ঢাকা ০৮:৫৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১২ মে ২০২৫, ২৯ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

অভিযানকে হয়রানি দাবী করে অবৈধ ইটভাটা মালিকদের বিক্ষোভ

সরকার লুৎফর রহমান,গাইবান্ধা
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৯:৩৯:৩৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ মার্চ ২০২৫ ৩৪ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশনার আলোকে জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের জোড়ালো অভিযানের পরিচালনার কার্যক্রম’কে হয়রানি দাবী করে গাইবান্ধায় অবৈধ ইটভাটার মালিকরা নিজ নিজ অবৈধ ইটভাটা রক্ষায় গাইবান্ধা পৌর শহরের জেলার সকল উপজেলার ইটভাটার শ্রমিকদের নিয়ে বিশাল বিক্ষোভ মিছিল করে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে বন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা উপদেষ্টা বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করেছে।

উচ্চ আদালতের নির্দেশে ইটভাটায় মোবাইল কোর্ট এর মাধ্যমে বন্ধ, জরিমানা ও ভাংচুরের বিরুদ্ধে গাইবান্ধার অবৈধ ভাটা মালিকগণ ভাটার শ্রমিকদের নিয়ে এ বিক্ষোভ মিছিল ও স্মারকলিপি প্রদান করে।

বাংলাদেশ ইট প্রস্তুতকারী মালিক সমিতি গাইবান্ধা জেলা শাখার ব্যানারে মঙ্গলবার (১১ মার্চ) গাইবান্ধা জেলার সব ইটভাটার হাজার হাজার শ্রমিক ও মালিকরা জেলা শহরে বিক্ষোভ মিছিল করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গিয়ে বন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বরাবরে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্মারকলিপি প্রদান করে। এসময় স্মারকলিপি গ্রহণ করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) একেএম হেদায়েতুল ইসলাম।

স্মারকলিপি প্রদান পূর্ব জেলা প্রশাসক কার্যালয় চত্বরে সমাবেশে বক্তব্য দেন মেসার্স এবিডি ব্রিকসের স্বত্ব্বাধিকারী আকতার আমিন বাবলা, ফ্রেন্ডস্‌ ব্রিকসের স্বত্বাধিকারী খাদেমুল ইসলাম জুয়েল, এমএসবি ব্রিকসের স্বত্বাধিকারী নওশের আলম ও আনোয়ারুল কাদির ফুল মিয়াসহ অন্যান্যরা।

এ স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, গাইবান্ধাসহ সারাদেশে ইট ভাটা মালিকরা প্রশাসনসহ বিভিন্ন মহলের হয়রানির শিকার। এই খাত থেকে হাজার হাজার কোটি টাকারও বেশি রাজস্ব আয় হয়ে থাকে। অথচ নানা অজুহাতে ইট ভাটাগুলোকে ক্ষতিগ্রস্ত করা হয়। তারা অবিলম্বে হয়রানি বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান। স্মারকলিপিতে আরও উল্লেখ করা হয়, পূর্বে ইট ভাটার দূষণমাত্রা ছিল ৫৮ শতাংশ, বর্তমানে প্রযুক্তিগত উন্নয়নের ফলে ৫ থেকে ১০ শতাংশে নেমে এসেছে। বিদ্যমান জিগজাগ ইটভাটায় উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে পরিবেশ দূষণ কমিয়ে আনা সম্ভব হবে। উপরন’ ইট ভাটায় কর্মরত ৫০ লাখ শ্রমিক ২ কোটি মানুষের রুটি রুজির সংস্থানন করছে। এছাড়াও ইট ভাটা থেকে বছরে হাজার হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আদায় হচ্ছে। কিন্তু ইটা ভাটা মালিকদের মাঝে মাঝেই হয়রানি করা হয়, ইট ভাটা ভেঙে দিয়ে জরিমানা করা হয়। পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রেজওয়ান হাসান অত্যন্ত আন্তরিক হলেও বর্তমানে আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে জিগজাগ ইট ভাটার সমস্যার সমাধান হচ্ছে না। ইট ভাটাকে শিল্প হিসেবে ঘোষণা, ইট ভাটায় হয়রানি ও মোবাইল কোর্ট বন্ধ, মাটি কাটার জন্য জেলা প্রশাসকের প্রত্যয়নপত্র নেওয়ার বিধান বাতিল, ইট ভাটা পরিচালনায় দীর্ঘ মেয়াদী পূর্ণাঙ্গ নীতিমালা প্রণয়ন ও পরিবেশগত ছাড়পত্র, জেলা প্রশাসকের লাইসেন্স, ফায়ার সার্ভিসের লাইসেন্সসহ অন্যান্য কাগজপত্রাদি নবায়নের সময় কেন্দ্রীয় ইট প্রস্ততকারী মালিক সমিতির প্রত্যয়নপত্র বাধ্যতামূলক বিধান করার উদ্যোগ নেওয়ার আহবান জানানো হয়।

