ইজতেমা ময়দানে ড্রোন উড্ডয়নে নিষেধাজ্ঞা

- সংবাদ প্রকাশের সময় : ০১:০১:১৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ ৩৪ বার পড়া হয়েছে
বিশ্ব ইজতেমা ময়দানের আশপাশের ২ কিলোমিটার এলাকায় অনুমতি ছাড়া ড্রোন ক্যামেরা উড্ডয়নে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (জিএমপি)। রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) থেকে আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর থাকবে।
প্রথম পর্বের আখেরি মোনাজাত চলাকালে ইজতেমা ময়দানের সামিয়ানার ওপর একটি ড্রোন বিকট শব্দে আছড়ে পড়লে আতঙ্কে দিগ্বিদিক ছুটাছুটিতে পদদলিত হয়ে আহত হন ৪১ জন মুসল্লি। এ ঘটনার পর সন্ধ্যায় গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার স্বাক্ষরিত গণ বিজ্ঞপ্তিতে এ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।
গণবিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের টঙ্গী পশ্চিম থানাধীন ইজতেমা ময়দানে বিশ্ব ইজতেমা ২০২৫ চলমান। বিশ্ব ইজতেমায় দেশ বিদেশের লক্ষ লক্ষ ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের সমাগম হয়। মুসল্লিদের নিরাপত্তা ও সার্বিক আইনশৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে বিশ্ব ইজতেমা ময়দানসহ আশপাশ এলাকার ২ কিলোমিটারের মধ্যে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের বিশেষ শাখা (সিটিএসবি) এর অনুমতি ব্যতীত ২ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ড্রোন ও ড্রোন ক্যামেরা অথবা ভিডিও সহ অন্য কোনো প্রকার ইলেকট্রনিক ডিভাইস উড়ানো বা ব্যবহার না করার জন্য অনুরোধ করা হল। এই আদেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, প্রকাশ থাকে যে, সরকারি সংস্থা কর্তৃক বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে ড্রোন ব্যবহারের সংখ্যা ও ড্রোন উড্ডয়নের সময় সম্পর্কে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সিটিএসবিকে পূর্বে অবগত করার জন্য অনুরোধ করা হলো। জনস্বার্থে এই গণবিজ্ঞপ্তি জারি করা হলো।
এর আগে রোববার সকালে মোনাজাত চলাকালে ময়দানের পিনপতন নীরবতা ভেঙে ড্রোন হামলার আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। আতঙ্কিত মুসল্লিরা ছুটোছুটি করতে গিয়ে পরস্পরের ধাক্কায় ড্রেন ও রাস্তায় পড়ে আহত হয়েছেন। তবে এ ঘটনায় গুরুতর আহত হওয়ার কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ইনচার্জ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আহত ৪১ মুসল্লিকে হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। ইজতেমার মোনাজাত চলাকালে আতঙ্কে হুড়োহুড়ি করার সময় পড়ে গিয়ে আহত হয়েছেন তারা।
আহতরা হলো- আবুল কালাম (৫৫), আলামিন (৩২), আজাদ (৩০), ওবায়দুল্লাহ (৩২), রাতুল (১৮), আব্দুল করিম (২৮) সাইফুল ইসলাম (৩৮), জাফর উদ্দিন (৩১) জয়নাল (২৪), মকবুল হোসেন (৬৪) সোহাগ (৬০), মোশারফ (৩০), কোরবান আলী (২৫), সাইফুল ইসলাম (৩৫), সালামত (১৮), মুস্তাকিন (৩৩), কবির হোসেন (৩০), মুবিন (১৮), আয়নাল হক (২২), মামুন হোসেন (২১), মো. বাসেদ (১৩), খোকন (৪৩), জুয়েল (২৫), কবির হোসেন (৪৬), নাজিম উদ্দিন (৪১), জবরুল (৩১), জয়নাল (৫৪), কাওছারুল আলম (২৮), রায়হান (২৭), জহরুল (২৮), আলি নেওয়াজ (৩৮), আফতাব উদ্দিন (৪৭) মো. আমান (২৮), আনোয়ার (৪৫), সোহেল (৩৫), ফজল হক (৪৫) ও মুজাফফর আলীসহ (৪৪) অন্তত অর্ধশতাধিক ব্যক্তি।
জানা গেছে, রোববার সকালে তাবলীগ জামাতের মাওলানা জোবায়ের মূল বয়ান মঞ্চে আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করছিলেন। মোনাজাত চলাকালে ময়দানের উত্তর পশ্চিম অংশে বেশ কয়েকটি ড্রোন উড়ছিল। অনেকেই ড্রোন দিয়ে ভিডিও ধারণ করছিলেন। হঠাৎ করে একটি ড্রোন বাঁশের খুঁটি ও সামিয়ানার উপরে আছড়ে পড়ে। এতে বিকট শব্দ হলে মুসল্লিরা আতঙ্কিত হয়ে ছুটোছুটি করতে থাকেন। এ সময় পদদলিত হয়ে অনেকে আহত হন। পরে কিছু মুসল্লি শব্দের উৎস খুঁজতে গিয়ে ড্রোনটির সন্ধান পান। যদিও পরে ড্রোনটির আর কোনো সন্ধান পায়নি পুলিশ।
মোনাজাতের পরে ইজতেমার বয়ান মঞ্চ থেকে ঘোষণা করা হয়, একটি ড্রোন ইজতেমা ময়দানের একটি টিনের ছাউনিতে আছড়ে পড়েছিল। এতে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।
এ ব্যাপারে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের দক্ষিণ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার এন এম নাসিরুদ্দিন বলেন, কেউ কেউ বলছেন ইজতেমার সামিয়ানার ওপর ড্রোন পড়ে আওয়াজ হয়েছে। আবার কেউ কেউ বলছেন দুই ড্রোনের সংঘর্ষ হয়েছে। কেউ বলছেন বেলুন বিক্রেতার বেলুনের সাথে ড্রোন লেগে বেলুন বিস্ফোরিত হয়েছে।