপ্রিল ও ৭ মে) সরেজমিনে সাব-রেজিস্ট্রার অফিস ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে সেবা নিতে এসেছেন ক্রেতা বিক্রেতারা। তারা জানান, কারো বাবা মা অসুস্থ, আবার নিজেই চিকিৎসার করবেন, কেউ হজে¦ যাবেন। তাই রাত দশটা পর্যন্ত জমির দলিল রেজিস্ট্রি করতে অনেক বিড়ম্ভনা পোহাতে হয় তাদের। এসময় কুলকান্দি ইউনিয়নের কৃষক মোশারফ হোসেন তার জমি রেজিস্ট্রি করতে এসেছিলেন। তিনি জানান, বিগত দুইদিন জমি রেজিস্ট্রি তারিখ নির্ধারণ হবার পরও সাব রেজিস্ট্রার উপস্থিত না ফিরে গিয়েছি।

ইসলামপুর উপজেলা একাধিক দলিল লেখক জানান, স্থায়ীভাবে সাব-রেজিস্ট্রার না থাকায়, জমির দলিল রেজিস্ট্রি করতে নানা ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে। ব্যাংক ড্রাফট, জমির কাগজপত্র ও প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস জোগাড় করতেই বেলা শেষ হয়ে যায়। ওই দিন কোনো কারণে জমির দলিল না হলে, পরের দিন করতে হয়। আবার সব ঠিকঠাক থাকলেও হঠাৎ রেজিস্ট্রার সাহেব আসেন না। তখন দলিল লেখকসহ ক্রেতা-বিক্রেতা বিপাকে পড়েন। এতে জমির মালিক বেচা কেনায় নানান ভোগান্তির স্বীকার হচ্ছে। অন্যদিকে সরকার লক্ষ-লক্ষ টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে। এছাড়াও দীর্ঘদিন থেকে স্থায়ী কোনো সাব রেজিস্ট্রার অফিসার না থাকায় জমি বেচা কেনায় হয়রানির শিকারসহ নকল নবিশদের পাশাপাশি উপজেলার ৮২জন দলিল লেখকরাও বেকার হয়ে পড়ছে। তারা দ্রæত স্থায়ী সাব রেজিস্ট্রার অফিসারসহ স্থায়ী ভবনের দাবী জানান।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

ইসলামপুরে সাব-রেজিস্ট্রার নেই, জমির ক্রেতা-বিক্রেতা ভোগান্তিতে

সংবাদ প্রকাশের সময় : ১০:৪৯:১৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১১ মে ২০২৫

জামালপুরের ইসলামপৃুর উপজেলায় স্থায়ী ভাবে সাব-রেজিস্ট্রার না থাকায় জমির দলিল রেজিস্ট্রি করতে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন জমির ক্রেতা-বিক্রেতারা। পাশাপাশি বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার।

ইসলামপৃুর উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রি অফিস সূত্রে জানা গেছে, রেজিস্টি প্রতি এক লাখ টাকায় সাত হাজার ৫০০ টাকার রাজস্ব জমা হয় সরকারের কোষাগারে। ইসলামপুর উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে প্রতি সপ্তাহে গড়ে দেড় শতাধিক জমি রেজিস্ট্রি হয়, যার আনুমানিক রাজস্বের পরিমাণ প্রায় ৬০ লাখ টাকা। এক্ষেত্রে সপ্তাহে চার দিনের কর্মদিবসের ব্যবস্থা থাকলেও নানা অজুহাতে দুই/এক কর্মদিবসের বেশী সাব-রেজিস্ট্রি অফিস চলে না। আবার স্থায়ী সাব-রেজিস্টার না থাকায় অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা রেজিস্টার অফিস করেন নিজের সুবিধা মতে। তাই জমি বেচাকেনায় চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে উপজেলার জমি ক্রেতা-বিক্রেতারা। পাশাপাশি সরকার বিপুল অংকের রাজস্ব হারাচ্ছে। এছাড়াও স্থায়ী অফিস না থাকায় গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র নস্ট হচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পার্শবর্তী উপজেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত সাব-রেজিস্ট্রার সারোয়ার রহমান জেলা রেজিস্ট্রারের নির্দেশনায়,ইসলামপুর উপজেলা ও বকসীগঞ্জ উপজেলার অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন। অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত সাব-রেজিস্ট্রার সময়মত অফিস না করার ফলে দলিল রেজিস্ট্রি নিয়ে বিভিন্ন ধরনের জটিলতা সৃষ্টি হচ্ছে।

বুধবার (৩০ এপ্রিল ও ৭ মে) সরেজমিনে সাব-রেজিস্ট্রার অফিস ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে সেবা নিতে এসেছেন ক্রেতা বিক্রেতারা। তারা জানান, কারো বাবা মা অসুস্থ, আবার নিজেই চিকিৎসার করবেন, কেউ হজে¦ যাবেন। তাই রাত দশটা পর্যন্ত জমির দলিল রেজিস্ট্রি করতে অনেক বিড়ম্ভনা পোহাতে হয় তাদের। এসময় কুলকান্দি ইউনিয়নের কৃষক মোশারফ হোসেন তার জমি রেজিস্ট্রি করতে এসেছিলেন। তিনি জানান, বিগত দুইদিন জমি রেজিস্ট্রি তারিখ নির্ধারণ হবার পরও সাব রেজিস্ট্রার উপস্থিত না ফিরে গিয়েছি।

ইসলামপুর উপজেলা একাধিক দলিল লেখক জানান, স্থায়ীভাবে সাব-রেজিস্ট্রার না থাকায়, জমির দলিল রেজিস্ট্রি করতে নানা ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে। ব্যাংক ড্রাফট, জমির কাগজপত্র ও প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস জোগাড় করতেই বেলা শেষ হয়ে যায়। ওই দিন কোনো কারণে জমির দলিল না হলে, পরের দিন করতে হয়। আবার সব ঠিকঠাক থাকলেও হঠাৎ রেজিস্ট্রার সাহেব আসেন না। তখন দলিল লেখকসহ ক্রেতা-বিক্রেতা বিপাকে পড়েন। এতে জমির মালিক বেচা কেনায় নানান ভোগান্তির স্বীকার হচ্ছে। অন্যদিকে সরকার লক্ষ-লক্ষ টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে। এছাড়াও দীর্ঘদিন থেকে স্থায়ী কোনো সাব রেজিস্ট্রার অফিসার না থাকায় জমি বেচা কেনায় হয়রানির শিকারসহ নকল নবিশদের পাশাপাশি উপজেলার ৮২জন দলিল লেখকরাও বেকার হয়ে পড়ছে। তারা দ্রæত স্থায়ী সাব রেজিস্ট্রার অফিসারসহ স্থায়ী ভবনের দাবী জানান।