ঢাকা ০৮:৪৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১২ মে ২০২৫, ২৯ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নিষিদ্ধ গাইড বইয়ের রমরমা ব্যবসা

আবু-হানিফ,বাগেরহাট
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৪:৫৭:০০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫ ২১ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

শরণখোলায় চলছে গাইড বইয়ের রমরমা ব্যবসা। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোয় গাইড বই ছাড়া সরকারের দেওয়া বিনামূল্যের বই শিক্ষার্থীদের পড়ানো হয়না। অধিক মূল্যের গাইড বই কিনতে অভিভাবকরা হিমশিম খাচ্ছেন। নির্দ্দিষ্ট বই প্রকাশনী থেকে লাখ লাখ টাকা অনুদান নিয়ে উপজেলার তিনটি শিক্ষক সমিতি ও কয়েকটি লাইব্রেরী মালিক বেআইনীভাবে এই ব্যবসা করছেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়।

তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায়, শরণখোলা উপজেলার সরকারী প্র্থামিক বিদ্যালয়, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসা সমূহে শিক্ষার্থীদের গাইড বই পড়ানো হয়। সরকারের দেওয়া বই পড়ানো হয়না। অধিক মূল্য মানের গাইড বই কিনতে শিক্ষার্থীদের বাধ্য করা হচ্ছে। মাধ্যমিক ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বাধ্যতামূলকভাবে পাঞ্জেরী প্রকাশনী, অনুপম প্রকাশনী ও লেকচার প্রকাশনীর গাইড এবং মাদ্রাসা সমূহে আলফাতাহ প্রকাশনীর গাইড বই পড়ানো হচ্ছে। মাধ্যমিক স্তরে শ্রেণীভেদে আড়াই হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা দিয়ে একসেট গাইডবই কিনতে হয়। মাদ্রাসা স্তরে ৯ম থেকে ১০ম শ্রেণীতে চার থেকে সাড়ে চার হাজার টাকায় গাইডবই কিনতে হয়। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৩শ থেকে ৯শ টাকায় গাইডবই বিক্রি হয়। উপজেলার খোন্তাকাটা গ্রামের ছাত্র অভিভাবক আঃ খালেক, রাজাপুর গ্রামের সরোয়ার হোসেন, সোনাতলা গ্রামের ছালেহা বেগম বলেন, শিক্ষকরা সরকারী বই না পড়িয়ে গাইডবই কিনতে বাধ্য করছেন। বেশি দাম দিয়ে গাইডবই কিনতে তাদের খুবই কষ্ট হয় বলে ঐ অভিভাবকরা জানান।

শরণখোলা উপজেলা সদর রায়েন্দা বাজারে পাঞ্জেরী প্রকাশনীর এজেন্ট ও ইসলামিয়া লাইব্রেরীর মালিক আকন আলমগীর বলেন, সারাদেশে সহায়ক বই হিসেবে গাইড বিক্রি হয়। এতে মনে হয়,সরকারের অনুমতি আছে। পাঞ্জেরী প্রকাশনীর অপর এজেন্ট হৃদয় লাইব্রেরীর মালিক আঃ রহিম বলেন, গাইডবই ১৯৯০ সাল থেকে নিষিদ্ধ কিন্তু লোকজন চায় তাই আমরা কিনে এনে বিক্রি করে থাকি।

শরণখোলার সুন্দরবন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আসাদুজ্জামান ও খাদা গগন মেমোরিয়াল দাখিল মাদ্রাসার সুপার মাওলানা ওবায়দুল হক বলেন, তাদের প্রতিষ্ঠানে কোন গাইডবই পড়ানো হয়না।

শরণখোলা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ধননজয় মন্ডল বলেন, গাইডবই ক্রয় বিক্রয় আইনতঃ নিষিদ্ধ। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গাইডবই পড়ানোর বিষয়ে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুদীপ্ত কুমার সিংহ বলেন, গাইডবই বিক্রি ও পড়ানোর কোন নিয়ম নেই। বিষয়টি তদন্ত করে আইনী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

