অবৈধ পথে ইতালি
বালুর স্তূপে ও সাগরে ২০ বাংলাদেশির মরদেহ

- সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৯:৩২:২০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ ১০৮ বার পড়া হয়েছে
লিবিয়া থেকে অবৈধ পথে ইতালি যাওয়ার সময় নৌকাডুবিতে অন্তত ২০ বাংলাদেশির মৃত্যু হয়েছে। ত্রিপোলিতে অবস্থিত বাংলাদেশি দূতাবাস এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
দূতাবাসের কর্মকর্তারা জানান, তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহত ব্যক্তিদের শনাক্তের চেষ্টা করছেন। এদিকে একটি ফেসবুক পেজে দেখা যায়, ভুমধ্যসাগর পারে একাধিক মরদেহ পড়ে আছে। কারও মরদেহ বালুর স্তূপে ঢাকা, কারও মরদেহ আবার সাগরে ভাসছে।

সেখানে ওই নৌকাডুবির ঘটনা উল্লেখ করে বলা হয়, লিবিয়ার বেনগাজি আল আকিলা এলাকায় (ব্রেগার পশ্চিমে) ২০ জন বাংলাদেশির মৃতদেহ পাওয়া গেছে।
দূতাবাস থেকে পাওয়া তথ্য বলছে, ব্রেগা থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে আজদাদিয়ায় ২০টি মরদেহ ইতোমধ্যে সমাহিত করা হয়েছে। মরদেহগুলো পচে যাওয়ার মতো অবস্থা হয়েছে। তবে কোনো সূত্র মরদেরগুলোর জাতীয়তা নিশ্চিত করতে পারেনি।
স্থানীয় রেড ক্রিসেন্ট ধরে নিয়েছে, তারা সবাই বাংলাদেশি নাগরিক। কিন্তু মরদের কাছ থেকে কোনো নথি পাওয়া যায়নি। ঘটনার স্থানটি পূর্ব সরকারের আওতাধীন এবং রাজধানী বেনগাজিতে অবস্থিত। দূতাবাস এখনো ঘটনাস্থল পরিদর্শনের জন্য ছাড়পত্র পায়নি।
গত বৃহস্পতিবার দূতাবাসের ফেসবুক পেজে দেয়া এক পোস্টে দেখা যায়, সাগরপাড়ো লাশ পড়ে আছে। কয়েকটি লাশ সৈকতে দাঁড়ানো একটি ট্রাকে তোলা হয়েছে। ঘটনাস্থল লিবিয়ার বেনগাজির ব্রেগা (আল বুরিকা) শহরের পশ্চিমে সৈকত।

ফেসবুক পোস্টে বলা হয়, লিবিয়ার পূর্বাঞ্চলে ভূমধ্যসাগরের উপকূলবর্তী ব্রেগা তীর থেকে গত দুদিনে বেশ কয়েকজন অভিবাসীর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে বলে বাংলাদেশ দূতাবাস বিভিন্ন সূত্রে জানতে পেরেছে। স্থানীয় উদ্ধারকারী কর্তৃপক্ষের মতে, অভিবাসনপ্রত্যাশীদের একটি নৌকা ভূমধ্যসাগরে ডুবে যাওয়ার পর এসব মৃতদেহ ব্রেগা তীরে ভেসে এসেছে। নৌকাডুবির ঘটনায় মৃতদের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বাংলাদেশ দূতাবাস ইতিমধ্যে একটি টিম ঘটনাস্থলে পাঠানোর ব্যবস্থা নিয়েছে।
অভিবাসী উদ্ধার তৎপরতা নজরদারি সংগঠন অস্ট্রেলিয়াভিত্তিক মাইগ্র্যান্ট রেসকিউ ওয়াচের রব গোয়ানস ২৯ জানুয়ারি এক্স পোস্টে জানান, লিবিয়ার সিআইডি ও অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস মিলে আল-উকাইলা এলাকার সৈকতে ভেসে আসা আরও দুটি লাশ উদ্ধার করেছে। সব মিলিয়ে উদ্ধার হওয়া লাশের সংখ্যা ২০।
আগের দিন এক পোস্টে তিনি আরও ১১ লাশ উদ্ধারের তথ্য দিয়ে বলেন, নথি পর্যালোচনা করে তাঁদের মধ্যে কয়েকজনকে বাংলাদেশি হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে। এর আগে ২৭ জানুয়ারি প্রথম পোস্টে ৭ লাশ উদ্ধারের তথ্য দেন তিনি।
এদিকে, ২৯ জানুয়ারি (বুধবার) লিবিয়ার স্থানীয় গণমাধ্যম আশ-শামস লিবিয়ার অনলাইন পোর্টালের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ব্রেগার পশ্চিমে আল-আকিলা এলাকার সমুদ্রতীরে একটি নৌকা এবং বাংলাদেশি অবৈধ অভিবাসীদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। প্রথমে ৭টি এবং আজ আরও ১১টি মরদেহ পাওয়া গেছে। আরও মরদেহ মিলতে পারে।
লিবিয়ার নিযুক্ত বাংলাদেশি দূতাবাসের ফেসবুক পেজে বলা হয়, বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহের জন্য দূতাবাস স্থানীয় কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যোগাযোগ রক্ষা করছে। উক্ত দুর্ঘটনায় মৃত, আহত বা ক্ষতিগ্রস্ত বাংলাদেশি নাগরিকদের বিষয়ে যে কোনো তথ্য জানানোর জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে অনুরোধ করা যাচ্ছে।
দূতাবাসের নিম্নোক্ত দাপ্তরিক মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করা যাবে: +২১৮৯১৬৯৯৪২০২ এবং +২১৮৯১৬৯৯৪২০৭।
উল্লেখ্য, নৌকাডুবির ঘটনায় মৃতদের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বাংলাদেশ দূতাবাস ইতোমধ্যে একটি টিম ঘটনাস্থলে পাঠানোর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।