ঢাকা ১২:৫৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১২ মে ২০২৫, ২৮ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ফুলবাড়ীতে কেন্দ্রীয় কবরস্থান রক্ষার দাবিতে মানববন্ধন

আজিজুল হক সরকার,ফুলবাড়ী (দিনাজপুর)
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৪:৫৩:৪২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫ ৪৮ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

দিনাজপুরের ফুলবাড়ী পৌরসভার একমাত্র কেন্দ্রীয় কবরস্থান ‘কানাহার কবরস্থান’টি ক্রমান্বয়ে পুকুরে গ্রাস করছে। পুুকুর পাড়ে ‘কানাহার কবরস্থান’ পৌরসভার আন্ডারে, অপরদিকে ‘কানাহার পুকুর’ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের অধীনে হওয়ার রশিটানাটানিতে বাপ-দাদার স্মৃতি বিজড়িত কবরগুলো বিলীন হতে বসেছে। কবরস্থান আর পুকুর দু’প্রতিষ্ঠানের হওয়াতে ধর্মীয় জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়েও তা নানা অবহেলায় সংস্কার-উন্নয়নে কেউ এগিয়ে আসেনি। তাই অবাধে ধ্বংস প্রাপ্ত হচ্ছে কেন্দ্রীয় কবরস্থানটি।

৯ একর ৪৩ শতাংশ জায়গা নিয়ে কানাহার পুকুর এবং ০২একর ৯০ শতাংশ জায়গা নিয়ে কানাহার কবরস্থানটি উল্লেখ থাকলেও কবরস্থানটি প্রকৃতপক্ষে পুরো পুকুরের চারপাড় জুড়েই কবরস্থান।তা আনুমানিক ১৫ একরেরও বেশি জায়গা হবে। এখানে মাছ চাষের জন্য ফুলবাড়ীর সবচেয়ে বড় পুকুর হিসেবে খ্যাত ‘কানাহারপুকুর’। এই পুুকুরের পাড়ে অবস্থিত ফুলবাড়ীর কেন্দ্রীয় কবরস্থান। পশ্চিম গৌরীপাড়া, পূর্ব গৌরীপাড়া, নিমতলা, বুন্দিপাড়া, স্বজনপুকুর, রেলঘুমটি, ডাঙ্গা, বারোঘরিয়া, কাঁটাবাড়ী, ফুলবাড়ী বাজার, নিমতলামোড়সহ ফুলবাড়ী পৌর শহরের অধিকাংশ মানুষের মৃত্যুর পর কবর দেয়ার একমাত্র কবর স্থান এটিই। একদিকে কবরস্থানের পাড় ভেঙে যাচ্ছে, অপরদিকে ট্রাক-ট্রলার পরিষ্কার করার স্থান করেছে। তার সাথে অবাধে চলছে গরু-ছাগল-হাঁস পালনের চেষ্টা। সবমিলে কবরস্থানের যে পবিত্রতা তা আজ প্রশ্নের সম্মুখীন

কানাহার পুকুরের আর একপাশে অবস্থিত ফুলবাড়ীর ২য় সর্বোচ্চ ঈদের জামাতের ঈদগাহ মাঠ। দুই ঈদে এখানে ঈদের জামাতকে কেন্দ্র করে চলে কালেকশন। ্এখানে রয়েছে একটি ঈদগাহ পরিচালনা কমিটি,তারা ঈদের মাঠ সংস্কার,পুকুরের পাড় সংস্কার করার কথা বলে প্রতি ঈদে নামাজ শেষে টাকা কালেকশন করলেও তেমন কোনো কাজের নজির নেই।

এদিকে কোন মৃত ব্যক্তির জানাযা করার জন্য কখনো জাতীয় সংসদ সদস্য,উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অথবা পৌর মেয়রসহ জ্ঞানী-গুনী ব্যক্তিরা আসেন তখন তারা এই কবরস্থানের দুর্দশা দেখেন আর বলেন অচিরেই কবরস্থানের কবর গুলো বাঁচাতে গাইডওয়ালসহ সংস্কার করা হবে। যখনই উক্ত স্থান ত্যাগ করেন তখন আর এবিষয়টি তাদের গুরুত্বে আসে না বলে অনেকে অভিযোগ করেন।