নিষিদ্ধ গাইড বইয়ের রমরমা ব্যবসা

সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৪:৫৭:০০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫

শরণখোলায় চলছে গাইড বইয়ের রমরমা ব্যবসা। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোয় গাইড বই ছাড়া সরকারের দেওয়া বিনামূল্যের বই শিক্ষার্থীদের পড়ানো হয়না। অধিক মূল্যের গাইড বই কিনতে অভিভাবকরা হিমশিম খাচ্ছেন। নির্দ্দিষ্ট বই প্রকাশনী থেকে লাখ লাখ টাকা অনুদান নিয়ে উপজেলার তিনটি শিক্ষক সমিতি ও কয়েকটি লাইব্রেরী মালিক বেআইনীভাবে এই ব্যবসা করছেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়।

তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায়, শরণখোলা উপজেলার সরকারী প্র্থামিক বিদ্যালয়, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসা সমূহে শিক্ষার্থীদের গাইড বই পড়ানো হয়। সরকারের দেওয়া বই পড়ানো হয়না। অধিক মূল্য মানের গাইড বই কিনতে শিক্ষার্থীদের বাধ্য করা হচ্ছে। মাধ্যমিক ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বাধ্যতামূলকভাবে পাঞ্জেরী প্রকাশনী, অনুপম প্রকাশনী ও লেকচার প্রকাশনীর গাইড এবং মাদ্রাসা সমূহে আলফাতাহ প্রকাশনীর গাইড বই পড়ানো হচ্ছে। মাধ্যমিক স্তরে শ্রেণীভেদে আড়াই হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা দিয়ে একসেট গাইডবই কিনতে হয়। মাদ্রাসা স্তরে ৯ম থেকে ১০ম শ্রেণীতে চার থেকে সাড়ে চার হাজার টাকায় গাইডবই কিনতে হয়। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৩শ থেকে ৯শ টাকায় গাইডবই বিক্রি হয়। উপজেলার খোন্তাকাটা গ্রামের ছাত্র অভিভাবক আঃ খালেক, রাজাপুর গ্রামের সরোয়ার হোসেন, সোনাতলা গ্রামের ছালেহা বেগম বলেন, শিক্ষকরা সরকারী বই না পড়িয়ে গাইডবই কিনতে বাধ্য করছেন। বেশি দাম দিয়ে গাইডবই কিনতে তাদের খুবই কষ্ট হয় বলে ঐ অভিভাবকরা জানান।

শরণখোলা উপজেলা সদর রায়েন্দা বাজারে পাঞ্জেরী প্রকাশনীর এজেন্ট ও ইসলামিয়া লাইব্রেরীর মালিক আকন আলমগীর বলেন, সারাদেশে সহায়ক বই হিসেবে গাইড বিক্রি হয়। এতে মনে হয়,সরকারের অনুমতি আছে। পাঞ্জেরী প্রকাশনীর অপর এজেন্ট হৃদয় লাইব্রেরীর মালিক আঃ রহিম বলেন, গাইডবই ১৯৯০ সাল থেকে নিষিদ্ধ কিন্তু লোকজন চায় তাই আমরা কিনে এনে বিক্রি করে থাকি।

শরণখোলার সুন্দরবন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আসাদুজ্জামান ও খাদা গগন মেমোরিয়াল দাখিল মাদ্রাসার সুপার মাওলানা ওবায়দুল হক বলেন, তাদের প্রতিষ্ঠানে কোন গাইডবই পড়ানো হয়না।

শরণখোলা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ধননজয় মন্ডল বলেন, গাইডবই ক্রয় বিক্রয় আইনতঃ নিষিদ্ধ। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গাইডবই পড়ানোর বিষয়ে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুদীপ্ত কুমার সিংহ বলেন, গাইডবই বিক্রি ও পড়ানোর কোন নিয়ম নেই। বিষয়টি তদন্ত করে আইনী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।