ছাত্র আন্দোলনে ভোগান্তি, ক্ষোভ

- সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৮:৪২:৩৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ ৫১ বার পড়া হয়েছে
সরকারি তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় করার দাবিতে সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) টানা পঞ্চম দিনের মতো সড়কে নামেন কলেজটির শিক্ষার্থীরা। দুপুর সোয়া ১২টার দিকে তাঁরা মহাখালী থেকে গুলশানগামী সড়ক বন্ধ করে দেন। এতে সড়কের উভয় পাশে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বিভিন্ন গন্তব্যের উদ্দেশ্যে রওনা দেওয়া মানুষেরা ভোগান্তিতে পড়েন।
দুই হাতে ব্যাগপত্র নিয়ে মহাখালীর আমতলী মোড়ের দিকে হেঁটে যাচ্ছিলেন যশোরের কেশবপুর উপজেলার জাহাঙ্গীর আলম। তার সঙ্গে ক্যানসারে আক্রান্ত বোন।
তিনি বলেন, শিক্ষার্থীরা রাস্তা আটকে রেখেছেন। কোনো বাস চলছে না। রিকশা নিতে চেয়েছিলাম। বলল, মহাখালী পর্যন্ত যেতে পারবে না। কলেজের সামনে নামিয়ে দেবে। ভাড়া ৪০ টাকা চাইল। পরে হেঁটেই রওনা দিয়েছি। কিন্তু বোনের কষ্ট হচ্ছে।
মহাখালী থেকে গুলশানে যাওয়ার এবং গুলশান থেকে মহাখালী আমতলীর দিকে আসার-উভয় পাশের রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। শিক্ষার্থীরা অসুস্থ রোগী বহনকারী অ্যাম্বুলেন্স বা বাহন বাদে আর কোনো যানবাহন চলাচল করতে দিচ্ছিলেন না। এ সময় অনেক মানুষকেই হেঁটে গন্তব্যে রওনা দিতে দেখা গেছে। কারও হাতে ছিল জিনিসপত্রের বড় ব্যাগ-বস্তা, কারও কোলে ছিল সন্তান। কেউবা বয়স্ক মা-বাবাকে হাতে ধরে হাঁটিয়ে নিচ্ছিলেন। রাস্তা বন্ধ থাকায় ভোগান্তিতে পড়া এসব লোকজনের কেউ কেউ ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
মহাখালী থেকে গুলশানের রাস্তায় যানবাহন সরাসরি না চললেও মহাখালী থেকে তিতুমীর কলেজের সামনে পর্যন্ত এবং তিতুমীর কলেজের পর থেকে আবার গুলশান পর্যন্ত রিকশা ও ব্যাটারিচালিত রিকশা চলছিল। কিন্তু ভাড়া নেওয়া হচ্ছিল স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি।
তিন ঘণ্টা সড়ক অবরোধের পর বেলা সোয়া তিনটার দিকে শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে মহাখালী আমতলীর দিকে রওনা দেন। বিকেল পৌনে চারটার দিকে শিক্ষার্থীরা মহাখালী রেললাইন অবরোধ করেন। এ সময় জাহাঙ্গীর গেট থেকে মহাখালী হয়ে (উড়াল সড়কের নিচে) গুলশান-বনানী যাওয়ার রাস্তা এবং গুলশান-বনানী থেকে বিজয় সরণিতে যাওয়ার রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়। শেষ সন্ধ্যা পৌনে সাড়ে ৮টা পর্যন্ত ঢাকার সঙ্গে সারা দেশের রেল যোগাযোগের পাশাপাশি নিচের সড়কেও যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
উল্লেখ্য, সরকারি তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবিতে বেশ কয়েক মাস ধরে আন্দোলন করে আসছিলেন প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা। এই দাবিতে মিছিল, সড়ক-রেলপথ অবরোধ, স্মারকলিপি প্রদান, ক্লাস বর্জনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।
এর পরিপ্রেক্ষিতে সম্ভাব্যতা যাচাই-বাছাই করতে শিক্ষ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে একটি বিশেষ কমিটিও গঠন করা হয়।
তবে সম্প্রতি এ বিষয়ে ইতিবাচক কোনো সাড়া না পেয়ে গত ২৯ জানুয়ারি বিকেল থেকে দাবি আদায়ে আমরণ অনশনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছেন শিক্ষার্থীরা।