জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন
চীন-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতাল স্থাপনে ঠাকুরগাঁও হবে চিকিৎসার হাব

- সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৭:০৫:১০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫ ২২ বার পড়া হয়েছে
চায়না-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ জেনারেল হাসপাতাল ঠাকুরগাঁওয়ে স্থাপনের মাধ্যমে ঠাকুরগাঁও হবে চিকিৎসার হাব উল্লেখ করে ঠাকুরগাঁও-১ আসনের গণমানুষের নেতা উদীয়মান সমাজ সেবক ঠাকুরগাঁও উন্নয়ন ফোরামের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ দেলাওয়ার হোসেন বলেছেন, উত্তরবঙ্গের সবচেয়ে অবহেলিত জেলা ঠাকুরগাঁও। এই জেলার মানুষ স্বাধীনতার পরবর্তী আজও একজন যোগ্য নেতৃত্ব নির্বাচিত করতে পারেনি। ফলে স্বাধীনতার ৫৪ বছরেও এই অঞ্চলে দৃশ্যমান উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। বৈষম্য মুক্ত বাংলাদেশ গঠনে ছাত্র-জনতা জীবন ও রক্ত দিয়েছে।
তিনি বলেন, ছাত্র-জনতার রক্তের বিনিময়ে অন্তবর্তীকালীন সরকার গঠন হয়েছে। এই সরকার যেহেতু রাজনৈতিক সরকার নয়, তাই এই সরকারের হাত ধরেই বৈষম্যের অবসান দেখতে চায় ঠাকুরগাঁও বাসী। উত্তরের প্রান্তিক জেলা ঠাকুরগাঁওয়ের মানুষ দীর্ঘদিন ধরে আধুনিক স্বাস্থ্য সেবা হতে বঞ্চিত। এখানে কোন মেডিকেল কলেজ নাই। অথচ এই জেলাকে ঘিরে পঞ্চগড়, দিনাজপুর ও নীলফামারীর প্রায় ৪০ লাখ জনসাধারনের বসবাস। তাছাড়া ঠাকুরগাঁওয়ের সীমানা জুড়ে রয়েছে ভারত, নেপাল, ভূটান। ফলে হাসপাতালটি ঠাকুরগাঁওয়ে স্থাপন করা হলে এসকল দেশ থেকে মানুষ চিকিৎসা নিতে আসবে। এতে করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রাও অর্জিত হবে।
তিনি আরর বলেন, চীন বাংলাদেশের অকৃতিম বন্ধু। সেই বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে চীন বাংলাদেশের জনগণের স্বাস্থ্য সেবা সহজীকরণের লক্ষ্যে ৩টি আন্তর্জাতিক মানের হাসপাতাল নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছে। এরমধ্যে একটি হাসপাতাল রংপুর বিভাগে স্থাপনের জন্য প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস ইতোমধ্যে সম্মতি জ্ঞাপন করেছেন। রংপুর মেডিকেল কলেজ, দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ ও নীলফামারী মেডিকেল কলেজ সহ আধুনিক হাসপাতাল থাকলেও ঠাকুরগাঁওয়ে ঠাকুরগাঁওয়ে কোন মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কিংবা উন্নত মানের হাসপাতাল নাই। ঠাকুরগাঁওয়ে আইসিইউ, সিসিইউ, নিউরো, কার্ডিয়াক ও রিহেবেিলটেশন না থাকায় এই অঞ্চলের মানুষকে স্বাস্থ্য সেবার জন্য রংপুর, ঢাকা কিংবা দেশের বাহিরে যেতে হয়। ফলে এখানকার প্রতিটি মানুষ যথাযথ স্বাস্থ্য সেবা পাচ্ছে না। অনেক সময় তাৎক্ষণিক চিকিৎসা না পেয়ে বহু রোগীর মৃত্যু হয়েছে। ঠাকুরগাঁওয়ে চায়না-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ জেনারেল হাসপাতাল স্থাপন করা হলে এই অঞ্চলের ৫০ লাখ মানুষের স্বাস্থ্য সেবার নিশ্চয়তা সৃষ্টি হবে।