উল্লেখ্য, গাইবান্ধা জেলা জুড়ে সকল ইটভাটা অবৈধ, যেগুলো নির্মানে মানা হয়নি ভূমি ও পরিবেশ আইন। ইটভাটা নির্মানের পর অবৈধভাবে তৈরী করা হচ্ছে ইট যে ইট গুলো উপাদান বিহীন ও পরিমাপেও কম। এসকল ইটভাটা আবাদী জমি গ্রাস,বসতবাড়ী সংগ্লন্ন, লোকালয়ে এলাকায়,প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাদ্রাসা ও বাজার সংগ্লন্ন হওয়ায় মাঠের ফসল,মানুষ ও জিবের স্বাস্থ্য, গ্রাম গঞ্জের রাস্তা ঘাট, স্থানীয় পরিবেশের জন্য ব্যাপক ঝুঁকিতে রয়েছে। দীর্ঘদিন হলো গাইবান্ধা জেলা ও উপজেলা গুলোতে অবৈধ ইটভাটার বন্ধ ও নতুন ইটভাটা নির্মাণ বন্ধে আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে আসছে বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন। সম্পৃতি মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশে সারাদেশে অবৈধ ইটভাটার উচ্ছেদ ও বন্ধ করা হলেও গাইবান্ধা জেলা জুড়ে চলমান আছে অবৈধ ইটভাটার গুলো। এদিকে অবৈধ ইটভাটা গুলোতে অভিযানের টিক আগ মহুর্তে আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে অবৈধ ইটভাটার রক্ষায় সবচেষ্টা চলমান রেখেছেন জেলার ভাটা মালিকগং।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

অভিযানকে হয়রানি দাবী করে অবৈধ ইটভাটা মালিকদের বিক্ষোভ

সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৯:৩৯:৩৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ মার্চ ২০২৫

মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশনার আলোকে জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের জোড়ালো অভিযানের পরিচালনার কার্যক্রম’কে হয়রানি দাবী করে গাইবান্ধায় অবৈধ ইটভাটার মালিকরা নিজ নিজ অবৈধ ইটভাটা রক্ষায় গাইবান্ধা পৌর শহরের জেলার সকল উপজেলার ইটভাটার শ্রমিকদের নিয়ে বিশাল বিক্ষোভ মিছিল করে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে বন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা উপদেষ্টা বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করেছে।

উচ্চ আদালতের নির্দেশে ইটভাটায় মোবাইল কোর্ট এর মাধ্যমে বন্ধ, জরিমানা ও ভাংচুরের বিরুদ্ধে গাইবান্ধার অবৈধ ভাটা মালিকগণ ভাটার শ্রমিকদের নিয়ে এ বিক্ষোভ মিছিল ও স্মারকলিপি প্রদান করে।

বাংলাদেশ ইট প্রস্তুতকারী মালিক সমিতি গাইবান্ধা জেলা শাখার ব্যানারে মঙ্গলবার (১১ মার্চ) গাইবান্ধা জেলার সব ইটভাটার হাজার হাজার শ্রমিক ও মালিকরা জেলা শহরে বিক্ষোভ মিছিল করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গিয়ে বন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বরাবরে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্মারকলিপি প্রদান করে। এসময় স্মারকলিপি গ্রহণ করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) একেএম হেদায়েতুল ইসলাম।

স্মারকলিপি প্রদান পূর্ব জেলা প্রশাসক কার্যালয় চত্বরে সমাবেশে বক্তব্য দেন মেসার্স এবিডি ব্রিকসের স্বত্ব্বাধিকারী আকতার আমিন বাবলা, ফ্রেন্ডস্‌ ব্রিকসের স্বত্বাধিকারী খাদেমুল ইসলাম জুয়েল, এমএসবি ব্রিকসের স্বত্বাধিকারী নওশের আলম ও আনোয়ারুল কাদির ফুল মিয়াসহ অন্যান্যরা।