পুকুরটি ক-তফশীলভুক্ত ভিপি সম্পত্তি হওয়ায় উপজেলা প্রশাসন পুকুরটি ৩ যুগেরও বেশি সময় ধরে ফুলবাড়ী উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদকে মাছ চাষ করতে দিয়ে আসছেন। এদিকে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ পুকুরটি সাব কন্ট্রাক্ট এর মাধ্যমে মাছচাষি সফিকুল ইসলাম বুলুকে দিয়ে মোটা অংকের টাকা তুলছেন। এ পর্যন্ত মুক্তিযোদ্ধা সংসদের মাধ্যমেও কানাহার পুকুর অথবা কবরস্থানের কোন প্রকার সংস্কার কাজ লক্ষ করা যায়নি। বরং সাব কন্ট্রাক্ট নেয়া মালিক পুকুরে লিটার ব্যবহার করায় কবরস্থানে আগত ব্যক্তিরা ওযু-গোসল অথবা কবর দেয়ার পর হাত-পা ধোয়ার কাজও করতে পারছেন না।

স্থানীয় কলেজ শিক্ষক খায়রুল আনাম আবেশ,আতিয়ার রহমান, এ্যাডভোকেট আবুহেনা ,সাখাওয়াত কাজি, আলাউদ্দীন মিস্ত্রী বলেন, কবরগুলো বিলীনসহ কবরস্থানের প্রধান গেটের ডান পাশে কবর গুড়িয়ে দিয়ে পুকুরের পূর্ব কোণে ট্রাক্টর,ট্রলি,ভ্যান, রিক্সা পরিষ্কারের জন্য কিছু অসাধু মালিক ও চালক ব্যবস্থা করেছে। কবরস্থানের সাথে জড়িত সকলেই দেখেন, প্রতিবাদ করেন, কোনো কাজ হয়নি। কেমন যেন একটা অরাজকতার পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে ফুলবাড়ী কেন্দ্রীয় কবরস্থান।

এলাকাবাসীর অভিযোগ,পুকুরের মাছ চাষি মাছ বৃদ্ধির জন্য শুষ্ক মৌসুমেও পুকুরে শ্যালো মেশিন দিয়ে পানি ভরে রাখেন। বড় পুকুর হওয়ায় পানির ঢেউয়ে কবরস্থানে ধাক্কা লেগে কবরসহ পাড় ভেঙে ফেলছে। এপর্যন্ত প্রায় দু’শতাধিক কবর পুকুরের পেটে চেলে গেছে। আর কতখানি ভাঙলে নজরে আসবে কর্তৃপক্ষের? যে বিষয়টি অনেককে ভাবায়, আমার বাপ-দাদার কবরের পাশে আমার কবর দেওয়ার জায়গাটা অবশেষে থাকবে তো ?

দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে কবরস্থান বিলীনের হাত থেকে রক্ষা, অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদসহ সংস্কাকারের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন সকল শ্রেণির স্থানীয় বাসিন্দা।

শনিবার (২৬ এপ্রিল) সকাল ১০টায় স্থানীয় নিমতলা মোড়ে দিনাজপুর-গবিন্দগঞ্জ আঞ্চলিক মহা সড়কের পাশে ব্যানার ফেষ্টুন হাতে দাঁড়িয়ে ফুলবাড়ী সম্মিলিত নাগরিক সমাজের ব্যানারে পৌর এলাকার কেন্দ্রীয় কানাহার কবরস্থানটি রক্ষাসহ সংস্কাকারে দাবিতে ঘন্টাব্যাপী এই মানববন্ধন করেন তারা। এতে সভাপতিত্ব করেন ফুলবাড়ী সম্মিলিত নাগরিক সমাজের আহবায়ক হামিদুল হক।

ফুলবাড়ী ব্যবসায়ী সমিতির যুগ্ম সদস্য সচিব সাখাওয়াত হোসেন এর সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, পৌর বিএনপির সহ-সভাপতি মন্তাজ আলী চৌধুরী, পৌর কৃষকদলের সাধারণ সম্পাদক শাহাজান মন্ডল, ব্যবসায়ী সমিতির আহবায়ক এমএ আব্দুল কাইয়ুম, সাবেক প্যানেল মেয়র নুরজ্জামান জামান, সাবেক পৌর কাউন্সিলর আব্দুল জব্বার মাসুদ, সম্মিলিত নাগরিক সমাজের সদস্য সচিব হারুন উর রশীদ, স্থানীয় বাসিন্দা মেহের আলী, আব্দুস সাত্তার মন্ডল প্রমুখ।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ফুলবাড়ী পৌর এলাকার শতবছরের পুরোনো কেন্দ্রীয় কানাহার কবরস্থান। এখানে পৌর এলাকার বিভিন্ন ওয়ার্ডের মুর্দা দাফন করা হয়। সেখানে আমাদের বাপ, দাদাসহ পুর্বপুরুষদের কবর রয়েছে। কবরস্থানের পুুকুরের পানির ঢেউয়ে দিনদিন পাড় ভেঙ্গে কবর গুলো বিলীন হয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে কবরস্থানটিতে কবর দেওয়ার জায়গা সংকট দেখা দিয়েছে। গাইডওয়াল নির্মাণ করে কবরগুলো রক্ষা করতে হবে। কবরস্থানের পুর্বপাড় দখল করে যেসব বসতবাড়ি গড়ে উঠেছে, পুর্ণবাসনের ব্যবস্থা করে সেগুলো উচ্ছেদ করতে হবে। বক্তারা কবরস্থানটি রক্ষাসহ সংস্কারে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। মানববন্ধনে এলাকার শতশত মানুষ অংশগ্রহন করেন।