শনিবার (১৯ এপ্রিল) বিকেলে ‘চায়না-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ জেনারেল হাসপাতাল’- ঠাকুরগাঁওয়ে স্থাপনের দাবি জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় তিনি আরো বলেন, ভারত বন্ধু ভেসে বাংলাদেশের জনগণকে শোষণ করেছে। চীন বন্ধুত্বের পরিচয়ে বাংলাদেশের জনগণের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক মানের হাসপাতাল নির্মাণে এগিয়ে আসছে।
তিনি বলেন, হাসপাতালটি ঠাকুরগাঁওয়ে স্থাপন করা হলে প¦ার্শবর্তী ৩ জেলা পঞ্চগড়, দিনাজপুর ও নীলফামারীর মানুষ উপকৃত হবে। ঠাকুরগাঁওয়ে বিমানবন্ধর থাকায় জরুরী প্রয়োজনে হাসপাতালটিতে বিদেশ থেকে চিকিৎসক ও রোগী আসতে পারবে। আবার প্রয়োজনে সহজেই বিদেশে যেতে পারবে। এছাড়া হাসপাতালটি নির্মাণের জন্য পর্যাপ্ত সরকারি খাস ভূমি রয়েছে ঠাকুরগাঁওয়ে।
অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে ন্যাশনাল ডক্টরস ফোরামের সভাপতি প্রফেসর ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, স্বাস্থ্য সেবা নাগরিকের মৌলিক অধিকারে একটি। অথচ বাংলাদেশের প্রায় প্রতিটি জেলায় আধুনিক চিকিৎসার সুযোগ সুবিধা থাকলেও ঠাকুরগাঁওয়ে কোন সুযোগ সুবিধা নেই। তাই চীন-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ জেনারেল হাসপাতালটি ঠাকুরগাঁওয়ে স্থাপনের মাধ্যমে এই অঞ্চলের মানুষের স্বাস্থ্য সেবার মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করা জরুরী।
গণঅধিকার পরিষদের মুখপাত্র মোহাম্মদ ফারুক হাসান, ঠাকুরগাঁও বাসীর প্রাণের দাবি পূরণে দলমত নির্বিশেষে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আমরা এক দাবিতে একত্রিত হয়েছি। সরকার এই দাবি পূরণ করলে উত্তরবঙ্গের মানুষের স্বাস্থ্য সেবা সহজ হবে।
সাবেক কর কমিশনার ঠাকুরগাঁও জেলা সোসাইটির সভাপতি আসাদুজ্জামান, অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা শান্তিতে নোবেল বিজয়ী। তিনি শান্তি প্রতিষ্ঠায় ঠাকুরগাঁও বাসীর প্রাণের দাবি পূরণে ভ‚মিকা রাখবেন বলে আমরা প্রত্যাশা করি।
ঢাকাস্থ ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা কল্যাণ সমিতির আহ্বায়ক এ পারভেজ লাবু বলেন, বাংলাদেশের সবচেয়ে অবহেলিত ২টি জেলার একটি ঠাকুরগাঁও অপরটি পঞ্জগড়। আমরা চাই এই অবহেলিত জনগোষ্ঠীর জন্য চীন-বাংলাদেশ ফেন্ডশিপ জেনারেল হাসপাতালটি ঠাকুরগাঁওয়ে স্থাপন করা হোক। তিনি, ঠাকুরগাঁও-পঞ্চগড় মহাসড়কে এই হাসপাতাল স্থাপনের দাবি জানান।
এছাড়া মানববন্ধনে আরো বক্তব্য রাখেন ঢাকাস্থ ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা কল্যাণ সমিতির সদস্য সচিব মো. মকছেদুল ইসলাম সোহাগ, বিশিষ্ট ব্যাংকার আবুল কালাম আজাদ, ঢাকাস্থ ঠাকুরগাঁও ছাত্র কল্যাণ পরিষদের সভাপতি আসাদুল্লাহ্ আল গালিব প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সমাজ সেবক মোহাম্মদ বেলাল হোসেন, সাবেক ছাত্র নেতা আব্দুর রহমান, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী হেলাল হোসেন, এডভোকেট আদিব, ইঞ্জিনিয়ার জামিল প্রমুখ।