ঢাকা ০৮:০৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১২ মে ২০২৫, ২৯ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জিআই স্বীকৃতি পেল কালিদাসের সন্দেশ

মোঃ মশিউর রহমান, টাঙ্গাইল
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ১২:৪১:৪৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ মে ২০২৫ ১৫৩ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

এবার দেশের ৫৪তম ও টাঙ্গাইল জেলার চতুর্থ পণ্য হিসেবে ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) স্বীকৃতি পেল মির্জাপুর উপজেলার জামুর্কী ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী কালিদাস মিষ্টান্ন ভান্ডারের নামকরা সন্দেশ। এর আগে টাঙ্গাইলের পোড়াবাড়ির চমচম, তাঁতের শাড়ি ও মধুপুরের আনারস এই স্বীকৃতি অর্জন করে।

বুধবার (৩০ এপ্রিল) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে শিল্প মন্ত্রণালয়ের পেটেন্ট, শিল্প নকশা এবং ট্রেডমার্ক বিভাগ আয়োজিত ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্যের সার্টিফিকেট বিতরণ অনুষ্ঠানে শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমানের কাছ থেকে টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক শরীফা হক জামুর্কীর সন্দেশের জিআই নিবন্ধন সনদ গ্রহণ করেন।

২০২৪ সালের পহেলা এপ্রিল জামুর্কীর সন্দেশের জিআই স্বীকৃতির জন্য আবেদন করা হয়েছিল। যার আবেদন নং জিআই-৭৪। এক বছর পর অবশেষে সেই স্বীকৃতি লাভ করলো মির্জাপুরের এই পণ্য।

কোনো পণ্যের জিআই বা জিওগ্রাফিকাল ইনডিকেশন স্বীকৃতি মানে তার ভৌগোলিক নির্দেশনাকে বোঝায়। কোনো পণ্য জিআই স্বীকৃতি পেলে পণ্যগুলো বিশ্বব্যাপী ব্র্যান্ডিং করা সহজ হয়। পণ্যগুলোর তখন আলাদা কদর থাকে। এতে ওই অঞ্চল বাণিজ্যিকভাবে পণ্যটি উৎপাদন করার অধিকার এবং আইনি সুরক্ষা পায়। কোনো একটি দেশের মাটি, পানি, আবহাওয়া এবং ওই জনগোষ্ঠীর সংস্কৃতি যদি কোনো একটি পণ্য উৎপাদনের ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে তাহলে সেটিকে ওই দেশের ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য (জিআই) হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। অর্থাৎ সেই পণ্য শুধু ওই এলাকা ছাড়া অন্য কোথাও উৎপাদন করা সম্ভব নয়। জানা যায়, ব্রিটিশ আমলে জামুর্কী এবং এর আশপাশের এলাকায় ছিল জমিদার ও সম্ভ্রান্ত হিন্দুদের বসবাস। গ্রামের মদন মোহন সাহা মিষ্টি তৈরি করে বিক্রি করতেন। তার মৃত্যুর পর তার ছেলে কালীদাস সাহা পৈত্রিক ব্যবসার হাল ধরেন। পরে তিনি দুধ, চিনি ও পাটালি গুড় দিয়ে চিনি ও গুড়ের দুই প্রকার সন্দেশ তৈরি করে বিক্রি করা শুরু করেন। সময়ের সঙ্গে তার তৈরি এই সন্দেশের সুনাম চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে।

এর খ্যাতির কারণে অনেক বরেণ্য ব্যক্তি কালীদাসের সন্দেশ খেয়ে মুগ্ধ হয়েছেন। ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি মির্জাপুর সফরে এলে তাকে যেসব খাবার দিয়ে আপ্যায়ন করা হয়েছিল সেগুলোর মধ্যে জামুর্কীর সন্দেশও ছিল।

এখনও জেলায় আসা বিশিষ্ট ব্যক্তিদের আপ্যায়ন করতে এই সন্দেশের অর্ডার দেওয়া হয়। এছাড়া বিয়ে, ঈদ, পূজাসহ বিভিন্ন আয়োজন ও আচার অনুষ্ঠানে এই সন্দেশ যেন অপরিহার্য।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