সাবেক পৌর মেয়র মাহমুদ আলম লিটন বলেন, কানাহার কবরস্থান রক্ষণাবেক্ষণ করবে পৌরসভা আর পুকুর থাকবে অন্য প্রতিষ্ঠানের হাতে তাতো হয়না। এতে সমন্বয়হীনতায় কাজে বিঘœ সৃষ্টি হয়। ধর্মীয় এই বিষয়টি নিয়ে আমাকে অনেকে অভিযোগ করেছেন। তবে কেন্দ্রীয় কবরস্থানকে পুকুর যে গ্রাস করছে, তা সত্য। নাগরিক সেবা দেয়ার ব্যাপারে ফুলবাড়ী পৌরসভা জনগণের দাবির বিষয়টিকেই গুরুত্বের সাথে দেখবে বলে মনে করি।

বিষয়টি নিয়ে কথা হলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ইসাহাক আলী বলেন, কানাহার কবস্থানটি সংস্কারের বিষয় নিয়ে বেশকিছুদিন ধরে স্থানীয়রা দাবী তুলেছেন। এ নিয়ে তাদের সাথে কথা হচ্ছে। এর আগে বিগত মেয়র মহোদয় বিষয়টি নিয়ে মিনিষ্ট্রিতে চেষ্টা করেছেন। আমরাও বিষয়টি নিয়ে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

ফুলবাড়ীতে কেন্দ্রীয় কবরস্থান রক্ষার দাবিতে মানববন্ধন

সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৪:৫৩:৪২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫

দিনাজপুরের ফুলবাড়ী পৌরসভার একমাত্র কেন্দ্রীয় কবরস্থান ‘কানাহার কবরস্থান’টি ক্রমান্বয়ে পুকুরে গ্রাস করছে। পুুকুর পাড়ে ‘কানাহার কবরস্থান’ পৌরসভার আন্ডারে, অপরদিকে ‘কানাহার পুকুর’ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের অধীনে হওয়ার রশিটানাটানিতে বাপ-দাদার স্মৃতি বিজড়িত কবরগুলো বিলীন হতে বসেছে। কবরস্থান আর পুকুর দু’প্রতিষ্ঠানের হওয়াতে ধর্মীয় জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়েও তা নানা অবহেলায় সংস্কার-উন্নয়নে কেউ এগিয়ে আসেনি। তাই অবাধে ধ্বংস প্রাপ্ত হচ্ছে কেন্দ্রীয় কবরস্থানটি।

৯ একর ৪৩ শতাংশ জায়গা নিয়ে কানাহার পুকুর এবং ০২একর ৯০ শতাংশ জায়গা নিয়ে কানাহার কবরস্থানটি উল্লেখ থাকলেও কবরস্থানটি প্রকৃতপক্ষে পুরো পুকুরের চারপাড় জুড়েই কবরস্থান।তা আনুমানিক ১৫ একরেরও বেশি জায়গা হবে। এখানে মাছ চাষের জন্য ফুলবাড়ীর সবচেয়ে বড় পুকুর হিসেবে খ্যাত ‘কানাহারপুকুর’। এই পুুকুরের পাড়ে অবস্থিত ফুলবাড়ীর কেন্দ্রীয় কবরস্থান। পশ্চিম গৌরীপাড়া, পূর্ব গৌরীপাড়া, নিমতলা, বুন্দিপাড়া, স্বজনপুকুর, রেলঘুমটি, ডাঙ্গা, বারোঘরিয়া, কাঁটাবাড়ী, ফুলবাড়ী বাজার, নিমতলামোড়সহ ফুলবাড়ী পৌর শহরের অধিকাংশ মানুষের মৃত্যুর পর কবর দেয়ার একমাত্র কবর স্থান এটিই। একদিকে কবরস্থানের পাড় ভেঙে যাচ্ছে, অপরদিকে ট্রাক-ট্রলার পরিষ্কার করার স্থান করেছে। তার সাথে অবাধে চলছে গরু-ছাগল-হাঁস পালনের চেষ্টা। সবমিলে কবরস্থানের যে পবিত্রতা তা আজ প্রশ্নের সম্মুখীন

