ঢাকা ০১:৪৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ১২ মে ২০২৫, ২৯ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আ’ লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধে শাহবাগে উল্লাস

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ০১:২০:০৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১১ মে ২০২৫ ১৯ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

আওয়ামী লীগ ও এর নেতাদের বিচার করা এবং বিচারকাজ সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত দলটির যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্তে উল্লাস প্রকাশ করেছেন আন্দোলনকারীরা।

শনিবার রা(১০ মে) তে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকের পর আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল সাংবাদিকদের জানান, আওয়ামী লীগ ও এর নেতাদের বিচারকাজ সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত দেশের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা, জুলাই আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের নিরাপত্তা এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বাদী ও সাক্ষীদের সুরক্ষার জন্য সন্ত্রাসবিরোধী আইনের অধীনে সাইবার স্পেসসহ আওয়ামী লীগের যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পরিপত্র পরবর্তী কর্মদিবসে জারি করা হবে।

আইন উপদেষ্টা জানান, সভায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনের সংশোধনী অনুমোদিত হয়েছে। সংশোধনী অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কোনো রাজনৈতিক দল, তার অঙ্গসংগঠন বা সমর্থকগোষ্ঠীকে শাস্তি দিতে পারবে। এর পাশাপাশি উপদেষ্টা পরিষদ আগামী ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র চূড়ান্ত করে প্রকাশ করার সিদ্ধান্তও নিয়েছে।

আইন উপদেষ্টার এই ঘোষণার পর রাজধানীর হোটেল ইন্টারকনটিনেন্টালের সামনে রাজসিক মোড়ে অবস্থানরত আন্দোলনকারীরা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে নানা স্লোগান দেন। তবে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ শনিবার রাত ১১টা ১০ মিনিটে ফেসবুকে লিখেন, ‘আপনারা কেউ রাজপথ ছাড়বেন না। সরকারের সিদ্ধান্ত নিয়ে আমরা আমাদের মতামত আনুষ্ঠানিকভাবে জানাব। সে পর্যন্ত অবস্থান ত্যাগ করবেন না।’

এর আগে শাহবাগে শনিবার দ্বিতীয় দিনের অবরোধ কর্মসূচি থেকে অন্তর্বর্তী সরকারকে কড়া বার্তা দেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের নেতারা। শনিবার বিকেলে শাহবাগে গণজমায়েত কর্মসূচিতে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের প্রজ্ঞাপন ঘোষণা না করা হলে ঢাকাকে বাংলাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করার হুঁশিয়ারি দেয় হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। আর আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের বিষয়ে দ্রুত ফয়সালা না এলে সরকারের পেছন থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করার হুমকি দেয় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ।

শনিবার শাহবাগে টানা দ্বিতীয় দিনের অবরোধ কর্মসূচিতে এনসিপি নেতা হাসনাত আবদুল্লাহ আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের প্রজ্ঞাপন না হওয়া পর্যন্ত রাজপথে থাকার ঘোষণা দেন। টানা কর্মসূচির কারণে শাহবাগ মোড়ের সড়ক দিয়ে যান চলাচল বন্ধ ছিল। গণপরিবহন ও ব্যক্তিগত গাড়িগুলো বিকল্প সড়ক ব্যবহার করেছে।

শাহবাগে বিক্ষোভ চলার মধ্যেই বিকেলে জানানো হয়, রাত আটটায় সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের জরুরি বৈঠক বসবে। এই বৈঠক সামনে রেখে সাড়ে সাতটার দিকে শাহবাগ থেকে হাসনাত আবদুল্লাহ এক ঘণ্টার সময়সীমা বেঁধে দেন।

এর পরপরই শাহবাগের গণজমায়েত হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের দিকে এগোতে থাকে। তবে এর আগেই ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনে রাজসিক মোড়ে ব্যারিকেড দিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিরাপত্তা জোরদার করে।

আওয়ামী লীগ আমলে দুইবারের রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের দেশত্যাগের ঘটনার পর আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে আন্দোলনের ডাক দেন এনসিপির নেতা হাসনাত আবদুল্লাহ। তাঁর আহ্বানে গত বৃহস্পতিবার রাতভর ও পরদিন শুক্রবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালিত হয়। এনসিপি ছাড়াও বিভিন্ন দল ও সংগঠনের নেতা-কর্মীরা সেখানে যোগ দেন। পরে শুক্রবার দুপুর ১২টা থেকে বিকেল সাড়ে চারটা পর্যন্ত মিন্টো রোডের মোড়ে ফোয়ারার সামনে তৈরি করা মঞ্চে অবস্থান কর্মসূচি ও সমাবেশ করা হয়। সেখানে এনসিপির নেতাদের পাশাপাশি বিভিন্ন ইসলামপন্থী দল ও সংগঠনের নেতারা বক্তব্য দেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