এ স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, গাইবান্ধাসহ সারাদেশে ইট ভাটা মালিকরা প্রশাসনসহ বিভিন্ন মহলের হয়রানির শিকার। এই খাত থেকে হাজার হাজার কোটি টাকারও বেশি রাজস্ব আয় হয়ে থাকে। অথচ নানা অজুহাতে ইট ভাটাগুলোকে ক্ষতিগ্রস্ত করা হয়। তারা অবিলম্বে হয়রানি বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান। স্মারকলিপিতে আরও উল্লেখ করা হয়, পূর্বে ইট ভাটার দূষণমাত্রা ছিল ৫৮ শতাংশ, বর্তমানে প্রযুক্তিগত উন্নয়নের ফলে ৫ থেকে ১০ শতাংশে নেমে এসেছে। বিদ্যমান জিগজাগ ইটভাটায় উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে পরিবেশ দূষণ কমিয়ে আনা সম্ভব হবে। উপরন’ ইট ভাটায় কর্মরত ৫০ লাখ শ্রমিক ২ কোটি মানুষের রুটি রুজির সংস্থানন করছে। এছাড়াও ইট ভাটা থেকে বছরে হাজার হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আদায় হচ্ছে। কিন্তু ইটা ভাটা মালিকদের মাঝে মাঝেই হয়রানি করা হয়, ইট ভাটা ভেঙে দিয়ে জরিমানা করা হয়। পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রেজওয়ান হাসান অত্যন্ত আন্তরিক হলেও বর্তমানে আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে জিগজাগ ইট ভাটার সমস্যার সমাধান হচ্ছে না। ইট ভাটাকে শিল্প হিসেবে ঘোষণা, ইট ভাটায় হয়রানি ও মোবাইল কোর্ট বন্ধ, মাটি কাটার জন্য জেলা প্রশাসকের প্রত্যয়নপত্র নেওয়ার বিধান বাতিল, ইট ভাটা পরিচালনায় দীর্ঘ মেয়াদী পূর্ণাঙ্গ নীতিমালা প্রণয়ন ও পরিবেশগত ছাড়পত্র, জেলা প্রশাসকের লাইসেন্স, ফায়ার সার্ভিসের লাইসেন্সসহ অন্যান্য কাগজপত্রাদি নবায়নের সময় কেন্দ্রীয় ইট প্রস্ততকারী মালিক সমিতির প্রত্যয়নপত্র বাধ্যতামূলক বিধান করার উদ্যোগ নেওয়ার আহবান জানানো হয়।

উল্লেখ্য, গাইবান্ধা জেলা জুড়ে সকল ইটভাটা অবৈধ, যেগুলো নির্মানে মানা হয়নি ভূমি ও পরিবেশ আইন। ইটভাটা নির্মানের পর অবৈধভাবে তৈরী করা হচ্ছে ইট যে ইট গুলো উপাদান বিহীন ও পরিমাপেও কম। এসকল ইটভাটা আবাদী জমি গ্রাস,বসতবাড়ী সংগ্লন্ন, লোকালয়ে এলাকায়,প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাদ্রাসা ও বাজার সংগ্লন্ন হওয়ায় মাঠের ফসল,মানুষ ও জিবের স্বাস্থ্য, গ্রাম গঞ্জের রাস্তা ঘাট, স্থানীয় পরিবেশের জন্য ব্যাপক ঝুঁকিতে রয়েছে। দীর্ঘদিন হলো গাইবান্ধা জেলা ও উপজেলা গুলোতে অবৈধ ইটভাটার বন্ধ ও নতুন ইটভাটা নির্মাণ বন্ধে আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে আসছে বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন। সম্পৃতি মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশে সারাদেশে অবৈধ ইটভাটার উচ্ছেদ ও বন্ধ করা হলেও গাইবান্ধা জেলা জুড়ে চলমান আছে অবৈধ ইটভাটার গুলো। এদিকে অবৈধ ইটভাটা গুলোতে অভিযানের টিক আগ মহুর্তে আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে অবৈধ ইটভাটার রক্ষায় সবচেষ্টা চলমান রেখেছেন জেলার ভাটা মালিকগং।