জিআই স্বীকৃতি পেল কালিদাসের সন্দেশ

সংবাদ প্রকাশের সময় : ১২:৪১:৪৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ মে ২০২৫

এবার দেশের ৫৪তম ও টাঙ্গাইল জেলার চতুর্থ পণ্য হিসেবে ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) স্বীকৃতি পেল মির্জাপুর উপজেলার জামুর্কী ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী কালিদাস মিষ্টান্ন ভান্ডারের নামকরা সন্দেশ। এর আগে টাঙ্গাইলের পোড়াবাড়ির চমচম, তাঁতের শাড়ি ও মধুপুরের আনারস এই স্বীকৃতি অর্জন করে।

বুধবার (৩০ এপ্রিল) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে শিল্প মন্ত্রণালয়ের পেটেন্ট, শিল্প নকশা এবং ট্রেডমার্ক বিভাগ আয়োজিত ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্যের সার্টিফিকেট বিতরণ অনুষ্ঠানে শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমানের কাছ থেকে টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক শরীফা হক জামুর্কীর সন্দেশের জিআই নিবন্ধন সনদ গ্রহণ করেন।

২০২৪ সালের পহেলা এপ্রিল জামুর্কীর সন্দেশের জিআই স্বীকৃতির জন্য আবেদন করা হয়েছিল। যার আবেদন নং জিআই-৭৪। এক বছর পর অবশেষে সেই স্বীকৃতি লাভ করলো মির্জাপুরের এই পণ্য।

কোনো পণ্যের জিআই বা জিওগ্রাফিকাল ইনডিকেশন স্বীকৃতি মানে তার ভৌগোলিক নির্দেশনাকে বোঝায়। কোনো পণ্য জিআই স্বীকৃতি পেলে পণ্যগুলো বিশ্বব্যাপী ব্র্যান্ডিং করা সহজ হয়। পণ্যগুলোর তখন আলাদা কদর থাকে। এতে ওই অঞ্চল বাণিজ্যিকভাবে পণ্যটি উৎপাদন করার অধিকার এবং আইনি সুরক্ষা পায়। কোনো একটি দেশের মাটি, পানি, আবহাওয়া এবং ওই জনগোষ্ঠীর সংস্কৃতি যদি কোনো একটি পণ্য উৎপাদনের ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে তাহলে সেটিকে ওই দেশের ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য (জিআই) হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। অর্থাৎ সেই পণ্য শুধু ওই এলাকা ছাড়া অন্য কোথাও উৎপাদন করা সম্ভব নয়। জানা যায়, ব্রিটিশ আমলে জামুর্কী এবং এর আশপাশের এলাকায় ছিল জমিদার ও সম্ভ্রান্ত হিন্দুদের বসবাস। গ্রামের মদন মোহন সাহা মিষ্টি তৈরি করে বিক্রি করতেন। তার মৃত্যুর পর তার ছেলে কালীদাস সাহা পৈত্রিক ব্যবসার হাল ধরেন। পরে তিনি দুধ, চিনি ও পাটালি গুড় দিয়ে চিনি ও গুড়ের দুই প্রকার সন্দেশ তৈরি করে বিক্রি করা শুরু করেন। সময়ের সঙ্গে তার তৈরি এই সন্দেশের সুনাম চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে।

এর খ্যাতির কারণে অনেক বরেণ্য ব্যক্তি কালীদাসের সন্দেশ খেয়ে মুগ্ধ হয়েছেন। ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি মির্জাপুর সফরে এলে তাকে যেসব খাবার দিয়ে আপ্যায়ন করা হয়েছিল সেগুলোর মধ্যে জামুর্কীর সন্দেশও ছিল।

এখনও জেলায় আসা বিশিষ্ট ব্যক্তিদের আপ্যায়ন করতে এই সন্দেশের অর্ডার দেওয়া হয়। এছাড়া বিয়ে, ঈদ, পূজাসহ বিভিন্ন আয়োজন ও আচার অনুষ্ঠানে এই সন্দেশ যেন অপরিহার্য।