আ’ লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধে শাহবাগে উল্লাস

সংবাদ প্রকাশের সময় : ০১:২০:০৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১১ মে ২০২৫

আওয়ামী লীগ ও এর নেতাদের বিচার করা এবং বিচারকাজ সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত দলটির যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্তে উল্লাস প্রকাশ করেছেন আন্দোলনকারীরা।

শনিবার রা(১০ মে) তে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকের পর আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল সাংবাদিকদের জানান, আওয়ামী লীগ ও এর নেতাদের বিচারকাজ সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত দেশের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা, জুলাই আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের নিরাপত্তা এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বাদী ও সাক্ষীদের সুরক্ষার জন্য সন্ত্রাসবিরোধী আইনের অধীনে সাইবার স্পেসসহ আওয়ামী লীগের যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পরিপত্র পরবর্তী কর্মদিবসে জারি করা হবে।

আইন উপদেষ্টা জানান, সভায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনের সংশোধনী অনুমোদিত হয়েছে। সংশোধনী অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কোনো রাজনৈতিক দল, তার অঙ্গসংগঠন বা সমর্থকগোষ্ঠীকে শাস্তি দিতে পারবে। এর পাশাপাশি উপদেষ্টা পরিষদ আগামী ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র চূড়ান্ত করে প্রকাশ করার সিদ্ধান্তও নিয়েছে।

আইন উপদেষ্টার এই ঘোষণার পর রাজধানীর হোটেল ইন্টারকনটিনেন্টালের সামনে রাজসিক মোড়ে অবস্থানরত আন্দোলনকারীরা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে নানা স্লোগান দেন। তবে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ শনিবার রাত ১১টা ১০ মিনিটে ফেসবুকে লিখেন, ‘আপনারা কেউ রাজপথ ছাড়বেন না। সরকারের সিদ্ধান্ত নিয়ে আমরা আমাদের মতামত আনুষ্ঠানিকভাবে জানাব। সে পর্যন্ত অবস্থান ত্যাগ করবেন না।’

এর আগে শাহবাগে শনিবার দ্বিতীয় দিনের অবরোধ কর্মসূচি থেকে অন্তর্বর্তী সরকারকে কড়া বার্তা দেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের নেতারা। শনিবার বিকেলে শাহবাগে গণজমায়েত কর্মসূচিতে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের প্রজ্ঞাপন ঘোষণা না করা হলে ঢাকাকে বাংলাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করার হুঁশিয়ারি দেয় হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। আর আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের বিষয়ে দ্রুত ফয়সালা না এলে সরকারের পেছন থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করার হুমকি দেয় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ।

শনিবার শাহবাগে টানা দ্বিতীয় দিনের অবরোধ কর্মসূচিতে এনসিপি নেতা হাসনাত আবদুল্লাহ আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের প্রজ্ঞাপন না হওয়া পর্যন্ত রাজপথে থাকার ঘোষণা দেন। টানা কর্মসূচির কারণে শাহবাগ মোড়ের সড়ক দিয়ে যান চলাচল বন্ধ ছিল। গণপরিবহন ও ব্যক্তিগত গাড়িগুলো বিকল্প সড়ক ব্যবহার করেছে।

শাহবাগে বিক্ষোভ চলার মধ্যেই বিকেলে জানানো হয়, রাত আটটায় সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের জরুরি বৈঠক বসবে। এই বৈঠক সামনে রেখে সাড়ে সাতটার দিকে শাহবাগ থেকে হাসনাত আবদুল্লাহ এক ঘণ্টার সময়সীমা বেঁধে দেন।

এর পরপরই শাহবাগের গণজমায়েত হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের দিকে এগোতে থাকে। তবে এর আগেই ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনে রাজসিক মোড়ে ব্যারিকেড দিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিরাপত্তা জোরদার করে।

আওয়ামী লীগ আমলে দুইবারের রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের দেশত্যাগের ঘটনার পর আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে আন্দোলনের ডাক দেন এনসিপির নেতা হাসনাত আবদুল্লাহ। তাঁর আহ্বানে গত বৃহস্পতিবার রাতভর ও পরদিন শুক্রবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালিত হয়। এনসিপি ছাড়াও বিভিন্ন দল ও সংগঠনের নেতা-কর্মীরা সেখানে যোগ দেন। পরে শুক্রবার দুপুর ১২টা থেকে বিকেল সাড়ে চারটা পর্যন্ত মিন্টো রোডের মোড়ে ফোয়ারার সামনে তৈরি করা মঞ্চে অবস্থান কর্মসূচি ও সমাবেশ করা হয়। সেখানে এনসিপির নেতাদের পাশাপাশি বিভিন্ন ইসলামপন্থী দল ও সংগঠনের নেতারা বক্তব্য দেন।