কানাহার পুকুরের আর একপাশে অবস্থিত ফুলবাড়ীর ২য় সর্বোচ্চ ঈদের জামাতের ঈদগাহ মাঠ। দুই ঈদে এখানে ঈদের জামাতকে কেন্দ্র করে চলে কালেকশন। ্এখানে রয়েছে একটি ঈদগাহ পরিচালনা কমিটি,তারা ঈদের মাঠ সংস্কার,পুকুরের পাড় সংস্কার করার কথা বলে প্রতি ঈদে নামাজ শেষে টাকা কালেকশন করলেও তেমন কোনো কাজের নজির নেই।

এদিকে কোন মৃত ব্যক্তির জানাযা করার জন্য কখনো জাতীয় সংসদ সদস্য,উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অথবা পৌর মেয়রসহ জ্ঞানী-গুনী ব্যক্তিরা আসেন তখন তারা এই কবরস্থানের দুর্দশা দেখেন আর বলেন অচিরেই কবরস্থানের কবর গুলো বাঁচাতে গাইডওয়ালসহ সংস্কার করা হবে। যখনই উক্ত স্থান ত্যাগ করেন তখন আর এবিষয়টি তাদের গুরুত্বে আসে না বলে অনেকে অভিযোগ করেন।

পুকুরটি ক-তফশীলভুক্ত ভিপি সম্পত্তি হওয়ায় উপজেলা প্রশাসন পুকুরটি ৩ যুগেরও বেশি সময় ধরে ফুলবাড়ী উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদকে মাছ চাষ করতে দিয়ে আসছেন। এদিকে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ পুকুরটি সাব কন্ট্রাক্ট এর মাধ্যমে মাছচাষি সফিকুল ইসলাম বুলুকে দিয়ে মোটা অংকের টাকা তুলছেন। এ পর্যন্ত মুক্তিযোদ্ধা সংসদের মাধ্যমেও কানাহার পুকুর অথবা কবরস্থানের কোন প্রকার সংস্কার কাজ লক্ষ করা যায়নি। বরং সাব কন্ট্রাক্ট নেয়া মালিক পুকুরে লিটার ব্যবহার করায় কবরস্থানে আগত ব্যক্তিরা ওযু-গোসল অথবা কবর দেয়ার পর হাত-পা ধোয়ার কাজও করতে পারছেন না।

স্থানীয় কলেজ শিক্ষক খায়রুল আনাম আবেশ,আতিয়ার রহমান, এ্যাডভোকেট আবুহেনা ,সাখাওয়াত কাজি, আলাউদ্দীন মিস্ত্রী বলেন, কবরগুলো বিলীনসহ কবরস্থানের প্রধান গেটের ডান পাশে কবর গুড়িয়ে দিয়ে পুকুরের পূর্ব কোণে ট্রাক্টর,ট্রলি,ভ্যান, রিক্সা পরিষ্কারের জন্য কিছু অসাধু মালিক ও চালক ব্যবস্থা করেছে। কবরস্থানের সাথে জড়িত সকলেই দেখেন, প্রতিবাদ করেন, কোনো কাজ হয়নি। কেমন যেন একটা অরাজকতার পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে ফুলবাড়ী কেন্দ্রীয় কবরস্থান।

এলাকাবাসীর অভিযোগ,পুকুরের মাছ চাষি মাছ বৃদ্ধির জন্য শুষ্ক মৌসুমেও পুকুরে শ্যালো মেশিন দিয়ে পানি ভরে রাখেন। বড় পুকুর হওয়ায় পানির ঢেউয়ে কবরস্থানে ধাক্কা লেগে কবরসহ পাড় ভেঙে ফেলছে। এপর্যন্ত প্রায় দু’শতাধিক কবর পুকুরের পেটে চেলে গেছে। আর কতখানি ভাঙলে নজরে আসবে কর্তৃপক্ষের? যে বিষয়টি অনেককে ভাবায়, আমার বাপ-দাদার কবরের পাশে আমার কবর দেওয়ার জায়গাটা অবশেষে থাকবে তো ?

দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে কবরস্থান বিলীনের হাত থেকে রক্ষা, অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদসহ সংস্কাকারের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন সকল শ্রেণির স্থানীয় বাসিন্দা।

শনিবার (২৬ এপ্রিল) সকাল ১০টায় স্থানীয় নিমতলা মোড়ে দিনাজপুর-গবিন্দগঞ্জ আঞ্চলিক মহা সড়কের পাশে ব্যানার ফেষ্টুন হাতে দাঁড়িয়ে ফুলবাড়ী সম্মিলিত নাগরিক সমাজের ব্যানারে পৌর এলাকার কেন্দ্রীয় কানাহার কবরস্থানটি রক্ষাসহ সংস্কাকারে দাবিতে ঘন্টাব্যাপী এই মানববন্ধন করেন তারা। এতে সভাপতিত্ব করেন ফুলবাড়ী সম্মিলিত নাগরিক সমাজের আহবায়ক হামিদুল হক।

ফুলবাড়ী ব্যবসায়ী সমিতির যুগ্ম সদস্য সচিব সাখাওয়াত হোসেন এর সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, পৌর বিএনপির সহ-সভাপতি মন্তাজ আলী চৌধুরী, পৌর কৃষকদলের সাধারণ সম্পাদক শাহাজান মন্ডল, ব্যবসায়ী সমিতির আহবায়ক এমএ আব্দুল কাইয়ুম, সাবেক প্যানেল মেয়র নুরজ্জামান জামান, সাবেক পৌর কাউন্সিলর আব্দুল জব্বার মাসুদ, সম্মিলিত নাগরিক সমাজের সদস্য সচিব হারুন উর রশীদ, স্থানীয় বাসিন্দা মেহের আলী, আব্দুস সাত্তার মন্ডল প্রমুখ।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ফুলবাড়ী পৌর এলাকার শতবছরের পুরোনো কেন্দ্রীয় কানাহার কবরস্থান। এখানে পৌর এলাকার বিভিন্ন ওয়ার্ডের মুর্দা দাফন করা হয়। সেখানে আমাদের বাপ, দাদাসহ পুর্বপুরুষদের কবর রয়েছে। কবরস্থানের পুুকুরের পানির ঢেউয়ে দিনদিন পাড় ভেঙ্গে কবর গুলো বিলীন হয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে কবরস্থানটিতে কবর দেওয়ার জায়গা সংকট দেখা দিয়েছে। গাইডওয়াল নির্মাণ করে কবরগুলো রক্ষা করতে হবে। কবরস্থানের পুর্বপাড় দখল করে যেসব বসতবাড়ি গড়ে উঠেছে, পুর্ণবাসনের ব্যবস্থা করে সেগুলো উচ্ছেদ করতে হবে। বক্তারা কবরস্থানটি রক্ষাসহ সংস্কারে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। মানববন্ধনে এলাকার শতশত মানুষ অংশগ্রহন করেন।

সাবেক পৌর মেয়র মাহমুদ আলম লিটন বলেন, কানাহার কবরস্থান রক্ষণাবেক্ষণ করবে পৌরসভা আর পুকুর থাকবে অন্য প্রতিষ্ঠানের হাতে তাতো হয়না। এতে সমন্বয়হীনতায় কাজে বিঘœ সৃষ্টি হয়। ধর্মীয় এই বিষয়টি নিয়ে আমাকে অনেকে অভিযোগ করেছেন। তবে কেন্দ্রীয় কবরস্থানকে পুকুর যে গ্রাস করছে, তা সত্য। নাগরিক সেবা দেয়ার ব্যাপারে ফুলবাড়ী পৌরসভা জনগণের দাবির বিষয়টিকেই গুরুত্বের সাথে দেখবে বলে মনে করি।

বিষয়টি নিয়ে কথা হলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ইসাহাক আলী বলেন, কানাহার কবস্থানটি সংস্কারের বিষয় নিয়ে বেশকিছুদিন ধরে স্থানীয়রা দাবী তুলেছেন। এ নিয়ে তাদের সাথে কথা হচ্ছে। এর আগে বিগত মেয়র মহোদয় বিষয়টি নিয়ে মিনিষ্ট্রিতে চেষ্টা করেছেন। আমরাও বিষয়টি নিয়ে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।